স্টাফ রিপোর্টার: , আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ , আজকের সময় : শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট সংলগ্ন বাঁধ যানবাহনের নিয়ন্ত্রনে, লাঞ্চিত হচ্ছে যাত্রীরা-ঘটছে দুর্ঘটনা

সিরিয়ালের নামে চাঁদা, বেপরোয়া বোরাক ও মাহেন্দ্র চালকরা। ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে নিয়মিত এভাবেই চলছে যাত্রীদের চরম হয়রানী আর বেপারোয়া বোরাক, অটো আর মাহেন্দ্রের পার্কিংয়ের ফলে চরম ভোগন্তির শিকার সাধারন যাত্রীরাসহ নারী-পুরুষ সকলেই। সিরিয়ালের নামে উঠানো হচ্ছে হাজারো টাকা। নেই কোন তদারকি। প্রশাসন বলছেন দেখবো।

সরেজমিনে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে গিয়ে নজরে আসে যাত্রী হয়রানী আর বাঁধের উপর যানবাহন রাখার দৃশ্য। কথা বলার সাহস পর্যন্ত নেই কারোই। স্থানীয় ভাবে কিছু গাড়ির চালক আর চাঁদাবাজদের কারনে কতা বলার সুযোগ নেই। কিছু বলার আগেই তেরে আসে। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মান করা হলেও সেখানে এখন বিভিন্ন যানবাহনের স্ট্যান্ডে পরিনত হয়েছে। যে কারনে সাধারন যাত্রীদের লঞ্চ উঠা কিংবা লঞ্চ থেকে নামার কোন অবস্থা নেই।

গ্রীন লাইনে আসা যাত্রী রোকসানা বিবির কোলে ৩ মাসের সন্তান আর হাতে আড়াই থেকে ৩ বছরের আরেক সন্তান। লঞ্চ থেকে নেমে সে বাঁধে উঠবে সেই অবস্থা নেই। প্রবেশ পথ এবং পুরো বাঁধ অটো, বোরাক, মাহেন্দ্র আর মটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রনে। তার উপর চালকদের যাত্রী নেয়ার জন্য ধাক্কা ধাক্কিতে পড়ে গিয়ে অল্পতে রক্ষা কোলের শিশুর। হাটার মত কোন জায়গা ফাকা নেই বাঁধের উপর। মটরসাইকেল যাত্রী তুলে নিয়ে উঠতে গিয়েই পড় সময় রক্ষা অপর যাত্রীদের সহযোগীতায়। এরই একটু আগে একটি বোরাক বাঁধের উপর দিয়ে যাবার সময় উল্টে পড়ে একটু দোকানের উপর। এভাবে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে এই লঞ্চঘাট এলাকায়।

এদিকে লঞ্চে উঠবেন চরফ্যাশনের আব্দুল কাদের নামের এক বৃদ্ধ। তিনি হাতে ব্যাগ নিয়ে হেটে আসতে পারছে না বাঁধের উপর গাড়ী থাকার কারনে। চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বৃদ্ধ বলেন, দেশে কি কোন প্রশাসন নেই এসব অত্যাচার দেখার জন্য। পাশ থেকে ভোলা সদরের আব্দুল্লাহ মিয়া বলেন,আমি অসুস্থ্য ঢাকা যাব, অথচ পুরো বাঁধটি গাড়ীতে ঠাসা। পায়ে হাটার মত অবস্থা নেই্ ছেলের কাঁদে ভড় দিয়ে কোন মতে লঞ্চে উঠলেন আর বল্লেন,এটা কোন ব্যবস্থা। যাত্রীদের এভাবে হয়রানীর সিকার হতে হবে। একটি লঞ্চ আসলেই ঝাপিয়ে পড়ে আর চরম বেপারোয়া হয়ে উঠে এসব গাড়ীর চালকরা। যে যেভাবে পারছে যাত্রী এবং তাদের ব্যাগ নিয়ে টানা হেচরা করছে। অথচ পুলিশের এই লঞ্চঘাটে দ্বায়িত্ব থাকার কথা থাকলেও দেখা মিলেনি কারোই সাথে। শেষ সময় পরিবেশ কিছুটা শান্ত হলে ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কনেস্টবল মাসুদুর এর সাথে দেখা। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,কিছুই করার নেই। কেউ শোনে না কারোই কথা। লাইনম্যান রয়েছে তারাই সব নিযন্ত্রন করছে। প্রতিদিন দুর্গটনা,যাত্রী হযরানীর কথা সিকার করে বলেন,এসব ঘটনা আমরা আমাদের স্যারদের জানাই।

লঞ্চঘাটের দ্বায়িত্বে থাকা একজন বলেন, (নাম প্রকাশ করতে নিষেধ আছে) মাসুম আর মনির নামের দুজন আছে তারাই সিরিয়ানের নামে গাড়ী প্রতি ২০টাকা করে নিচ্ছে। যে কারনে কিছু বলা যাচ্ছে না। প্রতিদিন দূঘৃটনা ঘটলেও এবং যাত্রী হয়রানী আর লাঞ্চিত হলেও কিছুই করার থাকে না। তারা অবৈধ ভাবে টাকা তুলে আর যা ইচ্ছা তাই করছে। এদের কাছে সাধারন মানুষ জিম্মি। অথচ আগের মত রাস্তায় গাড়ী গুরো সিরিয়াল দিয়ে থাকলে যাত্রীরা সুন্দর ভাবে উঠা নামা করতে পাড়ে। একজন রুগী এ্যাম্বুরেন্সে আসলে তাকে ঘাটে আনা যায না। টাকা তোলার বিষয় অভিযুক্ত মো. মনির বলেন, আমি আর মাসুম দুইজনে টাকা তুলে থাকি। ২০ টাকা করে নেই, কেউ দেয় আবার কেউ দেয় না। আমরা সিরিয়ার করি। কোন বৈধতা বা ইজারা আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, কোন ইজারা নেই এমনি তুলি। আমরা দুইজনে ভাগ করে নেই। দুর্ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, এখন থেকে যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবো এবং মাঝখানে ফাকা রাখবো যাতে মানুষ চলাচল করতে পাড়ে। এদিকে ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আচ্ছা আমরা দেখছি কি করা যায়।