ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
উভয় পক্ষের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। রয়েছে একাধিক মামলা-পাল্টা মামলাও। একপক্ষ অপরপক্ষকে দেখিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি ধামকি অব্যাহত রয়েছে। একারণে ঈষার্ন্বিত হয়ে প্রতিপক্ষের গোয়ালে স্তুপ করে রাখা গো-খাদ্যে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে খড়-কুড়া পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ও গোয়াল ঘর-সুপারীগাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বুধবার দিবাগত রাত ৯টার দিকের ঘটনায় রাতেই রাজাপুর থানার এএসআই রুস্তম আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রাজাপুর উপজেলার পশ্চিম বাদুরতলা এলাকার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আ. বারেক সিকদারের গোয়ালে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেশী তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী বিথী জানায়, রাত ৯টার দিকে এশার নামাজের জন্য অযু করতে নামলেই দেখি গরুর ঘরে আগুন জ্বলছে। ডাক চিৎকার দিলে আরো লোকজন এসে আগুন নিভায়। এসময় কয়েকজনকে দৌড়ে যেতে দেখেছে বলেও জানায় বিথী।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার জানায়, গত ১৯মার্চ রাতে গৃহবধু কাজল (ছদ্মনাম) প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরে ফেরার সময় মিজান, শামীম, মান্নান ও আরিফ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঝাপটে ধরে শ্লীলতাহনি করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এতে ধস্তাধস্তিতে ওই গৃহবধু অসুস্থ হয়ে পড়লে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসা নিয়ে বুধবার বাড়িতে আসেন। এঘটনায় আদালতে নালিশী অভিযোগ দায়ের করেন ওই গৃহবধু নিজেই।
আদালত রাজাপুর থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। বুধবার দুপুরেই তাকে বাড়িতে দেখে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেয়, নইলে বসতভিটা ছাড়া করার ঘোষণা দেয় বলে জানান কাজল। শিখা বেগম জানান, বিথী বাইরে গিয়ে আগুন আগুন চিৎকার দিলে আমরা দৌড়ে এসে দেখি আগুন জ্বলছে। যে যেভাবে পারছে পানি দিয়ে আগুন নিভাইছে।
ক্ষতিগ্রস্ত আ. বারেক সিকদার জানান, আগুন আগুন চিল্লাচিল্লি শুনে রাস্তা থেকে দৌড়ে বাড়িতে ঢুকার সময় দেখি বিপরীত দিক থেকে মিজান, শামীম, মান্নানসহ আরো কয়েকজনে দৌড়ে পালাইতেছে। বাড়িতে পৌছে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে পৌছার আগেই দেড় ঘণ্টা সময় পরে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।
বসত ঘরের পাশে থাকা গোয়াল ঘরে স্তুপ করে রাখা খড় ও কুড়া আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কয়েকটি সুপারী গাছও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গোয়ালঘর সংলগ্ন বসতঘরের উপরে পানির ট্যাংকি থাকায় আগুনের তাপে তা গলে পানি পড়তে থাকায় গোয়াল ঘর সম্পুর্ণ ভস্মিভুত হয়নি।
গৃহকর্তি মোসা. মাহফুজা শিউলী জানান, রাত ৯টার দিকে ৫মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে শোয়া অবস্থায় ধোয়ায় অন্ধকার দেখে চিৎকার করে উঠি। এরমধ্যেই আগুনের তাপ ভিতরে আসতে শুরু করে। আমরা দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে আগুন নেভাতে ডাক চিৎকার দেই। প্রতিবেশিরা আমাদের জীবন রক্ষা করেছে।
রাজাপুর থানার এএসআই রুস্তম আলী জানান, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।