মহান বিজয় দিবস আজ। বাঙালি জাতির হাজার বছরের বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম জানান দেওয়ার দিন। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।
দিসবটি উপলক্ষ্যে সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। এরপর আওয়ামী লীগসহ দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা জানান।
রাজধানী ছাড়াও সারা দেশে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
রাজশাহী প্রতিনিধি : স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রথম প্রহরে রাজশাহী কলেজের শহীদ মিনারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগ এবং কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকতের নেতৃত্বে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
জয়পুরহাট প্রতিনিধ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কর্মসূচির শুভ সূচনা হয়। এরপরই শহরের জয়পুরহাট শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে ‘৭১ ফুট উচ্চ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে’ প্রথম পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শরীফুল ইসলাম।
এরপর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাছুম আহাম্মদ ভূঞা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেটসহ একে একে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুরাতন স্টেডিয়ামে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৫০ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শহীদ স্মৃতি ফলকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে ডা. আ আ ম মেসাহুল হক বাচ্চু স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
বিজয় দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা। বাদ জোহর ও সুবিধামতো সময়ে জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে সব মসজিদ, মন্দির ও গীর্জায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে বিশেষ মোনাজাত।
সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে।
সকালে নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে ভিড়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শহীদদের প্রতি।
সিলেট প্রতিনিধি : সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথমেই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটি।