স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের ২৩ দিন পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে অবিসংবাদিত নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিক ইতিহাসের অনন্য একটি মাইলফলক এটি।
বঙ্গবন্ধু যে এয়ারক্রাফটে দেশে ফিরেছিলেন, অবশেষে সেটি শনাক্ত করা গেছে। বর্তমানে এটি জার্মানির হার্মেস্কেইলের একটি প্রাইভেট এভিয়েশন মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। এটি কমেট ফোর-সি মডেলের এয়ারক্রাফট ছিল। দীর্ঘ কয়েক দশক থেকে এটি হার্মেস্কেইলের ফ্লাগুস্টেলাং পিটার জুনিয়র এভিয়েশন মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ এভিয়েশন হাব সূত্রে জানা গেছে, এয়ারক্রাফটটি ১৯৬৩ সালে যুক্তরাজ্যের রয়েল এয়ার ফোর্সের জন্য বানানো হয়েছিল। ১৯৭৫ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের ড্যান-এয়ার লন্ডন নামে একটি এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানের হয়ে পাঁচ বছর বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা করে এটি। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখে এটি জার্মানির ডুসেলড্রফে রাখা হয়। এর কিছুদিন পরই একে ফ্লাগুস্টেলাং পিটার জুনিয়র এভিয়েশন মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
জাতির পিতা পাকিস্তান কারাগার থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে, খ্রিষ্টাব্দ হিসেবে ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধুকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তিনি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে একটি বিশেষ ফ্লাইট ৬৩৫-এ করে অবতরণ করেন। লন্ডনে পৌঁছে সকাল ১০টার পর থেকে তিনি কথা বলেন ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে। টেলিফোনে কথা বলেন প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গেও। পরে ব্রিটেনের বিমানবাহিনীর একটি বিমানে করে ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন। ১০ তারিখ সকালে তিনি নামেন দিল্লিতে। সেখান থেকেই ঢাকায় আসেন তিনি।