রিপোর্টারের নাম , আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২২ , আজকের সময় : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

রাজধানীতে ইবনে সিনা হাসপাতালে রোগী হত্যার অভিযোগ

রাজধানীর কল্যাণপুর ইবনে সিনা হাসপাতালে সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় হাসপাতালের ১৩০৯ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রিতা খান নামের এক রোগীকে তার আত্মীয়-স্বজনদের সম্মতি ছাড়াই ক্যানুলা পড়ানোর নাম করে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে আসে।

অভিযোগে জানা যায়, রোগী দুই মেয়ে , বোন, স্বামী, দেবরসহ অত্মীয়-স্বজনদের কোনরুপ সম্মতি ছাড়াই, তাদের
সম্পুর্ন ইচ্ছার বিরুদ্ধে রিনা খান (৪৫) কে হাসপাতালের একাডেমিক ভবনের অপারেশন থিয়েটার ঢুকানো হয়।

রোগীর লোকজনদের না জানিয়ে জেনারেল এ্যানেস্থেসিয়া ছাড়াই তার শরীরে অশ্রপাচার চালায়।
অপারেশন থিয়েটারের পাশের কক্ষে অপেক্ষমান রিতা খানের মেয়ে সুহা খান তাঁর মায়ের আর্তনাদ শুনতে পায়। হঠাৎ তাঁর অর্তনাদ বন্ধ হয়ে যায়।

এ্যানেস্থেসিয়া ছাড়াই অশ্রপাচার করার ফলে রোগী রিতা খান সংঙ্গাহীন হয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ওটি এ্যাসিস্টান্ডরা তড়িগড়ি করে রোগীকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে,১৩০৯ কেবিনে নিয়ে আসে। কেবিনে আনার পরপরই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। নিহতের আত্মীয়-স্বজন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,স্বাস্থ্য মন্ত্রী, সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

উল্লেখ্য, রিতা খান ক্যান্সারে আক্রান্ত, সেইসাথে ডেঙ্গু, জন্ডীস ও করোনা পজিটিভ। গত ২০ জানুয়ারী রাত ১২ টায় তাকে কল্যাণপুর ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করাই।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর শরীরে রক্তের প্রয়োজন হওয়ার রোগীর অাত্বীয় স্বজন তাকে রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

নিহতের অাত্বীয় স্বজনরা জানান, অপারেশন থিয়েটার কোন এ্যানেস্থিস্ট ও কোন চিকিৎসক ছিলো না। ওটি এ্যাসিস্টেন্ট দিয়ে কোনরুপ এ্যানেস্থেস্টি ছাড়াই জেনারেল বা লোকাল এ্যানেস্থেসিয়া না দিয়ে অপারেশন করার ফলে তাঁর অকাল মৃত্যু হয়েছে। ইবনে সিনা হাসপাতাল কতৃপক্ষ টাকার লোভে বিনা প্রয়োজনে এবং বিনা সম্মতিতে অশ্রপাচার তাদের রোগীকে হত্যা করেছে। নিস্পাপ দুটি কন্যা সন্তানকে মাতৃহারা করেছে।

রোগীটি মুমূর্ষু হয়ে পড়লে এ হাসপাতালে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এমনকি কোন সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ের ডাক্তারও পাওয়া যায় নি। বহু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ডাক্তারদের নাম দিয়ে এ ইবনে সিনা হাসপাতালে সাইনবোর্ড লটকানো থাকলে, এ সব ডাক্তারদের দেখা নেই। এ হাসপাতালটি চিকিৎসার নামে কসাইখানা। চিকিৎসার নামে এ হাসপাতালে বিভিন্ন ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে। একটি কেবিন দিন প্রতি সাড়ে ৮ হাজার টাকা ভাড়া। প্রতিটা টেস্ট চড়া মুল্য ধরে ডিসকাউন্টের নাম প্রতারনা করে। এক ব্যাগ রক্ত ট্যানেসফারের নামে ২৬ হাজার টাকা বিল করেছে। ৪ দিন রুম ভাড়া, টেস্ট ও চিকিৎসার নামে লাখ লাখ টাকা বিল ধার্য করেছে। সন্ধা ৫ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত এ পাঁচ ঘন্টায় পুরো ইবনে সিনা হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার বাদে কোন একজন সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ের কোন ডাক্তারকে পাওয়া যায়নি বলে রোগীর আত্বীয় স্বজনরা অভিযোগ করেন। তাদের মতে এটা কোন হাসপাতাল না, টাকার লোভে এটা মানুষ হত্যার কারখানা।

এ হত্যাকান্ডের শত শত এলাকাবাসী হাসপাতালে ছুটে অাসে এবং এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠেন। এ হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে মিরপুর মডেল থানার একজন সাব ইন্সপেক্টর ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে, অামাদের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেন। এ ছাড়া গোয়েন্দা সংস্থা হত্যাকান্ডের বিষয় রাতেই তদন্ত পূর্বক তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেছেন।
রোগীর দেবর ওবায়দুল হক খান দাবী করেছেন, কল্যণপুর ইবনে সিনা হাসপাতাল টাকার লোভে তার ভাবীকে হত্যা করেছে। তিনি মাননীয়প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী,সহ অাইন প্রয়োগকারী সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।