বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৩:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
বেলা অবেলা : স্বপ্না রহমান ডিএসইসি’র নতুন সভাপতি ডিবিসি’র মুক্তাদির অনিক ডিএসইসি’র সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশের আলো’র জাওহার ইকবাল খান ডিএসইসি’র সাংগঠনিক সম্পাদক দৈনিক উত্তরদক্ষিণে’র শহীদ রানা ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের উপ-কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক হলেন প্রিয়ন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে গাঁজাসহ ২ যুবক গ্রেফতার কিশোরগঞ্জে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যলাইন বিতরণ ডিএসইসি’র প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাইজিং বিডির আরিফ আহমেদ কিশোরগঞ্জে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের র‍্যালি অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের হাওরে কৃষকদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের শরবত ও ঠান্ডা পানি বিতরণ

পুলিশ ভাবনা: নগরায়ন: এস.এম.আক্তারুজ্জামান, ডিআইজি বরিশাল রেঞ্জ

এস.এম আক্তারুজ্জামান: ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (ডিআইজি)
  • আপলোডের সময় : বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৫৮৭৫ বার পঠিত
এস.এম আক্তারুজ্জামান: ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (ডিআইজি)
পুলিশের চাকরিতে কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা তাদেরকে ভিন্ন আর্থ-সামাজিক রুপ দেয়। যেমন:
১। পুলিশ তার নিজ জেলায় চাকরি করতে পারেনা, এটা জেলা পুলিশের জন্য প্রযোজ্য। তবে, মেট্রোপলিটন এবং বিশেষায়িত পুলিশে সম্ভব। তাই, দেখা যায় জেলা পুলিশে জনবলের ঘাটতি, বদলি জনিত শুন্যতা। অন্যদিকে অন্য ইউনিটে জনবলের তুল্নামুলক আধিক্য। উদাহরন: পুলিশ একাডেমি সারদাতে সারদার লোকজন তাদের বাপের বাড়িতে থেকে চাকরি করার সুযোগ পায়। সবচেয়ে সুখী পুলিশ তারা।প্রাপ্যতার চেয়ে অনেক বেশি জনবল সারদা’য়।
২। পুলিশের চাকরিতে ঝুকি অনেক বেশি। পুলিশের বিভাগীয় শাস্তি এবং শাস্তিমুলক বদলি খুব কমন আতংক, বিশেষ করে জুনিয়র পর্যায়ে। যখন তখন যে কোন পচা শামুকে পুলিশের হাত-পা কেটে যায়, এসব শামুক ডিটেক্ট করা সর্বোচ্চ প্রযুক্তিতেও সম্ভব নয়।
৩। পুলিশ পরিবারকে সবচেয়ে কম সময় দেয়। তাদের সাধারন ছুটিও ছুটি না, অনুমতি ছুটি নিয়ে পরিবারের কাছে যেতে হয়।
৪। পুলিশের চাকরিতে থাকে পেশাগত চাপ এবং দুষন; এবং অনিয়মিত জীবন এবং আহার যার জন্য তারা ৪০ বছর বয়স পার হতে না হতেই নানান রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। আরো বৈশিষ্ট্য আছে, তা উল্লেখ না করলাম। তাই পুলিশ জানা এবং অজানা অনেক অনিরাপত্তা এবং শুন্যতা নিয়ে ঘুড়ে বেড়ায়। হয়ে যায় এক দুরন্ত যাযাবর।
বলতে পারেন, তাহলে “মাছের রাজা ইলিশ আর চাকরির রাজা পুলিশ” কেন?
প্রথমেই পুলিশ সাধারন থেকে আলাদা, মানে অসাধারন না হলেও ব্যাতিক্রম। গায়ে পোষাক, হাতে লাঠি, কোমড়ে অস্র এবং আচরনে কেমন জানি একটা ভাব। আর মানুষ ব্যাতিক্রম ভালবাসে।
আর, আমাদের সমাজে অনেক আইন-কানুন থাকলেও তার কমপ্লায়েন্স খুব কম, আদেশ-উপদেশ থাকলেও তার প্রতি আনুগত্য খুব খুব কম। তাই, মানুষ মনে করেন বা প্রত্যাশা করেন পুলিশ বল প্রয়োগে আইন প্রয়োগ করুক। অর্থাত, ট্রাফিক সিগনাল কেউ মানবেনা, পুলিশ রাস্তায় দাড়িয়ে ট্রাফিক আইন মানতে বাধ্য করুক। তাই, সবাই পুলিশ হতে চায় বা পুলিশের কাজ করতে চায়। এছাড়া পুলিশের উচ্চতা, গ্ল্যামার একটু বেশি থাকে।
পুলিশ তাদের গ্ল্যামার ধরে রাখতে এবং অনিরাপত্তা দুর করতে তারা যেখানে চাকরি করে সেখানের শহরে, বিভাগীয় শহরে, নগরে জমি কিনে এবং আস্তে আস্তে ইট গাথা শুরু করে। আর পুলিশ যেখানে জমি কিনে সেখানে অন্যরাও কিনে। তাতে ওখানে জমির মূল্য বাড়তে থাকে। আর শেয়ার ব্যাবসার মত ফেসভ্যালু বাড়তেই থাকে। এতে পুলিশের জমি হয়ে যায় মুল্যবান এবং গড়ে উঠে নগর। অনেক শহরের গোরাপত্তন হয়েছে পুলিশের বাড়ি, থানা, পুলিশ লাইনকে কেন্দ্র করে।
পুলিশ জমি কিনে বাড়ি করে নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত করে, তাদেরকে সময় দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে, গ্ল্যমার ধরে রাখে।অনেকে মনে করতে পারেন পুলিশ দুর্নীতি করে এসব করে। আমি দুর্নীতি কতটুকু করেছে বা না করেছে তা নিয়ে কথা বলব না, বলছি তাদের বিনিয়োগ চিন্তা নিয়ে।
তবে, এই বিনিয়োগের সাইড ইফেক্ট আছে। পুলিশের ছেলে-মেয়েরা বাবা-মায়ের আদর, স্নেহ, শাসন কম পায়, চাকরিতে পিছিয়ে পড়ে। মানুষ কম হয়। জমি কিনতে, বাড়ি করতে লোন করতে হয়, অনেক পরিশ্রম এবং ধান্দা করতে হয়। একজন পুলিশের ভাই বা বোন সরকারি চাকরি করার সম্ভাবনা ৬০% কিন্তু তাদের ছেলে মেয়ের খেত্রে ১০% এর কম। অর্থাৎ, পুলিশ তাদের ভাই-বোন’কে দেয় চাকরি, আর ছেলেমেয়েদেরকে দেয় জমি/বাড়ি।

তাই, পুলিশের নগরায়ণ প্রক্রিয়া অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বেগবান করলেও তাদের পরবর্তী বংশধর সেবা খাত থেকে হয় বঞ্চিত। তাই পুলিশের প্রতি রইল সমব্যাদনা এবং অভিনন্দন।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..