গত ২৪ ঘন্টায় রাজধানী ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরো কমে ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গতকাল রাজধানী ঢাকার সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিলো ১৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ গতকালের রেকর্ডকৃত সর্বনিম্ন তাপমাত্রার তুলনায় আজ ১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। আগামী দু’তিন দিন রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আরো কমে আসতে পারেও আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এছাড়া রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, দিনাজপুর, পঞ্চগড় অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিদ্যমান রয়েছে।
এদিকে, রাজধানীসহ সারাদেশে গত কয়েকদিনের তুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত কমে যাওয়ার ফলে তীব্র শীত ও প্রচন্ড ঘনকুয়াশায় চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজধানীসহ গোটা দেশের জনজীবন। এবারের শীত শুরুর পর গত ৭২ ঘন্টা রাজধানীতেও তুলনামূলকভাবে অনূভুত হচ্ছে কনকনে ঠান্ডা।
রাজধানীতেই প্রচন্ড কুয়াশা আর মৃদু বাতাসের ফলে শীতে তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জনজীবন একরকম স্থবির হয়ে পড়েছে। বিলম্বিত তীব্র শীত কাপুনি ধরিয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। তবে ছিন্নমূল, দিনমজুর ও নিন্মশ্রেণীর মানুষজনই দূর্ভোগ বেশি পোহাচ্ছেন। শীতের প্রভাবে কাজ-কর্ম অনেকটা কমে যাওয়ায় আয় রোজগার নিয়ে তাদের চরম দুশ্চিন্তা।
জরুরী প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে খুব কমই বাইরে বেরোতে দেখা গেছে। বিভিন্ন জায়গাতেই দিনে-রাতে শীতার্ত লোকজনের জড়োসড়ো হয়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের দৃশ্য চোখে পড়ছে। প্রতিদিনই বিকেল হলে শীতের তীব্রতা বেড়ে তা পর দিন দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে।
নগরীর বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাতে শীতের কাপড়ের ব্যবসা বেশ জমজমাট দেখা গেছে। রাজধানীর মিরপুরের বিভিন্ন ফুটপাত ভিত্তিক বাজারগুলোতে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের শীতবস্ত্র সংগ্রহের চিত্র চোখে পড়ার মতোই।
অপরদিকে, শীতের তীব্রতার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে দেশজুড়ে দেখা দিচ্ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগবালাই। জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ঠ ও ডায়ারিয়া রোগীর সংখ্যা কেবল বাড়ছেই। ঠাণ্ডা জনিত রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা।
আগামী দু’তিন দিন রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আরো কমতে পারে উল্লেখ করে আবহাওয়াবিদ মোঃ হামিদ মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে গেছে এবং গত কয়েকদিনে প্রতিদিনই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে রাজধানী ঢাকাসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগীয় অঞ্চলগুলোতে তীব্র আকার ধারণ করেছে শীত।
তিনি আরো বলেন, কয়েকদিন হলো দেশে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমছে। রাজধানীতে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ‘সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রার দূরত্ব যত কমবে শীতও ততই তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। তবে ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহীতে প্রতিদিনই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমছে বলে এই তিন বিভাগে শীতের তীব্রতা আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।’
তিনি আরো জানান, ‘গতকালের তুলনায় আজ রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। গতকাল রাজধানী ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। এ দিকে, আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।