আনোয়ার হোসাইন জুয়েল, তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: , আপলোডের সময় : শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ , আজকের সময় : সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

শীতের সবজিতে ভরপুর তাড়াইল- দামে কিছুটা স্বস্তি

বিভিন্ন ধরনের শীতের সবজিতে ভরে উঠেছে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার প্রতিটি বাজার । প্রায় সব প্রকার সবজির দাম কিছুটা কমেছে। খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে সবজির দাম এখন ভোক্তার নাগালের মধ্যে। মাসখানেক আগের চেয়ে বেশ কম দামেই সবজি পাওয়া যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (০৭ ডিসেম্বর) সরজমিনে উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে ভোক্তাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, শীত মৌসুমে সবজির দাম আরও কম থাকার কথা। তবে সবজির দাম কমলেও চাল ও চিনির মতো অনেক নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামে সীমাহীন কষ্টে স্বল্প আয়ের মানুষ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্যের দর ওঠানামার বিষয়টি নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে, সে জন্য দাম রয়েছে ক্রেতাদের নাগালেই।

তাড়াইল সদর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শিম, বেগুন, করলাসহ বেশ কয়েকটি সবজি ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। ফুলকপি পিস কেনা যাচ্ছে ৪০ টাকা করে। কাঁচামরিচের কেজি ৮০ টাকা। টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা।তবে আলুর দাম এখনো কমেনি। দুই মাস আগে সরকার খুচরা পর্যায়ে আলুর কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা বেঁধে দিলেও তা কার্যকর হয়নি। অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে সরকার বাজার তদারকি ও আমদানির উদ্যোগ নেয়। ভারত থেকে আলু আমদানির পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি বাজার। খুচরা পর্যায়ে এখনো পুরাতন আলু ৭০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে। যেখানে এক বছর আগে আলুর কেজি ছিল ২২ থেকে ২৫ টাকা। নতুন আলু ১২০ টাকা, ডায়মন্ড আলু ৮০ টাকা।

অন্যদিকে পেঁয়াজ ১১০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, আদা ২০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, হলুদ ২৪০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, লাউ প্রতি পিচ ৭০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, ঝিংগা ৭০টাকা, কাকরুল ৮০টাকা, শসা ৩০ টাকা, লতা ৬০টাকা, পেঁপে ৪০টাকা, মুহি ৫০ টাকা, গাজর ৬০টাকা, জলপাই ৪০টাকা, লেবু কেজি ৪০ টাকা, ধনিয়া পাতা ১০০টাকা, প‌টল ৬০ টাকা কেজি। চাল কেজি প্রতি কাটারি ৬০ টাকা, ইন্ডিয়ান ৭০ টাকা, নাজির শাইল ৬০ টাকা, বিআর২৮- ৬০ টাকা, বিআর ২৯- ৫৫ টাকা, কাটা চাল ৪০ টাকা, আতব ৪৬ টাকা, পোলাও ৮০ টাকা। প্যাকেটজাত আটা ৫৫ টাকা, মুশুরির ডাল ১১০ টাকা, ছোলার ডাল ৮০ টাকা, মুগের ডাল ১৬০ টাকা, ডিম ৪০ টাকা হালি, তেল ১৬৯ টাকা লিটার এবং খোলা তেল ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মাংসের বাজারে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগী প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, কক ৩০০ টাকা, লেয়ার কক ২৮০ টাকা, ক্লাসিক ২৬০ টাকা, কালার বাট ২৫০ টাকা, গরুর মাংস ৬০০ টাকা, খাসি ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের বাজারে আগের তুলনায় তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি।

বাজার করতে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, সবজি ছাড়া অন্য সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম উর্ধ্বমুখি। বাজার করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এভাবে সকল পণ্যের দাম বাড়তে থাকলে আমরা যারা নিম্ন আয় ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক তাদের বাজার কিনে খেয়ে বেঁচে থাকার মতো অবস্থা নেই। তারা আরো বলেন, গরু ও খাশির মাংসের কাছে তো অনেক আগে থেকেই ঘেষা যাচ্ছে না। মধ্যবিত্তের মাংসের খাবার বলতে ব্রয়লার মুরগী তারও দাম বেড়ে গেছে। ফলে এক-দুই মাসের মধ্যে মুরগীর মাংসও কিনতে পারছি না। সবকিছু আমাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বাজার করতে আসা হাবিবুর রহমান সহ আরো অনেকেই বলেন, আমাদের দুর্দশার শেষ নেই। আয় বাড়েনি অথচ সবকিছুর দাম উর্ধ্বমূখী। মাছ, মাংসের বাজারেও আগুন। দ্রব্যমূল্যের এতো দাম যে, যা কিনতে বাজারে আসছি তার কিছু কিনেছি আর বাকিগুলো না কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

উপজেলা সদরের কাচা বাজার ব্যবসায়ী হুমায়ুন আহমাদ সহ আরো অনেকেই বলেন, বর্তমানে কাঁচা বাজারের সবজি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম একটু কম।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মৌখিক নির্দেশ দিয়েছি যে, সরকার নির্ধারিত দামে সকল পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য। তাছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাজার মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।