পটুয়াখালী প্রতিনিধি , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২২ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

৫০ বছরেও বেড়িবাঁধ নির্মান হয়নি পটুয়াখালীতে

পটুয়াখালীতে তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর বুক চীরে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে দীর্ঘ ৫০ বছরেও নির্মান করা হয়নি বেড়িবাঁধ। পটুয়াখালীর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরবোরহান, চরশাহজালাল, চরহাদী, লালচর, চরফাতেমা, চরবাঁশবাড়ীয়া ও চরআজমাইনে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস। দীর্ঘ ৫০ বছর আগে এ চরাঞ্চলে জনবসতী গড়ে ওঠার পড় থেকে চরাঞ্চলের মানুষ বেড়িবাধের জন্য সভা-সমাবেশ এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্বারকলিপিসহ বিভিন্ন ভাবে আবেদন করেও বেড়িবাধ পায়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

জানা যায়, দশমিনা উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলগুলোতে বেড়িবাঁধ না থাকায় নদীর জোয়ারের পানি ঢুকে চরাঞ্চলে প্রতি বছর লখ লখ টাকার ফসল নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘ ৪০ বছরে চরাঞ্চলে কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা, বিদ্যুৎ ও মানুষের জীবনমান কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও এখনো বর্ষা মৌসুমে জোয়ারে ৩/৪ ফুট পানিতে ডুবে থাকে আর ভাটায় ভেসে ওঠে চরাঞ্চল। বর্তমানে দশমিনার চরাঞ্চলে ১৪টি প্রাথমিক ও তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বর্ষা মৌসুমে নৌকায় করে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়।

চর-শাহজালালের কৃষক মো. মোকলেছ হাওলাদার জানান, বেড়িবাধ না থাকায় ফসলের ক্ষেতে জোয়ারের পানি ঢুকে প্রতি বছর একরকে একর জমির ফসল নষ্ট করে। আর বেড়িবাঁধ থাকলে আমাদের ফসল নষ্ট হবেনা। আমরা ভালো থাকতে পারবো। চর-শাহজালালের অণ্য কৃষক মো. রফিক হোসেন জানান, আমার বয়স এখন প্রায় ৫৫বছর এ বয়সেও বেড়িবাঁধ চোখে দেখিনি। আর জীবিত অবস্থায় বেড়িবাঁধ দেখতে পাবো বলে মনে হয়না। চরে বেড়িবাঁধের অভাবে প্রতিবছর লখ লখ টাকার ফসল হারাতে হয়।

চর-শাহজালালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ খলিলুর রহমান জানান, ঘূর্নিঝড় ইয়াস এর জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের থেকে ৩/৪ ফুট বেশি হওয়ায় শত শত বাসা বাড়ি তলিয়ে ছিলো। তিনি আরও জানান, বেড়িবাধ না থাকায় প্রতিবছর ঝড় বন্যা জলোচ্ছাসে চরাঞ্চলের মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বেড়িবাধের অভাবে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেচেঁ থাকতে হচ্ছে চরের মানুষকে।

এ ব্যপারে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান জানান, বেড়িবাধ নির্মানের দাবীতে চরাঞ্চলের কৃষকদের সাথে নিয়ে দীর্ঘ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। তিনি আরও জানান, চরাঞ্চলের মানুষের এখন প্রানের দাবী হয়ে উঠেছে বেড়িবাধ।

চরবোরহান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজির আহমেদ সরদার জানান, উপজেলা পরিষদের সভায় একাধিকবার চরাঞ্চলে বেড়িবাধ নির্মানের দাবী জানিয়েছি। তিনি আরও জানান, চরাঞ্চলের মানুষের এখন একটাই দাবী ত্রান নয় বেড়িবাধ চাই।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনের সংসদ সদস্য এসএম শাহজাদা সাজু এমপি জানান, দশমিনার চরাঞ্চলে বেড়িবাধ তৈরির জন্য ডিও লেটারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করি খুব তারাতারি চরাঞ্চলে বেড়িবাধ নির্মান করা হবে।