নিজস্ব প্রতিবেদক: , আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ , আজকের সময় : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

রাজনীতিকে সঠিক পথে পরিচালনায় সব দলকে এগিয়ে আসার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

রাজনীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আজ সোমবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের চতুর্থ দিন তিনি এ আহ্বান জানান।

আজ বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ হয় খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের নেতাদের।

রাষ্ট্রপতি খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের নেতাদের বলেন, এ ক্ষেত্রে শুধু সদিচ্ছা ব্যক্ত করাই যথেষ্ট নয়; ঘরে বসে না থেকে মাঠে নেমে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে পারলেই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। এ ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এ তথ্য জানান।

প্রেস সচিব বলেন, একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সংলাপের আজ ছিল চতুর্থ দিন। সন্ধ্যায় বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (বিটিএফ) ও খেলাফত মজলিসের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন রাষ্ট্রপতি। খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আজ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়।

খেলাফত মজলিস নেতারা নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন, নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালীকরণ এবং নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষাসহ পাঁচ দফা প্রস্তাবনা দেন রাষ্ট্রপতির কাছে। এর আগে বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বসে সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী এমপির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

তরিকত ফেডারেশনের প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির কাছে চার দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে। তাদের প্রস্তাবনাগুলো হলো সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন, সার্চ কমিটি গঠন (যেখানে গণমাধ্যমের একজন প্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত থাকবে), মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী বা তাদের পরিবারবর্গের কাউকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনার নিয়োগ না দেওয়া। এ সময় রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনই সংলাপের আলোচনার মূল লক্ষ্য।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আশা প্রকাশ করেন পর্যায়ক্রমে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি দক্ষ, শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব হবে। তিনি দেশের নির্বাচন কমিশন গঠনে সব রাজনৈতিক দলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। গত ২০ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সংসদের প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সঙ্গে প্রথম দিন সংলাপে বসেন। এ পর্যন্ত বঙ্গভবনে ছয়টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ হবে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির, আগামী বুধবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) সঙ্গে এবং ইসলামী ঐক্যজোট সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যা ৬টায়। গণফোরামের সঙ্গে বৈঠক হবে আগামী ২ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় এবং বিকল্প ধারা বাংলঅদেশের সঙ্গে সন্ধ্যা ৭টায়। আগামী ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭ টায় সংলাপ হবে গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সন্ধ্যা ৭টায়।

অন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। সংলাপের সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ‘সার্চ কমিটি’র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।

বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।