বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০২:২২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ডিএসইসি’র প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাইজিং বিডির আরিফ আহমেদ কিশোরগঞ্জে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের র‍্যালি অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের হাওরে কৃষকদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের শরবত ও ঠান্ডা পানি বিতরণ ডিএসইসি’র সভাপতি অনিক সম্পাদক জাওহার ইকবাল মির্জাগঞ্জে কৃষি জমিতে সেচ দিতে গিয়ে যুবক ফিরলো লাশ হয়ে আকাশ: কবি মাহফুজ রকি মির্জাগঞ্জে প্রাইমারি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত শান্তা মনি দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান উপজেলা নির্বাচন: হরিরামপুরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে দেওয়ান সাইদুর মির্জাগঞ্জে পুলিশ কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: ভোলায় ৮ হাজার বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত

সাব্বির আলম বাবু (ভোলা ব্যুরো চিফ):
  • আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২
  • ৬০৭২ বার পঠিত

কবির মাঝি। নদীতে মাছ ধরেই চলে তার সংসার। সোমবার স্ত্রী ও তার একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ঘরেই ছিল। কিন্তু বিকাল থেকে ঝড়ো বাতাস বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার আগে ঘূর্ণিঝড় সি-ত্রাংয়ের আঘাতে তার ঘর বিধ্বস্ত হয়।

কোন রকম কষ্টে তাদের ৩ জনের প্রাণ রক্ষা হলেও ঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। তাদের মাথা গোজার ঠাই টুকু আর থাকে না। পড়ে থাকা ঘরে ধ্বংস যোগ্য মালামাল। পুনরায় ঘর মেরামত করে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি। বুধবার তার শূন্য ভিটা মাটি পরে থাকতে দেখা যায়। এ অবস্থা ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার হাজারিগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের চর ফকিরা গ্রামে। বর্তমানের জেলে হাসান তার ঘর হারিয়ে বেড়ি বাধের পাশের তার পিতা নান্নু মাঝির ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। হাসনানের মতো ৬ নং ওয়ার্ডে গাছচাপা ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে সালাউদ্দিনের। টাকার জন্য বিধ্বস্ত ঘর সজিব তুলতে পানছে না।

রফিক, খোকন মাঝি ঘর অর্ধেক বিধ্বস্ত হয়েছে। তারা টাকার মেরামত করতে পারছে। তাদের মধ্যে এখনো কিউ কোন সহায়তা পায়নি বলেও সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ রয়েছে। এমন চিত্র ভোলার বিধ্বস্ত বিভিন্ন এলাকায়। সরকারিভাবে বলা হয়েছে আনুমানিক প্রায় ৮ হাজার ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ইতো মধ্যে ত্রান বিতরণ কার্যক্রম চলছে।

স্থানীয়রা জানান, উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার বিধ্বস্ত পরিবার গুলো এখন চরম দুভোর্গে রয়েছে। অনেক পরিবার তাদের মাথা গোজার ঠাই হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। অনেকেই ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছে। যাদের সামথ্য রয়েছে তারা ভাঙ্গাচুরা ঘর বাড়ির অবশিষ্ট যা রয়েছে তা দিয়ে মেরামতের চেষ্টা করছে। কিন্তু যাদের সামথ্য নেই তাদের কষ্টের শেষ নেই। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছে আত্মীয় বা অন্যের বাড়িতে। জরুরি ভিত্তিতে তাদের পুনবার্সন প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
সরকারি হিসাবে প্রাথমিক ভাবে আনুমানিক এই জেলায় ৭ হাজার ৯২২ টি বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, সোমবার রাতে বয়ে যাওয়া এই ঝড়ে আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৫ হাজার ৬৩৯টি ঘরের ও সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ২৮৩টি বাড়ির। দুর্ভগে পড়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ১৬২ জন মানুষ। ইতোমধ্যে এসব র্দুগত মানুষের মাঝে ৮৪ মেট্রিকটন চাল, নগদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, এক হাজার ৩২০টি সুকনা ও অনান্য খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। এসব খাবারের মধ্যে ১০ কেজি করে মিনিকেট চাল, ডাল এক কেজি, তেল এক কেজি, চিনি এক কেজি, লবণ এক কেজি, গুড়া মরিচ, হলুদ, ধনিয়া, ড্রাই কেক ও বিস্কুট রয়েছে।

বৃহস্পতিবার জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা এস এম দেলোয়ার হোসাইন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা তার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে সহায়তা করতে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে বলে জানান তিনি।

সিত্রাংয়ের আঘাতে শুধু ঘর বাড়িই বিধ্বস্ত হয়নি। ভোলায় কৃষকের ফসল,পুকুরে মাছ থেকে শুরু করে বনের গাছ, বিদ্যুতের সঞ্জালন লাইন। এখনো অনেক এলাকায় বিদ্যুতের খুটি উপড়ে পড়েছে। উপজেলা শহরে বিদ্যুৎ চালু হলেও অনেক এলাকায় ৩ দিন পরও বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়নি। ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জি এম জানান, ভোলায় জেলায় ঘড়ে তাদের প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতির হয়েছে। বিদ্যুতের লাইন মেরামতের কাজ চলছে।

এদিকে ভোলা কৃষি বিভাগ জানায়, জোয়ারের পানিতে ৩ হাজার ১৬০ হেক্টর জমির আমন ধান ও ১৫০ হেক্টর শীতকালীন সবজির ফসল ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া জোয়ারের পানিতে ছয় হাজার ২৮০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..