সাব্বির আলম বাবু (নিজস্ব প্রতিবেদক): , আপলোডের সময় : শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ , আজকের সময় : সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

ভোলায় নারীরা সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নে একধাপ এগিয়ে…

ভোলায় নারীরা সফল উদ্যেক্তা হওয়ার স্বপ্নে একধাপ এগিয়ে গেলো। নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে নারীরা আজ আর কোন অংশেই পিছিয়ে নেই।

ঘরের বন্ধী অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে সরকারি- বেসরকারি চাকুরির পাশাপাশি বড় বড় উদ্যোক্তাও হচ্ছেন নারীরা। তেমনি ইবি টেক্সের প্রশিক্ষণ পেয়ে ভোলা জেলার তজুমদ্দিন উপজেলার ৩০জন নারী উদ্যোক্তা হওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

নারীরা জানান সরকারি-বেসরকারি সহযোগীতা পেলে তারা পৌছতে পারবেন তাদের অভীষ্ট লক্ষে। সুত্রে জানা যায়, মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোষ্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট কম্পোনেন্ট-৩ এর অর্থায়নে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের বাস্তবায়নে ইবি টেক্সের মাধ্যমে ২০২২সালের নভেম্বর মাস থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল “সুইং মেশিন অপারেশন” প্রশিক্ষণ শুরু করেন তজুমদ্দিনে। জেলে পরিবারের যুব-যুবতীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন এসডিএফ। তাদের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৩০ নারী এসডিএফের পরামর্শে ও ইবি টেক্সের সহযোগিতা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে ৩০জন “মেঘনা ক্রিয়েটিভ এন্টারপ্রাইজ” নামে তজুমদ্দিনে একটি মিনি গার্মেন্টস্ চালু করেন। গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত তজুমদ্দিনে ২শত জন যুব মহিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

যার মধ্য ১শত ৫২ জনের অধিক যুব মহিলা বিভিন্ন গার্মেন্টস ইন্ডাষ্ট্রিজ ও আত্নকর্মসংস্থানে নিয়োজিত রয়েছে বলে জানা যায়। আগামী ঈদকে সামনে রেখে পাড় করছেন এসব নারীরা কর্ম ব্যস্ত সময়। তারা মনে করেন এসডিএফ ও ইবি টেক্সের সহাযোগিতা পেলে ভোলার পোশাকের চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন আঞ্চলে তাদের তৈরী পোশাকের মার্কেট সৃষ্টি করতে পারবেন। জানতে চাইলে উদ্যোক্তাদের মধ্যে টুম্পা রাণী দাস বলেন, আমরা এসডিএফের সহযোগীতায় সেলাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এখন টিশার্ট, প্লাজু, টাউজার, পায়জামাসহ বিভিন্ন পোশাক তৈরি করতে পারি। আমরা সরকারী-বেসরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে আমাদের ছোট গার্মেন্টসটি একদিন বড় প্রতিষ্ঠানে পরিনত হবে। পাশাপাশি এসডিএফ ও ইবি টেক্সের সহায়তায় পেলে আমরা ভোলা, বরিশাল ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমাদের তৈরী পোশাকের বাজার সৃষ্টি করতে পারবো। একদিন এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে আমরা অবদান রাখতে পারবো।

এসডিএফের তজুমদ্দিন ক্লাস্টার অফিসার এম এ কাদের বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরাধীন সাসটেইনেবল কোস্টাল কম্পোনেন্ট-৩ কর্তৃক বাস্তবায়িত সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ইবি টেক্সের মাধ্যমে সেলাই প্রশিক্ষণ শিখে ৩০ জন নারী মেঘনা ক্রিয়েটিভ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। চালুর পর গত ৩ মাসে উদ্যোক্তারা স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী টি-শার্ট ১ হাজার ৬শত পিচ, ফতুয়া ৬ শত পিচ, পায়জামা ৭শত পিচ, প্লাজু/পায়জামা ৮ শত পিচ ও বালিশেন কভার ৪শত পিচ তৈরী করে বাজারজাত করেন। তিনি আরো বলেন, এসডিএফ ও ইবি টেক্সের কারিগরি সহায়তা পেলে প্রতিষ্ঠানটি একদিন ভোলার বুকে বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্ন প্রকাশ করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

তজুমদ্দিন মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা মো. আল-আমিন বলেন, সমুদ্র সম্পদের সঠিক ব্যবহার ও উপকূলের মৎস্যজীবী গোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য মাননীয় প্রধনমন্ত্রীর নেয়া সময় উপযোগী ও বিশেষ প্রকল্প “সাসটেইনেবল কোস্টাল ও মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট” যা মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের অর্থায়নে কম্পনেন্ট ৩ এর মাধ্যমে জেলে পরিবারের যুব-যুবতীদের উপযোগী করে তোলার লক্ষ্য বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

যার ফলশ্রুতিতে (এসসিএমএফ) প্রকল্পের অর্থায়নে এসডিএফের সহযোগিতায় ইবি টেক্সের মাধ্যমে সুইং মেশিন অপারেশন প্রোগ্রাম থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ৩০ জন নারী সদস্য “মেঘনা ক্রিয়েটিভ এন্টারপ্রাইজ” নামে মিনি গার্মেন্টস চালুর মাধ্যমে নিজেদের উদ্যেক্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন। আমি এ প্রকল্পের একজন অফিসার হিসাবে সব সময় পরামর্শ ও সহযোগিতার মাধ্যমে এ প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। আমি মনে করি শুধুমাত্র প্রকল্প চলাকালীন সময়ে নয়, প্রকল্প সমাপ্তির পরেও যদি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দক্ষ লোকবলের সম্পৃক্ততা বজায় রাখা ও প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা প্রদান করলে ভোলার জেলে সম্প্রদায়ের আগামী প্রজন্ম হয়ে উঠবে স্মার্ট ও কর্মদক্ষ সাথে সাথে ভোলা হয়ে উঠবে শিল্প প্রতিষ্ঠানের তীর্থস্থান।’