পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে চাঁদা দাবির অভিযোগে উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সহ পাঁচ জনের বিরূদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) মাওলানা মোঃ হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলো মোজাম্মেল মৃধা (৪৮),মােঃ মজনু মৃধা (৩৫),মোঃ দুলাল মৃধা (৪৫), মােঃ আঃঃ করিম ৫৭, মোঃ মাসুদ (৩০)। মোঃ মোজাম্মেল মৃধা মজিদবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং অন্যরাও একই দলের।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মাওঃ মোঃ হাবিবুর রহমান উপজেলাধীন ৬নং মজিদবাড়ীয়া ইউনিয়নের মসজিদবাড়ীয়া হােসাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার। গত ইং ০৭ আগস্ট সকালে আসামিরা ছোরা, চাকু, ডেগার এই সকল দেশীয় অস্ত্র সহ মাদ্রাসায় এসে বাদীর কাছে দুই লাখ চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় মাদ্রাসায় চাকরি করতে পারবেনা বলে হুমকি দেয়। এরপর আসামিরা বাদীকে খুন জখমের ভয়তীতি দেখিয়ে একপর্যায় তাঁর দ্বারাই পদত্যাগ পত্র লেখায় এবং তাঁর স্বাক্ষর নেয়।
বিষয়টি মাওঃ মোঃ হাবিবুর রহমান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তাঁরা থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়রি করতে বলেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি ১২ আগস্ট মির্জাগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। এরপর ১৮ আগস্ট তিনি মাদ্রাসায় যান। ঐ দিনও আসামিরা ছাোরা, চাকু, ডেগার নিয়ে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে প্রবেশ করে চাঁদা না দিয়ে মাদ্রাসায় আসার কারণ জিজ্ঞাস করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে দুই লাখ টাকা চাঁদা দিতে বলেন। বাদী মাওলানা মোঃ হাবিবুর রহমান চাঁদা দিতে রাজি না হলে আসামিরা তাকে মারধর করে।
মামলায় আরো বলা হয়,এক নম্বর আসামি মোঃ মােজাম্মেল মৃধা বাদীর জামার বুক পকেটে থাকা নগদ পাঁচ হাজার পাঁচশত টাকা জোর পূর্বক নিয়ে যায়। দুই নং আসামি মােঃ মজনু মাদ্রাসার হাজিরা খাতা নিয়ে যায়। তিন নং আসামি মােঃ দুলাল মৃধা মাদ্রাসার দুইটি সীল নিয়া যায়। চার নম্বর আসামি মােঃ আঃ করিম মাদ্রাসার কাগজপত্র ছিল এরকম একটি ব্যাগ নিয়ে যায়। পাঁচ নম্বর আসামি মােঃ মাসুদ তাকে কিল ঘুসি মারে।
বাদীর ডাক চিৎকারে (সাক্ষীরা) কয়েকজন লোক এসে তাকে রক্ষা করে এবং যা ঘটছে এ বিষয় নিয়ে কোনো মামলা করা হলে তাঁর হাত পা কেটে রাস্তায় ফেলে দিবে বলে সাক্ষিদের সামনেই হুমকি দেয় আসামিরা।
বাদী পক্ষের আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস জানান,কোর্ট আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানায় দিয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব সাহাবুদ্দিন নান্নু বলেন,চাঁদাবাজির ব্যাপারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশনা রয়েছে যে কেউ চাঁদাবাজি করলে, প্রমাণ পেলে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। মোঃ মোজাম্মেল মৃধার
এ বিষয় আমরা অবগত হয়েছি এবং পটুয়াখালী জেলা বিএনপির আহবায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়া ও সদস্য সচিব স্নেহাংশু (কুট্টি) সরকার স্বাক্ষরিত চিঠি মারফত মজিদবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদককে শোকজ করে তিন দিনের মধ্যে উপযুক্ত জবাব দিতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে মামলা হয়েছে। এখন দলের হাই কমাণ্ড কি ব্যবস্থা নেয় সেটা দেখার বিষয়।
বিবাদী মোজাম্মেল হোসেন মৃধা বলেন, এ ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।