বিডি পিপলস নিউজ ডেস্ক: , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ , আজকের সময় : সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

বেতাগীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে আওয়ামীলীগে বিভক্তির আশঙ্কা

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বেতাগীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির পটভূমি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া খ্যাত বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এবিএম গোলাম কবির ও সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান ফোরকানের নেতৃত্ব শান্তি পূর্ণ ও সংগঠিতভাবে চলছিলো।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে শেষ হওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবং দলীয় মনোনয়ন চাওয়া কে কেন্দ্র করে দলের ভিতরে আওয়ামী নেতৃত্বের মাঝে ফাটল সৃষ্টি হয়ছে তার প্রভাব আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃণমূল রাজনীতিতে পরতে পারে। দলীয় সুত্র মতে, দলের বিভক্ত বিষয় প্রকাশ্যে না থাকলেও চাপা উত্তেজনা বিরাজমান । দলীয় প্রতীক না থাকায় প্রতিদ্বাতীতাপূর্ন নির্বাচন যেমন হতে পারে তেমনি রাজনৈতি দল গুলোর একাধিক প্রার্থী থাকায় আওয়ামী লীগের মধ্যে বিশৃঙ্খল অবস্থার সম্মুখীন হতে পারে।

বেতাগী উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নতুন কমিটি না থাকায় সংগঠিত হতে পারছে না। বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে উপজেলা যুবলীগের একাধিক গ্রুপিং লক্ষ্য করা গেছে এর মধ্যে যুবলীগের সভাপতি প্রভাষক জহিরুল ইসলাম লিটন, অন্যদিকে একসাথে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন ফরাজি, রুবেল সিকদার, পৌর যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান সিকদার, যুব লীগের সদস্য মনিরুজ্জামান হাওলাদারের নেতৃত্ব।

যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মহসিনের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ, উপজেলা ছাএলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা জামান শামীমের নেতৃত্বেসহ মোট চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে কমসূচি পালন করতে দেখা গেছে। বেতাগী উপজেলা যুবলীগের নতুন কমিটি না থাকায় নির্বাচনে শৃঙ্খলা বিগ্নিত হতে পারে। দীর্ঘ দিন উপজেলা যুবলীগের নতুন কমিটি না দেয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দের প্রতি ক্ষোপ বেড়েই চলছে।

এবারের উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকা এবং প্রতীক না থাকায় নির্বাচনে তৃনমূলে বিভক্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে হ্যাভিওয়েট অনেক নেতার পাশাপাশি আছে সাধারণ প্রার্থীও । বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওমীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ৫ বারের ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদু রহমান ফোরকান এগিয়ে আছেন ঠিকই তবে সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলা আওয়ামী বিভক্তি লক্ষ্য করা গেছে। দলের একটি অংশ তার বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যায় । অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ তা কীভাবে মোকাবিলা করবেন সেটাই দেখার বিষয়।

দলীয় প্রতীক না থাকা এবং আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রভাবে এই নির্বাচনের ফলাফলে সরাসরি প্রভাব পরতে পারে। সাবেক বেতাগী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র শাহজাহান কবির নির্বাচনে অংশ নিলে ভোটের সমীকরণ আরও জটিল হবে। বর্তমানে মাকসুদুর রহমান ফোরকানের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বিএনপির সাবেক সভাপতি ও পৌর মেয়র শাহজাহান কবির কে মনে করে তৃনমুলের সাধারণ মানুষ। তবে তার দল বিএনপির নির্দেশনা কি আসতে পারে বা আদৌ তিনি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেন কি না ? বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শেষ মূহুর্তে সরে দারানোয় তিনি ব্যাপকভাবে সমালোচনার মধ্যে পরেন।

আরো যারা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসাবে প্রচারনা চালাচ্ছেন তাদের মধ্যে। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসনাবাদ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান খান। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচারনা চালিয়ে অংশ গ্রহন না করায় দলীয় নেতাকর্মীদের সমালোচনায় পরেন তিনি। এই নির্বাচনেও তার অংশ গ্রহনের বিষয়ে আশঙ্কা থেকেই যায়। বর্তমানে তিনি হোসনাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের পদ ছেরে এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেন কি না সেটাও দেখার বিষয়।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে, বেতাগী উপজেলা আওয়ামী সাবেক সভাপতি( ভারপ্রাপ্ত ) গাজী নফিজুর রহমান ( চুন্নু), সরিষামুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ শরীফ, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম ডিলার, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আমিনুল ইসলাম শিপন, সাবেক বরগুনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নাহিদ মাহমুদ লিটু, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারিয়া সংগ্রাম আমিনুলের নাম শোনা যাচ্ছে ।

অন্যদিকে, সদ্য শেষ হওয়া সংসদ নির্বাচনে বরগুনা -২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের শক্ত দাবিদার ছিলেন বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও , সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং দুই বারের জননন্দীত পৌরমেয়র এবিএম গোলাম কবির। সেই সময় দলীয় ঐক্যের স্বার্থে বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিতসভা ডাকা হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবিএম গোলাম কবির কে সমর্থন দেয়। তবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়ার আগে কিছু শীর্ষ নেতা বর্ধিত সভার কথা রাখেন নি। এ নিয়ে গোলাম কবিরের সমর্থকদের মাঝে ক্ষোপ বিরাজ করছে। যার প্রভাব এই নির্বাচনে পরতে পারে।

এই নির্বাচনে, আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম গোলাম কবিরের ভূমিকা নিয়েও আছে জল্পনা কল্পনা। বর্তমান এমপি নাদিরা সুলতানা বা জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি ফারজানা সবুর রুমকির ভূমিকা কি হবে। তারা সরাসরি কোন প্রার্থীর পক্ষে থাকবেন কি না বা এ বিষয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা কি হতে পারে হত্যাদি বিষয়গুলো ফালাফল নির্ধারনে সরাসরি প্রভাব বিস্তার করবে।