মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০১:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ডিএসইসি’র নতুন সভাপতি ডিবিসি’র মুক্তাদির অনিক ডিএসইসি’র সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশের আলো’র জাওহার ইকবাল খান ডিএসইসি’র সাংগঠনিক সম্পাদক দৈনিক উত্তরদক্ষিণে’র শহীদ রানা ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের উপ-কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক হলেন প্রিয়ন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে গাঁজাসহ ২ যুবক গ্রেফতার কিশোরগঞ্জে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যলাইন বিতরণ ডিএসইসি’র প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাইজিং বিডির আরিফ আহমেদ কিশোরগঞ্জে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের র‍্যালি অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের হাওরে কৃষকদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের শরবত ও ঠান্ডা পানি বিতরণ ডিএসইসি’র সভাপতি অনিক সম্পাদক জাওহার ইকবাল

বিসিবি ও ডিএসএ র দ্বন্দ্বে বলির পাঠা বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম

এনামুল হক রাঙ্গা (বগুড়া প্রতিনিধি):
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩
  • ৫৮২৪ বার পঠিত
বিসিবি ও ডিএসএ র দ্বন্দ্বে বলির পাঠা বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম।  এক সিদ্ধান্তেই বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের সকল কর্তৃত্ব ছেড়ে দিলো বিসিবি।
এদিকে আন্তর্জাতিক ভেন্যু বাতিলের প্রতিবাদে বগুড়ায়  প্রতিদিনই হচ্ছে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ।
হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানতে গিয়ে উঠে এসেছে বিসিবি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার (ডিএসএ) পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। এসব পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিপরীতে জেলার ক্রীড়ামোদীরা আক্ষেপ ঝাড়ছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের উপর। এতদিন রাজনৈতিক কারণে আন্তর্জাতিক খেলা থেকে বঞ্চিত ছিল বগুড়াবাসী। এখন দুই সংস্থার অন্তর্দ্বন্দ্বে দেশের সেরা শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামটি হারাতে বসেছেন বগুড়ার ক্রীড়ামোদীরা।

আরও অভিযোগ আছে, জেলা ক্রীড়া সংস্থা নিজেদের ইচ্ছামতো ব্যবহার করার জন্যই দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে বিসিবির সিদ্ধান্ত একের পর এক অমান্য করে আসছে।যার ফলে বিসিবি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত বুধবার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে নিজেদের ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রত্যাহার করার বিষয়ে নির্দেশ দেয় বিসিবি। তাদেরকে বিসিবির দেয়া মালামাল ঢাকাস্থ মিরপুর স্টেডিয়ামে পাঠিয়ে দিতে বলা হয়।

পরের দিন বৃহস্পতিবার বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম হস্তান্তর প্রসঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে বিসিবি এক চিঠি প্রদান করে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিগত কয়েক বছর ধরে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অসহযোগীতার কারণে বিসিবি কর্তৃক কোনো টুর্নামেন্ট, লীগ আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে উক্ত স্টেডিয়ামের রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ কারণে এই ভেন্যুর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্য স্থানে বদলি করা হয়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা জানি ২০০৭ সালে বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ভেন্যু থেকে বাতিল করে আইসিসি। এর পর থেকে বিসিবি নিজেদের লোকবল রেখে তাদের খেলা পরিচালনা করত। কিন্তু ১৬ বছরেও বিসিবি এখানকার কোনো উন্নয়ন, সংস্কার বা আন্তর্জাতিক মানের খেলা দিতে পারেনি। এ জন্য জেলা ক্রীড়া সংস্থা বিসিবির অসহযোগীতাকেই মূল কারণ বলে উল্লেখ করেছে।

কিন্তু দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ম্যাচ না হওয়ায় স্টেডিয়ামের জৌলুস ফিকে হয়ে গেছে। সবগুলো গ্যালারিতে জমেছে শ্যাওলা। প্লাস্টিক চেয়ারগুলোয় ফাটল ধরেছে। ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে ২১ কোটি টাকায় বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে একটি আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে (ফ্লাড-লাইটসহ) উন্নীত করা হয়। স্টেডিয়ামে চার টাওয়ারে ১০০টি করে মোট ৪০০ ফ্লাড-লাইট রয়েছে। এই লাইটগুলো ৮ লাখ ওয়াট বিদ্যুতের আলো সরবরাহ করতে পারে। আন্তর্জাতিক খেলা বন্ধের পরে ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে একবার ফ্লাডলাইটগুলো জ্বালানো হয়েছিল।

এরপর সেগুলো আর জ্বলেনি। এর মধ্যে কোনো লাইট নষ্ট রয়েছে কিনা তাও বলতে পারেনি স্টেডিয়ামের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা। দূর থেকে দেখা যায় লাইটের সুইচ বক্সগুলো ফাঁকা পড়ে আছে।

সদ্য বদলি হওয়া ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিল জানান, এই স্টেডিয়ামের উইকেট দেশের মধ্যে সেরা ও অন্যন্য।আন্তর্জাতিক খেলা না হলেও আজও বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে দেশের সেরা উইকেট হিসেবে ধরা হয়।

জাতীয় টিমের ও বিদেশি অনেক খেলোয়াড় এই উইকেটের প্রশংসা করে। মাঠটিতে অন্য কোনো খেলা হলে আইসিসি আইন অনুযায়ী আর হয়তো কখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাওয়া যাবে না।
এই মাঠ যত্নের জন্য বিসিবি প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিত। আর প্রতি মাসে গড়ে সোয়া লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় , জেলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে বিসিবির দ্বন্দ্ব বেশ কয়েক বছর ধরে। বিসিবির আয়োজিত বিভাগীয় টিমের খেলাসহ বিভিন্ন প্র্যাকটিস ম্যাচে বাধা দিয়ে আসছিল ডিএসএ। এমনকি খেলোয়াড়রা এলেও তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে এসব বিষয় নিয়ে সরাসরি কেউ মুখ খোলেনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলার চার জন খেলোয়ার জানান, অভিযোগ আছে- গত বছর ইয়ুথ চ্যাম্পিয়ন লীগের প্র্যাকটিস ম্যাচ করতে এসেছিল ক্রিকেটাররা। কিন্তু মাঠে নামার আগেই তাদের পাঠিয়ে দেয়া হয়। এবারও ইয়ুথ চ্যাম্পিয়ন লীগের কেউ বগুড়ায় আসেনি।

বগুড়া ডিএসএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বলেন, এখানে যেটা হয়েছে, সেটা হলো দুই সংস্থার মান-অভিমান। কিন্তু মান-অভিমান থেকে কোনোদিন ভালো কিছু হয় না। আমি ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়ে কথা বলেছি। আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গেও কথা হয়েছে। আশ্বাস দিয়েছেন এটা নিয়ে ঢাকায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন।

অপরদিকে, বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের সকল মালামাল বিসিবির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে পাঠানো হয়েছে। এমন সংবাদ প্রকাশ হবার পরে বগুড়ায় ডিএসএ, বর্তমান ও সাবেক ক্রীড়ামোদি সহ সামাজিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
প্রতিদিনই শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় প্রতিবাদ কর্মসুচী পালিত হচ্ছে।  গতকাল বগুড়াবাসীর ব্যানারে জেলা ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ক্রীড়া সংস্থার অন্যতম নেতা সুলতান মাহমুদ খান রনির নেতৃত্বে বগুড়ার সকল শ্রেনী পেশার মানুষের সমন্বয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
তারই ধারাবাহিকতায় আজকে সাতমাথায় রুমেল নামের এক যুবক কাফনের কাপড় পড়ে ভেন্যু বাতিলের প্রতিবাদে আমরন অনশন পালন করছে।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..