মনজুর মোরশেদ তুহিন (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: , আপলোডের সময় : শনিবার, ১৭ জুন, ২০২৩ , আজকের সময় : বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪

পরীক্ষায় বেশি নম্বর দেয়ার কথা বলে টাকা আদায়ের অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মাধবপুর নিশিকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাকটিকাল পরিক্ষায় বেশি মার্কস দেওয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও, পরিক্ষা চলাকালীন সময় টাকা তোলার একটি ভিডিও ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একটি পরিক্ষা কেন্দ্রের কক্ষে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলছেন এক শিক্ষক। আর অন্য শিক্ষক সাথে দাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে ইশারা করে কিছু বলছে। ধারণা করা যায়, তিনিও হয়তো টাকা নেওয়ার বিষয়ে কিছু বুঝাচ্ছে। এছাড়াও, এসময় শিক্ষার্থীদের লেখা বাদ দিয়ে শিক্ষকদের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ওই পরিক্ষা কেন্দ্রটি উপজেলার নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং উপজেলার মাধবপুর নিশিকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের এসএসসি পরিক্ষার্থীরা এ সময় লিখিতেছিল। আর টাকা উঠানো ওই শিক্ষকরা হলেন- একই উপজেলার মাধবপুর নিশিকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের শিক্ষক মোঃ ফারুক হোসেন ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক বঙ্কিম চন্দ্র।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, ফারুক স্যার এবং বঙ্কিম স্যার আমাদের কাছ থেকে পরিক্ষার হলে বসে প্রাকটিকাল পরিক্ষায় বেশি মার্কস দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। প্রথমে আমরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা বলেন; তোমরা টাকা না দিলে পর্যাপ্ত মার্কস পাবা না। তাই আমরা টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি। এসময় আমরা ২০০-৩০০ (দুইশো থেকে তিনশো) টাকা করে প্রত্যেকে দিয়েছি।
অভিযুক্ত শিক্ষক বঙ্কিম চন্দ্র ও ফারুক হোসেন জানান, আমরা ছাত্রদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নিয়েছি। টাকাটা উঠিয়ে আমরা নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষককে দিয়েছি। তিনি ওখানে হল সুপারের দ্বায়িত্বে ছিলেন। তবে, এগুলো সবই আমরা প্রধান শিক্ষককে জানিয়েই করেছি।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বক্তব্যকে অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিলন মিয়া বলেন, টাকা-পয়সা উঠানোর বিষয়ে আমি পরে শুনেছি। এ বিষয়ে আমাকে অবগত করে কিছু করা হয়নি।
এছাড়াও, নওমালা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক (ওই পরিক্ষায় দ্বায়িত্বে থাকা হল সুপার) মোঃ জুলহাস জানান, আমাদের কাছে কেউ কোনো টাকা দেয়নি এবং আমি এ বিষয়ে কিছু জানিওনা। তিনি আরও বলেন, মার্কস বেশি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়া বা হলের ভিতরে টাকা তোলা আইন বহির্ভূত। এরকম হয়ে থাকলে আসলেই দুঃখজনক বিষয়।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহা: মুজিবুর রহমান জানান; বিষয়টি শুনলাম এবং ভিডিও ফুটেজ দেখলাম, এটি খুবই দুঃখজনক। যেখানে হলে পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে ডাক দিয়ে কথা বলা নিষেধ, সেখানে টাকা উঠানোর কোনো সুযোগ নেই। সাংবাদিকের অন্যত্র প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষা অফিসার আরও জানান, ছাত্রদের প্রাকটিকাল পরিক্ষায় মার্কস বেশি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে ৩ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব চেয়েছি। এরপরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।