একটি দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে নারীর অংশ গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী। এ বিবেচনায় নারী উন্নয়নে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর আওতায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়িত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির মধ্যে ভিজিডি কর্মসূচি অন্যতম।
এছাড়া দরিদ্র, অশিক্ষা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য শিক্ষা সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞানের অভাব, স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের সীমিত সুযোগ ইত্যাদি হচ্ছে নারীর পিছিয়ে পড়ার অন্যতম মূল কারণ। আর এই কারণসমূহ দেশের মানব উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি বড় বাধাস্বরূপ। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্ঠি/পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করার জন্য বাংলাদেশ সরকার বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে থাকে।
গ্রামীণ মহিলাদের সামাজিক সুরক্ষা ও দরিদ্র অবস্থার উন্নয়নে দুঃস্থ মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচি সরকারের সর্ববৃহৎ সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি। এ কর্মসূচীর উদ্দেশ্য হলো দরিদ্র পীড়িত এবং দুঃস্থ গ্রামীণ মহিলাদেরকে খাদ্য সহায়তা প্রদান।
ভিজিডি কর্মসূচি একটি জাতীয় কর্মসূচি, যার ব্যাপ্তি সমগ্র বাংলাদেশে। বাংলাদেশ সরকার খাদ্য সম্পদের যোগান দিচ্ছে। খাদ্য সম্পদের পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থার (NGO) মাধ্যমে উন্নয়ন প্যাকেজ (প্রশিক্ষণ, ঋণ ইত্যাদি) সেবায় অর্থায়ন করছে।
ভিজিডি কর্মসূচি, বাংলাদেশের গ্রামীণ দুঃস্থ মহিলাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাস্তবায়িত একটি বৃহত্তর সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি (A safety net programme with development orientation ) যেটি সম্পূর্ণরূপে আর্থ-সামাজিকভাবে দুঃস্থ পরিবার বিশেষত: মহিলাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে। মহিলারা ওয়ার্ড-ভিত্তিক ক্ষুদ্র দলের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ ভিজিডি কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত হয়। ভিজিডি মহিলারা প্রশিক্ষণ প্যাকেজ (প্রশিক্ষণ, সঞ্চয়, ঋণ) সেবা গ্রহণের পাশাপাশি ২৪ (চবিবশ) মাস ধরে মাসিক ৩০ কিলোগ্রাম গম/ চাল খাদ্য সহায়তা পেয়ে থাকে।
এই দ্বারা বাহিকতায় বেতাগীর বিবিচিনি ইউনিয়নে অসহায়দের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তা গোপন রেখে স্বজনপ্রীতি মাধ্যমে বৃত্তবান চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দলীয় লোকদের কে দেওয়া হচ্ছে সেই চাল।
গত ২৫ সে মার্চ ২০২৩ রোজ শনিবার সরকারি সকল অফিস বন্ধ থাকলেও প্রশাসনের সকল নির্দেশ অমান্য করে বেতাগী উপজেলা ১নং বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদে বসে বিজিডিতে অন্তর্ভুক্ত থাকা ভুক্তভোগীদের সরকারি তালিকা গোপন রেখে মেম্বারদের দলীয় লোক ও পরিষদের কিছু দালাল,কামলাদের নামে নতুন মাস্টার রুল তৈরি করে তাদের মাঝে বিতরণ করছেন সেই চাল। আর সরকারি তালিকায় নাম থাকা প্রভাশালীদের অর্ধেক অথার্ত ৬০ কেজির পরিবর্তে ৩০ কেজি করে দিচ্ছে।
ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডের বাসিন্দা অসহায় রোজলিন সরকার ডিনা বলেন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমাদের গত দুই মাসে ৬০ কেজি চাল দেওয়া কথা কিন্তু সকালে পরিষদে চাল আনতে গিয়ে আমাদের মেম্বার আমাকে ৩০ কেজির একটি বস্তা ধরিয়ে দিয়ে বলেন এটা নিয়ে যাও বাকি চাল অন্য একজনকে দেওয়া হবে।
তখন আমি বলি দুই মাসে তো ৬০ কেজি পাবো তখন মেম্বার বলেন এটা নিলে নেও না হলে এটাও পাবে না। নাজমা আক্তার নামে এক ভুক্তভোগী বলেন আমার নাম তালিকায় থাকলেও চাল আনতে গেলে মেম্বার বলেন তোকে চাল দেওয়া হবে না তোর নাম তো আমি দেই নি কে দিছে তার কাছথেকে চাল নিয়ে আয়। তখন নাজমা বলেন আমার নাম ইউএনও সুপারিশ করেছে তাই হয়েছে। মেম্বার মজিবর বলেন তাহলে ইউএনও কাছে গিয়ে চাল আন।
৬ নং ওয়ার্ডে তালিকায় নাম রয়েছে ইউপি সদস্যের ভাই এর নামসহ একাদিক বৃত্তবানদের নাম।
একই অভিযোগ ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ রুহুল আমিন কালন এর বিরুদ্ধে তিনি বিজিডিতে নাম দেওয়া কথা বলে ৩-৫ হাজার টাকা করে নিয়েছে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পনেরো থেকে বিশ জনে ভুক্তভোগী পরিবার বলেন কালন মেম্বার এর বড় বড় আত্মীয় রয়েছে টাকা দিয়েছি কিন্তু নাম হয়নি এখন টাকা ফেরত আনতে গেলে তো মাইর খাবো।
আমরা অসহায় হয়ে পরেছি আপনারা তো সাংবাদিক আমাদের জন্য কিছু একটা করুন। ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার শাহাবুউদ্দিন জসিম এর বিরুদ্ধে রয়েছে একই অভিযোগ তিনি ও একাদিক ভুক্তভোগী পরিবার থেকে নিয়েছেন টাকা।
অসহায় বিমল চন্দ্র শীলের কাছ থেকে ৪ চার হাজার দুইশত টাকা নিয়েছেন বিজিডি কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে কিন্তু ২৫ মার্চ চাল দেওয়া কথা শুনে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে মেম্বার বলেন তোমার নাম তো হয় নি অন্য ভাবে তোমাকে চাল খাওয়াবো। কাউকে কিছু বলার দরকার নেই। ভিজিডিতে নাম পাওয়া ইউনিয়নের একাদিক পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে যানা যায় তাদের সবাইকে কম বেশি টাকা দিতে হয়েছে বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারদের।
এ বিষয় জানতে মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ মজিবর রহমান খন্দকার এর কাছে জানতে তার মোবাইল ফোনে একাদিক বার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায় নি।
৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ শাহাবুদ্দিন জসিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক কথা শুনে মোবাইল কেটে দেন।
৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ রুহুল আমিন কালন বলেন আমার নির্বাচনের সময় তো টাকা দিতেই হবে তাহলে এখন কিছু টাকা খাইলে দোষ কি।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ নওয়াব হোসেন নয়ন বলেন অনেকের নাম তালিকায় আসে নাই আমরা সবাইকে সমন্বয় করে দেওয়ার চেস্টা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সুহৃদ সালেহীন বলেন আজকে তো অফিস বন্ধ আর বন্ধের দিনে তো চাল দেওয়া কথা না আর যাদের নাম সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে শুধু তারাই চাল পাবে যদি কোন মেম্বার বা চেয়ারম্যান তা ভাগ করে অন্য কাউকে দেন সেটা অপরাধ। তবে ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।