সাইদুল ইসলাম মন্টু (বিশেষ প্রতিবেদক,বরিশাল):
পরিবারের আহাজারি আর হাজারো মানুষের ভালবাসায় বিদায় নেয়া ইউক্রেনে বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজে রকেট হামলায় নিহত প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফের জন্য বাড়ির মসজিদে প্রার্থনা হয়েছে। শুক্রবার (১৮ মার্চ) জুমাবাদ হাদীসের বাড়ীর মসজিদে শোকাহত বাবা আব্দুর রাজ্জাক, ভাই গোলাম মাওলানা প্রিন্স ও তরিকুল ইসলামসহ নিকটতম আত্মীয়স্বজনদের উপস্থিতে হাদীসের জন্য ক্ষমা প্রার্থনায় মিলাদ রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়ানুষ্ঠান পরিচালনাকারী মসজিদের পেশ ইমাম মালানা আব্দুল হামীদ ভাসানী। এসময় তাঁর বয়ানে বলেন, হাদীসুরের সহকর্মিদের ভাষ্যানুযায়ী তাঁর উপড় হামলার আগে জাহাজে বসেই আসরের আজান দিয়ে নামাজ পড়ে ছিলেন তিনি। কে জানতো এটাই ছিলো তার জীবণের শেষ নামাজ কিন্ত বাস্তবে তাই হয়েছে। জীবনের মৃত্যু অনিবার্য। সত্যটিকে ভুলে যাই আমরা। সৃস্টি কর্তার সাথে ওই কথোপকথন তাঁকে শামিল করেছে উপরওয়ালার প্রতি তিনি কতটুকু নিষ্ঠা এবং এটাই তার সাথে গভীর সম্পর্কের প্রতিচ্ছবি। সে কথাই মানুষকে জানান দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটা কোন মাহাত্ম্যর কথা নয়। আছরের সময়টা দোয়া কবুলের সময়। সকলের অজান্তে সৃষ্টিকর্তা হয়তোবা সেই সময়টাইকে বেছে নিয়ে তাঁকে কমিয়াব করেছেন। একাধিক আলেমে দ্বীনকে আসরের সময় তাদের শহীদ করা হয়েছে। সৃষ্টিকর্তার ফয়সালা যারা শহীদ করেছে, তারা এমন এক সময়কে বেছে নেয়।
বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের মহাপরিচালক ক্যাপ্টেন আমীর মো: আবু সুফিয়ান বলেন, হাদিসুরের এই মর্মান্তিক মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। ঘটনার দিন হাদিসুর রহমান আরিফ নিজেই আসরের আজান দিয়ে নামাজ আদায় করে জাহাজের ছাদে উঠে পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে এই দুর্ঘটনার শিকার হন। নিহত হাদিসুর মাদ্রাসা পড়ুয়া নয়, তবুও ধার্মিক, ভদ্র, বিনয়ী এবং সারাক্ষণ পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। পরিবারের পাশাপাশি হাদিসুরকে নিয়ে সেদিনকার ও আগের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এমন অনেক কথাই ব্যক্ত করলেন তিনি।
জলের মানুষ হাদীসুর উড়ে এলেন বাতাসে আর চলে গেছেন আকাশের তাঁরা হয়ে। হাদীসুরের শাহাদাতের এই মর্মান্তিক মৃত্যূর রোজ নামচা নিয়ে নানা ধরনের বিশ্লেষণ হচ্ছে। হাদিসুরকে যিনি জানাজা পড়িয়েছিলেন বেতাগী কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা জিয়াউল হক। তিনি বলেন, হাদীসুরের হকের সঠিকতার ফয়সালা ও সুবানাল্লাহতায়ালা তাঁকে জান্নাতবাসী করুন।