নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান বলেছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিটি নির্বাচনে সফলতা অর্জন করেছি। রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দায়িত্ব পালনের এক বছরের প্রতিক্রিয়ায় লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন আহসান হাবিব।
তিনি বলেন, কত সময় পার হলো, প্রথম বছর গেল কিংবা শেষ বছর এলো- এটি আমার কাছে মুখ্য নয়। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছি; এটা করেই যাব। প্রতিটি কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গেই করব। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যত নির্বাচন করেছি সবগুলোই আমরা সততার সঙ্গে আন্তরিকভাবে করেছি এবং প্রত্যাশিত সফলতা অর্জন করেছি। আমাদের কাজের মূল্যায়ন সময়ই বলবে।
আহসান হাবিব বলেন, আলাদা কোনো চ্যালেঞ্জ নয়, প্রতিটি নির্বাচন যেভাবে সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য করেছি; একইভাবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনও করব ইনশা আল্লাহ। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও ইতোমধ্যে বলেছেন, দেশে-বিদেশে সবার কাছে অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে আমরা বদ্ধ পরিকর।
তিনি বলেন, আমরা কঠোর বার্তা দিতে পেরেছি নির্বাচন ব্যবস্থাপনায়। গাইবান্ধা উপনির্বাচন অনিয়মের কারণে বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সিটি নির্বাচনগুলো সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। ভোটারদের আস্থা ফিরছে। সামনেও নির্বাচন রয়েছে। সংসদ নির্বাচনেও আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে সুন্দর নির্বাচনের।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয় আসনের উপ-নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক না হওয়ায় ও আগ্রহ কম থাকায় ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হয়েছে। এটা সব নির্বাচনের দৃষ্টান্ত নয়। প্রতিটি নির্বাচনে আমাদের কঠোর মনোভাব, স্বচ্ছতা ও সদিচ্ছার কোনো ঘাটতি ছিল না, আগামীতেও থাকবে না। অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠুভাবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করতে আমরা কর্মপরিকল্পনা ধরে এগিয়ে যাচ্ছি। সব অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করেছি, তা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যা করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে সমাধানযোগ্য কোনো বিষয় কমিশনের কাছে প্রত্যাশা করাও সমীচীন নয়। সাংবিধানিকভাবে আমাদের দায়িত্ব যতটুকু তার শতভাগ আমরা পালন করে যাব। আমি বরারবই বলেছি, দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক বিভেদ আর প্রশ্নের মোকাবিলা করতে হয়েছে। সব দলের প্রতি আহ্বান অব্যাহত থাকবে, ভোটে অংশ নিন। কমিশনের একার পক্ষে সব সম্ভব হবে না; সকলের সহযোগিতাও দরকার।
আহসান হাবিব বলেন, আমাদের কর্মকাণ্ড দিয়ে প্রমাণ দিয়েছি, আস্থা অর্জনে এগিয়ে গেছি। উদ্দেশ্য একটাই- ‘অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন করা। সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে ইভিএমে ভোট করার পরিকল্পনা নিয়ে আমাদের কোনো সময় নষ্ট হয়নি বরং জনসচেতনতা বেড়েছে।
ইভিএমে সবগুলো নির্বাচন করেছি। ইভিএম নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ ও সচেতনতা তৈরি করতে পেরেছি। অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও সবার প্রত্যাশা বিবেচনা করে বড় পরিসরে ইভিএমে ভোট হচ্ছে না। তবে বিদ্যমান সচল ও কার্যক্ষম ইভিএমের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে। এ নিয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে বলে মনে করি। এমন পরিস্থিতিতে সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে এবং কমিশনকে সহায়তা করবে বলেই প্রত্যাশা আমাদের, বলেন তিনি।