নিজস্ব প্রতিবেদক:
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর মালিকপক্ষ পরিকল্পিতভাবে বাস চলাচল রেখেছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। শনিবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে রাস্তায় কমে গেছে গণপরিবহন। আর এ সুযোগে যাত্রীদের কাছে ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা। কেউ ১০০ টাকার ভাড়া ১৫০ টাকা চাচ্ছেন, কেউবা ২০০ টাকা চাচ্ছেন।
জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও রিকশাভাড়ার খবর নিয়েছেন ঢাকা পোস্টের এই প্রতিবেদক।
জরুরি প্রয়োজনে যাত্রাবাড়ী থেকে বাড্ডায় অফিসে আসা আশিকুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, সাধারণত আমি গণপরিবহনে ঠেলাঠেলি করে উঠি না। সপ্তাহে দুই-তিনদিন অফিসে যাই সিএনজি কিংবা বাইকে করে করে। দুই সিএনজিচালক ৫০০ টাকা চাইলেন। গতকালও গিয়েছি ২৫০ টাকায়। নিয়মিত ভাড়া ২৫০-২৮০ টাকা। তারপরও ৫০০-৬০০ টাকা চাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেলের কাছে গেলাম। বাইকওয়ালা ভাড়া চাইলেন ৪০০ টাকা। অথচ ১৫০ থেকে ১৮০টাকা দিয়েই আসা যাওয়া করি। এরপর সিদ্ধান্ত নিলাম সিএনজি ও বাইকে চড়ব না। প্রায় ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলাম কিন্তু বাড্ডাগামী কোনো পরিবহনের দেখা পেলাম না। ২৫ মিনিট পর অনাবিল পরিবহনের একটি গাড়ি এলো। তাতেও ঠেলেঠুলে উঠার মতো অবস্থাও নেই। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত ৪০০ টাকায় একটি সিএনজি করে অফিসে এলাম।
একই ধরনের অভিযোগ করেন গুলিস্তান থেকে শাহজাদপুর আসা আনিসুল হক। তিনি সংবাদদাতাকে বলেন, প্রায় আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে গাড়ি না পেয়ে সিএনজি করে এসেছি। ১৫০ টাকার ভাড়া দিয়েছি ৪৫০ টাকা। এ দেশে বসবাস করা যাবে না। বসবাস অযোগ্য হয়ে গেছে। যে যার মতো লুটপাট করছে।
রামপুরা থেকে কুড়িলগামী যাত্রী আলী ইব্রাহিম সংবাদদাতাকে বলেন, বাসমালিকরা ভাড়া বাড়ানোর জন্য আজ অঘোষিতভাবে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন, তারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি ভাড়া আদায় করতে চাচ্ছেন।
কয়েক বছর ধরে ঢাকায় সিএনজি চালান পরান আহমেদ। ভাড়া দ্বিগুণ কেন— জানতে চাইলে তিনি মূল কথা এড়িয়ে বলেন, তেলের দাম বাড়ছে। ফিলিং স্টেশনগুলো থেকে এখন মাপেও কম দেয়। এ কারণে আমাদের আমাদের ভাড়া বাড়াতে হচ্ছে। ভাড়া বাড়ানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
শুক্রবার রাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৪ টাকা বাড়ায় সরকার। অকটেনের দাম বাড়ে ৪৬ টাকা, পেট্রোলের দাম বাড়ে ৪৪ টাকা। অর্থাৎ রাত ১২টার পর থেকে ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রোল ১৩০ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে।