বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ-এর আহ্বানে এবারও তিনদিনব্যপী কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে ইসলাহী ইজতেমা শুরু হয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) আম জনতা ও আলেম উলামার মিলনমেলা তিনদিনব্যপী এ ইসলাহী ইজতেমায় জুমআর নামাজে ইসলাহী আলোচনা করেন, আওলাদে রাসুল সায়্যিদ আফ্ফান মানসুর পুরী দামাত বারাকাতুহুম। জুমআর নামাজে অংশগ্রহণ করেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব, কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল-করিমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু। বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ-এর খলিফা, তোলাবা, ভক্ত ও অনুসারীরা এ ইজতেমায় অংশ নিয়ে থাকেন। সমগ্র কিশোরগঞ্জ ছাড়াও দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ এ ইজতেমায় অংশ নেন। ইজতেমাটি আগামী রবিবার (২৮ জানুয়ারি) আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
সরজমিন দেখা যায়, তাড়াইলে ইসলাহী ইজতেমা মাঠের চারপাশে দিগন্ত বিস্তৃত হাওর, মধ্যখানে সবুজের মাখামাখিতে গড়ে ওঠা শান্ত নিবিড় একটি গ্রাম ইছাপশর-বেলংকা। নামটিই বলে দিচ্ছে কোনো এক সময় সনাতনী ধর্মের খুব প্রভাব ছিলো এই অজপাড়া গাঁয়ে। হ্যাঁ, দেড় যুগ আগেও এখানকার মানুষ ছিলো হিন্দুয়ানী নানান কুসংস্কারে জর্জরিত। ধর্মকর্মের বালাই ছিলো না। হাওরের মাঝে এক চিলতে ধান খেতের সাথেই কেটে যেতো তাদের সকাল সন্ধ্যা। দেড়যুগ পরে এসে সেই মানুষগুলোর মাঝে আজ ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। ধর্মের প্রতি জন্মেছে অগাধ টান। এই হাওরের কূল ঘেষেই আজ গড়ে উঠেছে একটি দাওরায়ে হাদীস মাদরাসা (জামিয়াতুল ইসলাহ আল-মাদানিয়া)। চলছে দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনত। এক যুগ ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইসলাহী ইজতেমা। যার বদৌলতে অন্ধকার যুগ পেরিয়ে সেই গ্রামটি এখন আলোর মোহনায়। ঘরে ঘরে তৈরী হয়েছে আলেম, হাফেজ ও ক্বারী সাহেবানদের মিছিল। মানুষকে এক আল্লাহর পথে আসার আহ্বান ও রাসূলের মতাদর্শ অনুযায়ী জীবনকে পরিচালনা করা এবং মানুষের নৈতিক উন্নয়নের দাওয়াত নিয়ে বিগত বছরগুলোর মতো এবারও আওলাদে রাসূল হজরত ফিদায়ে মিল্লাত আসাদ মাদানি (রহ.)-এর খলিফা আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের আহ্বানেই কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে তিনদিনব্যপী শুরু হয়েছে এ ইসলাহী ইজতেমা।
ইজতেমায় দেশ বিদেশের উলামা-মাশায়েখরা দিনভর কুরআন-হাদীসের আলোকে বয়ান ও মাঠের আমলের মাধ্যমে আগত ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীদের দ্বীনের দাওয়াত প্রচার করেন। তিনদিনব্যাপী ইজতেমার বিভিন্ন পর্বে ইসলাহী বয়ান, আম বয়ান, বিশেষ বয়ান, কোরআন তালিম ও তেলাওয়াত, জিকির ও দরূদের আমলসহ ধারাবাহিক আত্মোন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন আগত মুসল্লিরা।