কোভিড টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে চায় অস্ট্রিয়া সরকার। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ সরকারের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ায় এ সংক্রান্ত আইন প্রবর্তন এখন অনেকটা সময়ের ব্যাপার হয়ে গেছে।
সবকিছু ঠিক থাকলে দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকা বাধ্যতামূলক-সংক্রান্ত নতুন আইন কার্যকর হতে যাচ্ছে। আর, আইনটি কার্যকর হলে অস্ট্রিয়া হবে টিকা বাধ্যতামূলক করা ইউরোপের প্রথম দেশ। খবর বিবিসির।
সরকারের প্রস্তাবিত বিলটি নিম্নকক্ষে পাস হওয়ার পর এখন কেবল কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। বিলটি এখন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে পাস হতে হবে। এবং এরপর প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ফন ডার বেলেন তাতে স্বাক্ষর করলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে। এসব পদক্ষেপ এখন বস্তুত আনুষ্ঠানিকতা বলেই মনে করা হচ্ছে।
অস্ট্রিয়ার নতুন টিকা আইন ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির সরকার টিকা না নেওয়া লোকদের টিকা নিতে উৎসাহিত করতে ১০৪ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করছে।
নতুন আইনটি বলবৎ হলে ফেব্রুয়ারি থেকে অস্ট্রিয়ার সব প্রাপ্তবয়স্ককে বাধ্যতামূলকভাবে করোনার টিকা নিতে হবে।
অস্ট্রিয়াসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে কোভিড টিকা এবং কোভিডের বিধিনিষেধ ও কড়াকড়ির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানিয়েছেন এবং এখনও জানাচ্ছেন। সে বিক্ষোভ উপেক্ষা করেই টিকা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিল অস্ট্রিয়া।
পার্লামেন্টে সরকারের প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস হয়েছে। যদিও অতি-ডানপন্থিরা এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। প্রস্তাবের পক্ষে ১৩৭টি ভোট পড়েছে। আর, বিপক্ষে ৩৩টি।
নতুন আইনে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত টিকা দেওয়ার প্রথম পর্ব চলবে। যাঁরা টিকা নিতে চাইবেন না, তাঁদের তিন হাজার ৬০০ ইউরো জরিমানা দিতে হবে। তবে, গর্ভবতী নারী এবং যাঁরা চিকিৎসার কারণে টিকা নিতে পারবেন না, তাঁরা ছাড় পাবেন। শুধু প্রাপ্তবয়স্কদেরই বাধ্যতামূলকভাবে টিকা নিতে হবে।
অস্ট্রিয়ায় এ বিল যখন পাস হচ্ছে, তখন অতি-ডানপন্থি ফ্রিডম পার্টি অব অস্ট্রিয়া টিকাবিরোধী বিক্ষোভ করছে। দলটির নেতা জানিয়েছেন, তাঁরা বিক্ষোভ করবেন এবং তিনি নিজে টিকা নেবেন না। তবে, বাকি দলগুলো টিকা দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।
অস্ট্রিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ৯০ লাখ। সে দেশে এক হাজার ৪০০ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। করোনায় আক্রান্ত হয়েছে মোট ১৫ লাখ মানুষ। দেশটির ৭০ শতাংশ জনগণ টিকার দুটি ডোজ নিয়েছে।
এর আগে তাজিকিস্তান, তুর্কেমেনিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো টিকা বাধ্যতামূলক করেছে। এবার সে তালিকায় অস্ট্রিয়া যুক্ত হলো।