মনজুর মোরশেদ তুহিন (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০২৩ , আজকের সময় : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম

পটুয়াখালী সদর উপজেলার ২ নং বদরপুর শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারী অত্র বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন নৈশপ্রহরী মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমান মানিক মিয়া সহ ১১ জন সদস্যের সর্বসম্মতিক্রমে গত ০৫/০২/২০ ইং তারিখ নৈশপ্রহরী পদে খন্ডকালীন নিয়োগ প্রধান করা হয়। অতঃপর সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ পত্রের আশ্বাস দেয়া হয়।সেমতে চলতি মাস পর্যন্ত বিনা বেতনে বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করে আসছেন। হঠাৎ গত ০২/০৫/২৩ ইং তারিখ জানতে পারে নৈশপ্রহরী পদে লোক নিয়োগ করা হবে। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সাথে যোগাযোগ করলে তাকে নিয়োগ দেয়া হবে না বলে জানায়। এছাড়াও তার কাছে ৬ লক্ষ টাকা দাবি করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরোধ লাল বৈদ্য। তিনি আরও বলেন, খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ১৩/০৪/২৩ ইং তারিখ স্থানীয় “দৈনিক পটুয়াখালী” নামের পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে তবে বিদ্যালয়ের কোন নোটিশ বোর্ডে না টানিয়ে  গোপন রাখা হয়েছে। পেপার বিজ্ঞপ্তি গোপন রেখে ক্ষমতার অপব্যবহার ও মোটা অংকের অর্থ গ্রহন করে বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে নৈশপ্রহরী নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। অবৈধ নিয়োগ বন্ধ ও সু-বিচারের জন্য গত ০৩/০৫/২৩ ইং তারিখ পটুয়াখালী  বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন বর্তমান খন্ডকালীন নৈশপ্রহরী মোঃ মিজানুর রহমান। মামলা নং-২৬৫/২৩.
মামলায় বিবাদী প্রধান শিক্ষক নিরোধ লাল বৈদ্য ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইদুর রহমান মুক্তা মিয়াকে বিজ্ঞ আদালত ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। এতে বিবাদীগন আদালতে এসে কারন দর্শানোর জন্য সময় প্রার্থনা করেন। নিয়োগ স্থগিত আদেশের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রার্থনা করেন বাদী পক্ষ। এমতাবস্থায় জানাগেছে গত ০৭/০৭/২৩ ইং তারিখ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।
এবিষয়ে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আকমল হোসেন খাঁন বলেন, বিধিমোতাবেক সকল নিয়মকানুন মেনে গত শুক্রবার ৭’জুলাই পটুয়াখালী সরকারি জুবলি উচ্চ বিদ্যালয়ে  নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। আমি জেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশনা পেয়ে কমিটির প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র পেয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলাম। সেখানে নিয়োগে আবেদনকারীরা উপস্থিত ছিলেন। তবে মামলার বিষয়ে আমি অবগত না এব্যাপারে বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান বিষয়টি আমার জানা নেই বলে জানান।
নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত সরকারি জুবলি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন জানান, মামলার বিষয়ে আদালতের নোটিশ থাকলে সেটা জেনেশুনে নিয়োগ প্রদান করার কোন সুযোগ নেই। তবে বিষয়টি আমার জানা নেই নোটিশ কপি যারা পেয়েছে তারাও আমাকে কিছু বলেননি।এরকম হলে কার্যক্রম স্থগিত থাকবে বলে জানান।
এব্যাপারে বদরপুর শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরোধ লাল বৈদ্য এর কাছে জানতে চাইলে তাকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত পাওয়া যায়নি এমনকি তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইদুর রহমান মুক্তা মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি।মামলার বিবাদীকে নিয়োগে আবেদন করতে বলেছি তার কাগজপত্র নেই তাই সে আবেদন করেনি। কেন সে আদালতে মামলা করেছে জানিনা। তবে এর পেছনে কোন ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা রয়েছে। আমরা মামলায় বিবাদী হয়েছি বাদী স্থগিত আদেশ চেয়েছে সেটা এখনও কার্যকর হয়নি। এক্ষেত্রে আমাদের নিয়োগ কাজ সম্পন্ন করার কোন বাঁধা নেই। আগামী ১৭’তারিখ শুনানির দিন আমরা আদালতে জবাব দিবো।
অভিযোগের সত্যতা জানতে ঘটনাস্থলে  গিয়ে জানা যায়  বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ এর বিষয়টি অত্র বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষকের জানা নেই। তারা শুনেছে বর্তমান নৈশপ্রহরী একটি মামলা করেছে। তবে বিগত দিনে মিজানুর রহমান কে নৈশপ্রহরী পদে খন্ডকালীন নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে এখনও চাকরি করছে বলে জানান নিয়োকালীন সময়ে ম্যানেজিং কমিটির দুই শিক্ষক।
এবিষয়ে আইনগত কোন বাঁধা রয়েছে কিনা জানতে বিজ্ঞ আইনজীবীর নিকট জানতে চাইলে, তিনি বলেন, যেহেতু নিয়োগের বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে,বাদী পক্ষ বিজ্ঞ আদালতের কাছে নিয়োগ স্থগিত আদেশের প্রার্থনা জানিয়েছেন এবং বিবাদী কারন দর্শানোর জন্য সময় প্রার্থনা করেন। এছাড়া মামলায় আগামী ১৭’জুলাই শুনানি তারিখ ধার্য করা হয়েছে এর মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা কখনোই আইনগতভাবে বৈধ নয়।