বরগুনার বেতাগীতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গ্রহণে কেন্দ্রের ভবনের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রের মূল গেটের বাইরে প্রতিষ্ঠানের স্টাফরা পাহারায় রেখে পরীক্ষার শুরু থেকে পরীক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দেয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। সরেজমিনে বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের “করুণা মোকামিয়া কামিল মাদ্রাসা” কেন্দ্রে গিয়ে এই চিত্র দেখা মিলে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কেন্দ্র কমিটির সভাপতি মো. সুহৃদ সালেহীনকে বিষয়টি মুঠোফোনে জানালে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
পরীক্ষা চলাকালীন সময় মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১২টায় করুণা মোকামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের গেলে বাহিরের মূল ফটকে তালাবদ্ধ দেখা যায়। এসময় তালাবদ্ধ গেটের বাহিরে মাদ্রাসার স্টাফদের নিয়ে অবস্থান করছিলেন কেন্দ্র সচিব ও করুণা মোকামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শাহ মো. মাহমুদুল হাছান ফেরদৌস। এসময় কেন্দ্রে দায়িত্বরত কোন পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি।
ফটকে দায়িত্বরত গার্ডকে সাংবাদিকরা ভিতরে প্রবেশ করতে তালা খুলতে বললে তিনি সাংবাদিকদের দাঁড়াতে বলে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে আড়ালে যান। কিছুক্ষণ পরে মুঠোফোনে কথা বলা শেষে তিনি সাংবাদিকদের পরীক্ষা কক্ষে নিয়ে যান। ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কয়েকটি কক্ষে গিয়ে গিয়ে দেখা যায় কেন্দ্র সচিবের নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ ছোপখালী জহুর উদ্দিন ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিচ্ছেন। এসময় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা অন্য একটি ভবনের অফিস কক্ষে অবস্থান করছিলেন। সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবরে তিনি কেন্দ্রে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাদ্রাসা শিক্ষক বলেন, করুণা মোকামিয়া কামিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা কেন্দ্রের ভবনের গেটে তালা দিয়ে পরীক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে আসছে। এজন্য তাঁরা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আলাদা টাকাও আদায় করেছেন।’পরীক্ষা কেন্দ্রের মূল ভবনের ফটক তালাবদ্ধ করে কেন পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে করুণা মোকামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব বলেন শাহ মো. মাহমুদুল হাছান ফেরদৌস বলেন, যেকেউ কেন্দ্রে যেন প্রবেশ করতে না পারে তাই তালা দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্য হয়তো বাথরুমে গিয়েছে।
কেন্দ্রে কোন অনিয়ম হচ্ছেনা দাবি করে তিনি আরও বলেন, আমার এই প্রতিষ্ঠানের মতো এরকম পরীক্ষা বাংলাদেশের আর কোথাও হয় না। আমি ভালো কাজ করি বিধায় এত অভিযোগ। খারাপ কাজ করলে অভিযোগ থাকতো না। বেতাগী উপজেলার কলেজ ও মাদ্রাসার দায়িত্ব প্রাপ্ত কেন্দ্র সচিব জানান, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রের ফটকে তালা দেয়ার কোন নির্দেশনা নেই। বরং এতে সংশ্লিস্টদের বিড়াম্বনায় পড়তে হতে পারে।
কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো:, এমাদুল হক বলেন, এই কেন্দ্রে যিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন উনি ছুঁটিতে থাকায় আমি অতিরিক্ত হিসেবে আসছি। কেন্দ্রে পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে এবং ভিতরগত কোন সমস্যা নেই।