বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আঘাত করেছিল গত মঙ্গলবার। এর প্রভাবে সারা দেশেই চলছে বৃষ্টিপাত। মানিকগঞ্জেও বুধবার মধ্যরাত থেকেই চলছে বিরতিহীন বৃষ্টি। এই বৃষ্টির প্রভাবে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। অসময়ে বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক।
উপজেলায় সরিষাসহ অন্যান্য রবি শস্যের মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। টানা বৃষ্টির কারণে দুর্গম চরাঞ্চলসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সদ্য বেড়ে উঠা সরিষা গাছগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে। অনেক এলাকার কিছু কিছু জমিতে নব্য ফোটা সরিষার ফুলও ঝরে পরেছে। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছে উপজেলার শতশত কৃষক। তবে কৃষি অফিস বলছে মৃদু বৃষ্টিতে মাটির রসের জন্য উপকারী হবে। ভারী বৃষ্টি হলে ব্যাপক ক্ষতি হবে।
কৃষকরা জানান, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি দীর্ঘ সময় চলতে থাকলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। সরিষার গাছগুলো বৃষ্টির কারণে নুয়ে পড়েছে। ফুল ও ফল নষ্ট হতে পারে। এদিকে সরিষা ফুলকে কেন্দ্র করে মধুচাষেও পড়েছে বিপর্যয়। মধুচাষিরাও রয়েছে ক্ষতির আশঙ্কায়।
আজিমনগর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের চাষী লতিফ পাল বলেন, আমি এবছর ২০০ শতাংশ জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। অসময়ে বৃষ্টির ফলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। আজও যদি বৃষ্টি থাকে তাহলে যে জমিতে ফুল এসেছে সেই জমির ফুল গুলো নষ্ট হয়ে যাবে। যদি রোদ উঠে তাহলে ক্ষতি কম হবে।
একই এলাকার শহিদ বেপারী বলেন, আমি এবছর ১৫০ শতাংশ জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। বৃষ্টি হওয়ায় অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। সরিষা গাছগুলো বৃষ্টির জন্য পরে গেছে।
উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ডেগিরচর গ্রামের শেখ মাসুম বলেন , “বৃষ্টিতে সরিষা ক্ষেতের অধিকাংশ সরিষা গাছই মাটিতে শুয়ে পরেছে এবং ক্ষেতে পানিও জমে গেছে। এর ফলে এবছর সরিষার মারাত্মকভাবে ক্ষতি হবে।”
গালা ইউনিয়নের আলমদী গ্রামের মোবারক আলী জানান, “আমি দুই বিঘা সরিষার চাষ করছি। কিন্তু বৃষ্টির কারণ গাছগুলো শুয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষেতে পানি ও জমে গেছে। গাছ উঠে দাঁড়াতে না পারলে গাছ পচে যাবে।”
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, ‘হরিরামপুর উপজেলায় এ বছর ১১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। মাটিতে রসের কিছুটা অভাব ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চলমান বৃষ্টিতে সরিষা, ভুট্টা, পেয়াজসহ কিছু ফসলের জন্য উপকারী হবে। তবে যদি এই বৃষ্টির প্রভাবে মাঠে পানি জমে যায় তাহলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাঠে আমাদের কর্মীরা ফসলের খোঁজখবর নিচ্ছেন। তারা তথ্য সংগ্রহ করছেন। কোথাও কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা এখনো দেখছি না।