বরগুনা জেলার বেতাগীতে পিআইও ওয়ালিউল ইসলামের বিরুদ্ধে বাড়তি মূল্যে দরপত্র শিডিউল বিক্রি এবং অফিস খরচের নামে আরও অতিরিক্তসহ ১ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা বেশি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বরগুনা জেলা কার্যালয়সহ অন্য উপজেলায় দরপত্রে উল্লেখিত মূল্যে শিডিউল বিক্রি হলেও এখানে বিক্রি হয় বেশি দামে। অফিস খরচ ব্যতিরেকেও অতিরিক্ত দামে শিডিউল বিক্রি করা বাড়তি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করার পাঁয়তারা করে আসছেন। আর এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ঠিকাদারেরা।
জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় সারাদেশে চলমান ‘গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু-কালভার্ট নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের এ উপজেলায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের তিনটি সেতু-কালভার্ট নির্মাণের জন্য ১৪ জানুয়ারি দরপত্র আহবান করা হয়। প্রতিটি সেতু-কালভার্টের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮০ লাখ টাকা।
শিডিউল বিক্রির সময় ছিল গত রোববার বিকেল ৫টা আর জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিলো গত সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত। শিডিউল বিক্রিয়ের শেষ দিন পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের এ উপজেলা কার্যালয়ে ৩টি প্যাকেজে মোট ২১৮টি শিডিউল বিক্রি করা হয়। দরপত্র বাক্স খোলার পর মঙ্গলবার ( ১ ফ্রেরুয়ারি) সকাল থেকে চলমান রয়েছে শিডিউল বাছাই কাজ।
স্থানীয় একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেন, পিআইও জিএম ওয়ালিউল ইসলাম প্রতি প্যাকেজে ১ হাজার ৫ শত টাকার পরিবর্তে ২ হাজার টাকা এবং দরপত্রের প্রতি সেটে ৪ হাজার ৫ শত টাকার পরিবর্তে ৬ হাজার টাকা করে ১ লক্ষ ৯ হাজার টাকা আদায় করেন এবং শিডিউলের বাড়তি মূল্যের ছাড়াও অফিস খরচ হিসেবে ঠিকাদাদের কাছ থেকে আরও ২ শত টকা করে ৪৩ হাজার ৬০০ মোট ১ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা নেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার বলেন, অন্য স্থানে বেশি টাকা গুনতে হয়নি। বেতাগীতে শিডিউলের মূল্য বেশি দেখে আমি বরগুনা জেলা কার্যালয় থেকে দরপত্রের শিডিউল ক্রয় করি। জেলা কার্যালয় কোন অফিস খরচ ছাড়াই আমার কাছ থেকে ১ হাজার ৫ শত টাকাই রাখেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জিএম ওয়ালিউল ইসলাম জানান, ভুলক্রমে শিডিউলের দাম বেশি নেওয়া হয়েছে। এটা এখন আর কিছুই করার নেই। তবে টেন্ডার প্রক্রিয়া চ’ড়ান্ত হওয়ার পর ঠিকাদারেরা যখন প্রে-অর্ডার নিতে আসবেন, তখন তাদের বাড়তি টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, পিআই‘র বেশি দামে শিডিউল বিক্রির বিষয়টি সর্বত্রই জানা জানি হয়ে গেছে। আমিও জানতে পেরেছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা ত্রান ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান জানান, বিষয়টি আমি জানতে পেরে ঠিকাদারদের কাছ থেকে অতিরিক্ত আদায়কৃত টাকা পিআইওকে ফেরত দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।