মনজুর মোর্শেদ তুহিন (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
বৈবাহিক জীবনের ২৭ বছর অতিবাহিত হলেও ৫৩ বছর বয়সী মাহমুদা বেগম ভুগছে স্বামীর প্রতি পরকীয়া সন্দেহ প্রবণতায়। ২১সে অক্টোবর পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবে দুই সন্তান নিয়ে সংবাদ সন্মেলনে স্বামীর প্রতি অভিযোগের পরবর্তী তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সরকারী চাকুরীজীবী স্বামীর অবসর ভাতা নিয়ন্ত্রণে নিতে করছে নতুন কলাকৌশল। এমনই অভিযোগ পাওয়া গেছে মাহমুদার পিতা ও স্বামী উভয় পরিবার থেকে।
জানা যায়, বিয়ের পর থেকে স্বাভাবিক ভাবেই চলছিল মাহমুদা বেগম ও মোঃ আল আসাদের সংসার। বিয়ের পূর্ব থেকেই মাহমুদা ধুমপান ও ঘুমের ঔষধে আসক্ত যা এখনো চলমান আছে। প্রথমদিকে এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হলেও এক সময় তার স্বামী মাহমুদার খেয়ালীপনা মেনে নেয়। দাম্পত্য জীবনে তারা দুই সন্তানের জনক জননী। পটুয়াখালী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে সরকারী চাকুরীজীবী স্বামী আসাদ একসময় খেয়াল করেন সন্তানরা বড়ো হচ্ছে কিন্তু মাহমুদার আচরন দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে। সংসার গোছানো, রান্না বান্না, স্বামী সন্তানদের প্রতি খেয়াল সব কিছুই বিশৃঙ্খল। অফিস থেকে বাসায় ফিরে এসেও রান্নাবান্না সহ সংসারের সবকিছু ঠিক রাখতে হয় আসাদকে। সদালাপী ও সাদাসিধে আসাদের চাকুরীর প্রথম থেকেই তার মাসিক বেতনের সব টাকা মানসিক চাপ দিয়ে কেড়ে নেয় মাহমুদা। মাঝেমধ্যে টাকা দেয়া বন্ধ করে দিলে শুরু হয়ে তুলকালাম কান্ড। বেশ কয়েকবার সে স্বামীর বিরুদ্ধে ভরন-পোষনের অভিযোগ তুলে থানা ও কোর্টে মামলা দেয় কিন্তু অভিযোগ প্রমান করতে না পারায় আসাদ সব অভিযোগ থেকে অব্যহতি পায়। বর্তমানে মাহমুদার নামে কয়েকটি ব্যংক একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা জমা থাকলেও তার নজর পরে আসাদের অবসরের এককালীন ভাতার দিকে। আসাদের সরকারী চাকুরীর অবসরের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাকে চাপে ফেলতে অপপ্রচার করে বিভিন্নভাবে বিভ্রান্ত করছে মাহমুদা। প্রচার চালাচ্ছে তার স্বামী অন্যত্র বিয়ে করেছে এবং পরকীয়ায় আসক্ত তবে তার আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে জানা যায়, আসাদের দ্বিতীয় বিবাহ কিংবা অসৎ কাজের কোন প্রমাণ নাই। সাম্প্রতিক মাহমুদা আসাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে তার দুই সন্তান ছাড়া কোন স্বজনদের উপস্থিত ছিল না।
এ নিয়ে মাহমুদার মাতা বলেন, আমার বড় জামাইয়ের মত এত ভালো মানুষ কোথাও হয় না, আসাদকে আমি ২৭ বছর ধরে চিনি ওর মধ্যে খারাপ কিছু দেখি নাই। আমার মেয়ে নেশা করতে করতে ওর মাথা নষ্ট হয়ে গেছে।
মাহমুদার ছোট ভাই জুয়েল বলেন, আমার বোনের ভালো বলতে কিছু নাই, সংসারের প্রতি কোন খেয়াল নাই, ও একটা নেশাখোর, দুপুর একটায় ঘুম থেকে উঠে, সন্তানদেরও কোন খোঁজ রাখে না, এবাদত বলতে কিছু নাই, যে মহিলার প্রতিদিন এক প্যাকেটের বেশি বেনসন সিগারেট লাগে তার জ্ঞান থাকে কিভাবে? আমার বড় বোন সন্দেহ করে আমার স্ত্রীর সাথে তার স্বামীর পরকীয়া চলছে যা একদম ভুয়া। দুলাভাই সম্পূর্ণ নির্দোষ তার টাকা আত্মসাৎ করার জন্য উঠে পড়ে লাগছে।
মাহমুদার চাচা মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, দোষ ত্রুটি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আপেক্ষিক ব্যাপার কিন্তু আমার ভাইজি আসাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেয় তার কোন কিছুর সত্যতা আমি পাই নাই।
মাহমুদার ছোট বোন রুমা বলেন, আমার বোন চায় স্বামীর সবকিছু আগলাইয়া রাখতে কিন্তু স্বামীরা কি সব দিতে চায়? আমার বোন যেভাবে চায় সবই অযৌক্তিক।
মাহমুদা বেগমের স্বামী আসাদ বলেন, আমার স্ত্রী সিগারেট খায় সত্য, এক প্যাকেটে তার হয় না। ওর শান্তির জন্য আমার সারা জীবন শেষ করছি কিন্তু ও আমাকে নিস্ব করে রেখেছে। এলপিআর এ আসার পরই পেনশনের টাকা কব্জা করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রচার চালায়। আমার আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে অফিস পর্যন্ত সবখানে আমাকে খারাপ বানানোর চেষ্টা করে। এসব কেন করে আমি কিছুই বুঝিনা।
এ ব্যাপারে মাহমুদা বেগম বলেন, আমি ধূমপান করি এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ছোটবেলা থেকেই আমার এটার অভ্যাস। বাসায় টেইলারি করে আমার ব্যাংকে টাকা জমিয়েছি। আমি চাই বাসা ভাড়া ১০,০০০ টাকা বাদে আমার হাত খরচের জন্য আরো ২০,০০০ টাকা দিতে হবে। আমার মা আমার ভাই বোনরা আমার অশান্তি চায়।