সাদা ফুল ও কালো বীজ, স্বর্ণের মত দাম। তাই কৃষক সহ সবার কাছে এর পরিচিতি ‘কালো সোনা’ নামে। দুর থেকে দেখে মনে হতে পারে সাদা কোন ফুলের বাগান। আর এই সাদা ফুলের মাঝেই লুকিয়ে রয়েছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন।
‘কালো সোনা’ ক্ষ্যাত এই পেঁয়াজের বীজের কদর রয়েছে সারা দেশব্যাপী। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে হরিরামপুরের মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে পেঁয়াজ বীজের সাদা ফুল। উপজেলার গালা, বাল্লা, চালা, গোপীনাথপুর সহ প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই ব্যাপক পরিমানে চাষ করা হয়েছে পেঁয়াজের বীজের।আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দ্বিগুণ লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।
গালা ইউনিয়নের বিজয়নগর গ্রামের কৃষক মাইনদ্দিন ফকির জানান, এই ফসলে আমাদের ভালো লাভ থাকে। আমি গত দশ বছর ধরে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করে থাকি। এবছর আমি ১৫ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছি। আশা করছি নিজের চাহিদা মিটিয়েও কিছু বীজ বিক্রি করে লাভবান হতে পারবো।
বাল্লা ইউনিয়নের বৈকা গ্রামের কৃষক মোঃ ফারুক বলেন, এবছর আমি ৪৩ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করেছি। ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি। বিভিন্ন রোগবালাইয়ের জন্য কীটনাশক স্পে করতে হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে দেড় লাখ টাকার ওপরে বীজ বিক্রির আশা করছেন তিনি।
রাজার কলতা গ্রামের কৃষক সুভাষ মজুমদার বলেন, গত বছর বীজের দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর আগ্রহ নিয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করেছি। বাড়িতে সংগ্রহ করা পেঁয়াজ থেকেই এবছর আমি ২৫ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করেছি। অনেকেই পেঁয়াজ কিনে চাষ করেন। তাদের খরচ বেশি হয়, লাভ কম হয়। পাশাপাশি অন্য খরচও থাকে।
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, হরিরামপুর উপজেলায় চলতি অর্থ বছরে ২৫ হেক্টর জমিতে পেয়াজ বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর পেয়াজ বীজের সাথে সম্পৃক্ত কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। আশা করা যাচ্ছে, এ বছর পেয়াজ বীজ উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা ছাড়িয়ে যাবে।
এছাড়া আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকরা যাতে বাণিজ্যিকভাবে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করতে পারেন, এজন্য উপজেলা কৃষি অফিস বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ থেকে বাজারজাত করা পর্যন্ত পরামর্শের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে।