সন্দ্বীপের সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতিবাজ সহকারী মাহফুজুর রহমান গড়েছে সম্পদের পাহাড়। তার বিরুদ্ধে দুদক মামলা দায়ের করেছে।তার পরও গত ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি অফিস করেছেন। তবে উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তী জামিন নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে জানান অভিযুক্ত মাহফুজ।
দুদক সূত্র জানায়, গত ২ সেপ্টেম্বর মামলাটি করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী। এতে মাহফুজের সঙ্গে আসামি করা হয় তার স্ত্রী দিলুয়ারা মাহফুজকেও (৪২)। মাহফুজুর রহমানের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া থানার উত্তর দেয়াং মোহাম্মদনগর গ্রামে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মাহফুজ দম্পতির এক কোটি ৭ লাখ ২ হাজার ৭৪৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া তারা দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ২১ টাকা মূল্যের সম্পদ থাকার তথ্য গোপন করেছেন। মামলায় দুদক আইনের ২৬(২), ২৭(১) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে।
দুদক সূএ আরো জানায়, ২০২২ সালে দুদকে জমা হওয়া এক অভিযোগ অনুসন্ধান করে মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সত্যতা পান অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা। এরপর কমিশনের নির্দেশে ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন দিলুয়ারা মাহফুজ। পরে তার সম্পদ বিবরণী যাচাই করে মিথ্যা তথ্য দেওয়া ও অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপনের সত্যতা পায় দুদক। দিলুয়ারা মাহফুজের এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনে তার স্বামী মাহফুজুর রহমান সহযোগিতা করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপ-পরিচালক আতিকুল আলম।
অভিযোগের বিষয়ে দুদকের মামলায় আসামি হওয়া মাহফুজুর রহমান এই প্রতিবেদক জানান বলেন, একটি বেনামি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক তদন্ত করেছে। আমার স্ত্রীকে সম্পদগুলো দান করা হয়েছিল। কিন্তু দুদক কর্মকর্তারা সেটি বুঝতে চাননি। তারা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়ার প্রক্রিয়া করছি। পাশাপাশি মামলাটিও আইনিপ্রক্রিয়ায় আমরা মোকাবিলা করব।
এ বিষয়ে সন্দ্বীপ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার (খণ্ডকালীন) ইসমাইল হোসেন বলেন, মাহফুজ আমার অফিসে নিয়মিত অফিস করছেন। আজকেও (বুধবার) তিনি অফিস করেছেন। তিনি মামলার আসামি হয়েছেন আমাকে জানাননি। পাশাপাশি দুদক থেকেও আমাদের জানানো হয়নি।
অভিজ্ঞ মহল মনে করেন ওই কর্মচারী দুর্নীতি করে টাকা অর্জন করেছেন এবং এগুলো এখন নিরাপদে ভোগ করছেন। এই ভোগ করতে দেওয়াও এক ধরনের অপরাধ। দুদকের উচিত ছিল তাকে কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার এবং তার সম্পদ ক্রোকের আবেদন করা। কারও বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে মামলা রুজু হওয়া মানে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত অথবা অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারীর জামিন নেওয়া দরকার ছিল। দুর্নীতি মামলায় পলাতক আসামিকে সরকারি দপ্তরে অফিস করতে দেওয়া বেআইনি। পাশাপাশি তিনি প্রশ্রয় পেয়ে এখন আরও বেশি দুর্নীতি করবেন।