রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
মাছের প্রজননে সময় না দিয়ে মানুষ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে : মৎস্য উপদেষ্টা কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় : আইজিপি নির্বাচন যত দেরি হবে ততই ষড়যন্ত্র হবে : তারেক রহমান কায়কোবাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে মুরাদনগরে বিএনপির প্রস্তুতি সভা কিশোরগঞ্জে ’দুর্বার প্রজন্মের’ শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠিত তারেক রহমান ও কায়কোবাদের মামলা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের হুমকি হিন্দু সম্প্রদায়ের রাতের অন্ধকারে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধে হত্যা তাড়াইলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের দাওয়াতি মজলিস ও মতবিনিময় সভা মুরাদনগরে মাটিখেকোদের বিরুদ্ধে রাতের আঁধারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান বরিশাইল্লা বউ : লুৎফুন্নেসা রহমান

কীর্তিনাশা পদ্মার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের শেষ মৌজাটিও

দিপংকর মন্ডল, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৫৭৬৯ বার পঠিত

দিপংকর মন্ডল, হরিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধি:

সর্বনাশা পদ্মা নদীর অন্যতম ভাঙন কবলিত অঞ্চল হলো মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলা। এই উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ১৩টি মৌজার মধ্যে ১২টি মৌজা পূর্বেই পদ্মায় ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন অবশিষ্ট গৌরিবড়দিয়া মৌজার বাসিন্দারাও নদীগর্ভে তাদের ভিটেমাটি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে।

জানা যায়, পানি বৃদ্ধি পাওয়া ও তীব্র স্রোতের কারনে গত ১৫ দিন ধরে পদ্মায় ভাঙন চলছে। এতে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন মালুচি ও কুশিয়ারচর এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নদীর তীরবর্তী কৃষি জমিগুলোর অনেক জায়গায় ফাটল দেখা গেছে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন ঐ এলাকার বাসিন্দারা। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে মসজিদ, মাজারসহ প্রায় অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি।

স্থানীয় লোকজন জানান, কয়েক বছরে পদ্মার ভাঙনে এ ইউনিয়নের ৭০-৭৫ শতাংশই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত তিন বছরে কোটকান্দি, মুহম্মদপুর ও বৌদ্ধকান্দিতে পদ্মার ভাঙনে শত শত বিঘা জমি ও বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে।

কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গেন্দু বেপারী, বিশু বেপাড়ী, লালন, জিয়াউর মেম্বারের বাড়ি এবং মালুচি এলাকার শাহাজদ্দীন, লালমিয়া, আখিজদ্দিন ও ফুলুর বাড়ি সহ বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বাড়িগুলো পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে।

কুশিয়ার চর গ্রামের কৃষক ফয়েজউদ্দীন জানান, কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের বাগমারায় আমার বাড়ি ছিল। দুইবার বাড়ি ভাঙার পর ৬-৭ বছর আগে কুশিয়ারচর এলাকায় বাড়ি করলাম। কৃষিকাজের পাশাপাশি মাছও ধরি। অনেক কষ্টে একটা ঘর দিলাম। তাও যে কোনো সময় ঘরবাড়ি পদ্মায় চইলা যাইব। কয়েক চাপ মাটি পড়লেই আমার ঘরটা পদ্মায় চইলা যাইব।

মালুচি এলাকার আখেজুদ্দীন বলেন, কুশিয়ারচর ও মালুচিতে তাঁর নিজ বাড়ির সামনে জিও ব্যাগ না ফেলা হলে তার বাড়ি ও কুশিয়ারচরের কয়েকটি বাড়ি যে কোনো সময় নদীতে চলে যাবে।

কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী বনি ইসলাম রূপক বলেন, ‘কয়েক বছরে পদ্মার ভাঙনে ১৩টি মৌজার ১২টি মৌজাই ইতোমধ্যে পদ্মায় ভেঙে গেছে। এখন শুধু গৌড়বড়দিয়া মৌজা অবশিষ্ট আছে। গত দুই থেকে তিন বছরে কোটকান্দি, মুহম্মদপুর ও বৌদ্ধকান্দিতে পদ্মার ভাঙনে শত শত বিঘা জমি ও বাড়িঘর বিলীন হয়েছে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে পদ্মার পানির স্রোতে কয়েক দিন আগে বিল্লাল মেম্বাবের বাড়ির সামনে জিও ব্যাগ ধসে গেছে। এখনও ৫০০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ পড়েনি। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তাকে (এসও) জানিয়েছেন।

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান জানান, ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা কাঞ্চনপুরের কুশিয়ারচর ও মালুচি এলাকার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, হরিরামপুরের চরাঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধে কাজ শুরু হয়েছে। কুশিয়ারচর ও মালুচি এলাকায়ও শিগগির জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..