কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা ৩নং ধলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য/সদস্যাগণের বিরুদ্ধে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের ভালনারেবল উইমেন বেনেফিট (ভিডব্লিউবি) কার্যক্রমের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার ধলা ইউনিয়নের ধলা গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের আলী হায়দার মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ভিডাব্লিউ কার্যক্রমের আওতায় ১ জানুয়ারী ২০২৩ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ চক্রের ভিডাব্লিউ উপকারভোগীদের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্রণালয়ের সচিব বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ধলা ইউনিয়নের ভিডব্লিউবি এর তালিকার প্রায় ৪০-৫০ জন্য পরিবারই সচ্চল ও ধনী পরিবার। তাছাড়া ধলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্যের স্ত্রীর নামও এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ধলা ইউনিয়নে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জন্য ১৮৮টি ভিডব্লিউবি উপকারভোগীদের কার্ড বরাদ্দ দেয়া হয়।
ভিডব্লিউবি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কর্মক্ষম অসচ্ছল, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও স্বামী পরিত্যক্তা নারী আছে এবং কোনো উপার্জনক্ষম সদস্য অথবা অন্য কোন স্থায়ী/নিয়মিত আয়ের উৎস নেই এমন পরিবার এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে। কোনো অবস্থাতাতেই সচ্ছল, পাকা বাড়ির মালিকের স্ত্রীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের একজন ইউপি সদস্য, একজন মহিলা ইউপি সদস্য, একজন এনজিও প্রতিনিধি এবং একজন শিক্ষক মিলে গ্রামে ঘুরে প্রাথমিক তালিকা করে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে দেবেন। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সদস্যর একটি কমিটি তালিকা যাচাই-বাছাই করে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে অনুমোদনের জন্য পাঠাবেন।
এই নির্দেশিকা না মেনে উপজেলার ধলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য/সদস্যাগণ ভিডব্লিউবি তালিকায় কর্মক্ষম অসচ্ছল, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীদের পরিবর্তে খোদ ইউপি সদস্যর স্ত্রীর নাম, সচ্ছল, পাকা বাড়ির মালিকের স্ত্রীর নাম, তাদের আত্মীয় স্বজনের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নারীরা ইতি মধ্যে খাদ্যশস্যও পেয়েছেন।
উপজেলার ধলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আফরোজ আলম ঝিনুক বলেন, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জন্য ১৮৮টি ভিডব্লিউবি উপকারভোগীদের কার্ড বরাদ্দ দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যগণদেরকে নিজ নিজ এলাকার কর্মক্ষম অসচ্ছল, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত ও স্বামী পরিত্যক্তা নারী আছে এবং কোনো উপার্জনক্ষম সদস্য অথবা অন্য কোন স্থায়ী/নিয়মিত আয়ের উৎস নেই এমন নাম যাচাই-বাছাই করে তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। প্রত্যেকেই নির্দেশিকা মেনে নিজ নিজ ওয়ার্ডের অসচ্ছল পরিবারের নাম তালিকায় দেয় বলে জানান।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা সুলতানা বলেন, তালিকা অনুমোদনের সময় আমরা পর্যাপ্ত সময় না পাওয়ায় মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয়নি। তবে এ ধরনের অনিয়ম হলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।