রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধে সকলকে দায়িত্বশীল হতে হবে : বিচারপতি নিজামুল হক গলাচিপা ও দশমিনায় প্রকাশ্যে নিধন হচ্ছে রেনু পোনা,কথা বলতে নারাজ কর্তৃপক্ষ ডিএসইসির নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ বেলা অবেলা : স্বপ্না রহমান ডিএসইসি’র নতুন সভাপতি ডিবিসি’র মুক্তাদির অনিক ডিএসইসি’র সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশের আলো’র জাওহার ইকবাল খান ডিএসইসি’র সাংগঠনিক সম্পাদক দৈনিক উত্তরদক্ষিণে’র শহীদ রানা ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের উপ-কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক হলেন প্রিয়ন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে গাঁজাসহ ২ যুবক গ্রেফতার

ফেরির কারণেই বরগুনা ও পটুয়াখালী সড়ক মরণ ফাঁদ

মনজুর মোরশেদ তুহিন (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৫৭৭৯ বার পঠিত

সড়কের লাইফ টাইম নিশ্চিতকল্পে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর এক্সেল লোড নীতিমালা বাস্তবায়নে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না অতিরিক্ত বোঝাই যানবাহন নিয়ে ফেরি পারাপার।সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে লিখিত নোটিশ থাকার পরেও এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নজরদারিও ঢিলেঢালা।

ঢাকা -কুয়াকাটা মহাসড়কের বরিশাল থেকে পায়রা বন্দর ও কলাপাড়া যাওয়ার ভিন্ন ২টি বিকল্প পথ রয়েছে। যেটি বাকেরগঞ্জ থেকে মির্জাগঞ্জ হয়ে বরগুনা সদরের উপর দিয়ে আমতলী ফেরী পার হয় এবং অপরটি বাকেরগঞ্জ থেকে পায়রাকুঞ্জ ফেরি হয়ে পটুয়াখালীতে প্রবেশ করে।
এখানে পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের অধীনে বিনাপনি-কচুয়া-বেতাগী-মির্জাগঞ্জ পটুয়াখালী সড়কের ২০ কি.মি.পথ রয়েছে (জেড- ৮০৫২)। এর অভ্যন্তরে পায়রাকুঞ্জ ফেরি ও ৫টি বেইলী সেতু রয়েছে। তবে আমতলী ফেরিও এ অঞ্চলের যানবাহন চলাচলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ।

পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের লিখিত নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এই সড়ক, সেতু ও ফেরীর উপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে অসংখ্য অতিরিক্ত ভারী যানবাহন। ফেরীঘাট দিয়ে অতিরিক্ত ভারী যানবাহনসমূহ চলাচলের কারণে ফেরির পন্টুন ও গ্যাংওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বেইলী সেতু গুলো যাহার সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১০ টন। অতিরিক্ত ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সেতুতে যেকোন সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে যান চলাচল।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, নিয়মিত ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। প্রায় সময়ই রাস্তার মধ্যে অতিরিক্ত বোঝাই গাড়ির চাকা আটকে সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। সড়ক বিভাগের মাধ্যমে সারা বছরই এই সড়কে, সেতু ও ফেরীতে জোড়াতালি দিতে দেখা যায়। এরই মধ্যে পায়রাকুঞ্জ থেকে সুবিদখালী পর্যন্ত এক বছরের মধ্যে করা নতুন সড়কের বেহাল দশা।

জানা যায়, প্রতিনিয়তই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অতিরিক্ত ভারী মালবাহী ট্রাক। তবে দিনের চেয়ে রাতে ট্রাক পারাপার চোখে পড়ার মত। সাধারণত অতিরিক্ত (২০টনের অধিক) পণ্যবাহী যেসব ট্রাক “পায়রা” সেতুর টোল প্লাজায় আটকে দেয় সেসব ট্রাক টোল ফাঁকি দিতে অতিরিক্ত ২৫ থেকে ৩৫কিঃমিঃ রাস্তা ঘুরে আমতলী অথবা পায়রাকুঞ্জ ফেরী পার হয়ে মহাসড়কে প্রবেশ করে। এপথে বেশিরভাগ ট্রাকেই ইট ভাটায় ব্যবহৃত কয়লা, রট, পাথর, ধান, ডাল, তরমুজ সহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করে থাকে।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে পায়রাকুঞ্জ ফেরির ইজারাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম এম এন্টারপ্রাইজ কে ইজারা চুক্তির পর ২০২২ সালের ১৯ডিসেম্বর ফেরী দিয়ে অতিরিক্ত ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞার চিঠি ইস্যু করেও কোন প্রতিকার হয়নি।

চলতি বছরেও বেশ কয়েকটি অতিরিক্ত পন্য বোঝাই ট্রাক এই সড়কের মধ্যে আটকে যায়। কিছুদিন পূর্বে রাজশাহী গামী ধান বোঝাই একটি ট্রাক নন্দকানাই স্টান্ডে আটকে যায়। কেন অতিরিক্ত ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাচ্ছে ড্রাইভার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পন্যসহ ট্রাকে প্রায় ২৫ টন ওজন আছে যেটি পায়রা সেতু টোল প্লাজা দিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, তাই এই পথ দিয়ে ঘুরে যাচ্ছি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অটোচালক মোঃ আলী হোসেন বলেন, আমি নিয়মিত এই রোডে গাড়ি চালাই। দিনের চেয়ে রাতেই ট্রাকগুলো চলাচল বেশি করে। প্রায় সময় রাস্তায় ট্রাক আটকা পড়ায় বিপদে পড়তে হয়।

ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ মনিরুল হাওলাদার বলেন, আমি শুধু কাগজেই ইজারাদার তবে পরিচালনা করার অন্য লোক আছে।

শহর ও যানবাহন শাখা পটুয়াখালী পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন কাজল বলেন, যেহেতু এই রুটে ওজন মাপার যন্ত্র নেই তাই ভারী গাড়ি সনাক্ত করা কঠিন। মাঝেমধ্যে সড়ক ও সেতুর ক্ষতি করে এমন গাড়ি চ্যালেঞ্জ করে আইনের আওতায় নিয়ে আসি।

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহ বলেন, আমরা রাতের বেলায় ফেরি বন্ধ রেখেছি বেশ কিছুদিন যাতে গাড়ি পার না হতে পারে। পাহারা উঠে যাওয়ার পর গভীর রাতে ভারি গাড়ি পারাপার করে।প্রশাসনের সাথে এ ব্যাপারে আমরা যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি। ওই রুটে আমাদের ফাইন করার কোন সুযোগ নাই কারন স্কেল নাই। তবে আমরা মনিটরিংয়ে রেখেছি রাতের গাড়ি ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করছি। পরবর্তীতে যেন আর রাস্তা ভেঙ্গে যেতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..