সাইদুল ইসলাম মন্টু (বিশেষ প্রতিবেদক, বরিশাল): , আপলোডের সময় : শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩ , আজকের সময় : শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

বেতাগীর বিষখালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন: ১ জনকে অর্থদন্ড

বরগুনার বেতাগীতে বিষখালী নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদীর তীরে গড়ে ওঠা বেতাগী পৌর শহর ও আশেপাশের গ্রামের পর গ্রাম নদীতেই ভাঙছে। ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে ইতোমধ্যে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে শত শত পরিবার। স্থানীয় বাসিন্দাদের এমনটি অভিযোগ দীর্ঘদিরে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনের বেলা প্রকাশ্যে তো আছেই, তবে সন্ধ্যা নামলেই বিষখালী নদীতে ড্রেজার নামিয়ে বালু উত্তোলনের প্রতিযোগিতা আরও বেড়ে যায়। এ উপজেলার বিষকালী নদীর মোহনায় কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫টি ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছেন প্রভাবশালীরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে বালু উত্তোলনের চিত্র দেখা গেছে। এসময় সাংবাদিকদের ক্যামেরা দেখে বালু উত্তোলন বন্ধ করে গাঁ ঢাকা দেয় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা।

নদী তীরের একাধিক বাসিন্দারা আভিযোগ করেন, ড্রেজার মেশিন দিয়ে বিষখালী নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে প্রকাশ্যে। কখনো কখনো দিনে লুকোচুরি করলেও, রাতে প্রকাশ্যে চলছে ড্রেজার মেশিন। চোখের সামনে মানুষের সহায়-সম্পত্তি বিষখালী নদীতে বিলীন হতে দেখেও বালু ব্যবসায়ীরা তাদের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকছে না। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও দর্ঘিদিন ধরে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে আসছে এখানকার বাসিন্দারা। পরিবেশ রক্ষা ও জনস্বার্খে এতে সাড়া দেয় বেতাগী উপজেলা প্রশাসন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে উপজেলার বিষখালী নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে মনির হোসেন (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আহমেদ এই অর্থদন্ড দেন। অভিযানে বেতাগী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসা. মাহমুদা খানম ও বেতাগী সদর ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আবুল বাশার উপস্থিত ছিলেন। এসময় বেতাগী থানার পুলিশ তাদের সহযোগিতা করেন।

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বিষখালী নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এক বালু ব্যবসায়ীকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এধরনের আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহনে ভাঙন কবলিত এ এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো। পরিবেশ রক্ষায় অবৈধ ড্রেজার মালিক ও বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। নদী থেকে যাতে কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিপনন করতে না পারে সেজন্য আগামীতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উত্তর বেতাগী গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বাড়ি-ঘর সব নদীতে বিলিন হয়ে গেছে শুধু ড্রেজার দিয়ে বালু কাটায়। নদীতে তেমন ঢেউ নেই, স্রোতও আগের তুলনায় কম এরপরেও নদী ভাঙছে তা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ এসব দেখছেন না? ‘ইতোমধ্যে নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প হাতে নেওয়াহলেও কাজ শুরু হচ্ছেনা। একমাত্র অবৈধভাবে ভাঙন এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করাতেই নদী ভাঙছে। প্রশাসনের এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। কারণ এটা প্রতিরোধ করা না হলে নদী ভাঙতেই থাকবে।’