দেশের উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর সদর পৌরসভা এখন পর্যটন স্পট। ২ লক্ষাধিক মানুষ বসবাসকারী এই শহরের প্রবেশ দ্বার চৌরাস্তা থেকে শুরু করে পূর্ব দিকে প্রায় চার কিলোমিটার পথ এবং এর আশে পাশের রাস্তাগুলোর মনোরম দৃশ্য যে কারো হৃদয় লাগার মতো। প্রথম দর্শনেই মনে হবে যেন চলে এসেছি স্বপ্নের নগরে।
১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া পটুয়াখালী পৌরসভা এক সময় দেশের মানুষের কাছে ছিল দুর্গম অঞ্চল। নদীবেষ্টিত এ শহরে মানুষের চলাচলের পথ তেমন সুগম ছিল না। অতি প্রয়োজন ছাড়া পৌর শহরে বসবাস করার তেমন কোন আকর্ষণই ছিল না মানুষের মধ্যে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় বর্তমানে পটুয়াখালী পৌর শহরের চিত্র এখন তার বিপরীত। নিয়মিত বসবাসকারী ছাড়াও এই শহরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর দূরান্ত থেকে প্রতিদিন চলে আসে হাজার হাজার দর্শনার্থী। এসবের কারিগর তরুণ,রুচিশীল ও উন্নয়নের রুপকার বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ। সর্বশেষ তিন বছরের মধ্যেই জরাজীর্ণ এই শহরকে রূপান্তরিত করেছে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক নগরীতে। রুচিশীল এ মেয়রের প্রশংসা ছড়িয়ে গেছে দেশ থেকে দেশান্তরে। পটুয়াখালী শহরের উন্নয়ন ও আধুনিকতা এখন সারাদেশের মানুষের মুখে মুখে।
শহরের প্রবেশদার থেকে প্রশস্ত একটি চার লেনের রাস্তা গিয়ে শেষ হয় শেখ রাসেল শিশু পার্ক পর্যন্ত। রাস্তার ডিভাইডারের ল্যাম্প পোস্ট এবং দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ এবং বৃক্ষ চোখে পড়ার মতো। প্রশস্ত রাস্তার পরও উভয় পাশে পথচারীদের চলাফেরার জন্য রয়েছে আরো দুটি প্রশস্ত পথ। পৌর শহরের অভ্যন্তরে রয়েছে ঝাউতলা, পলিটেকনিক লেক,পুরাতন জেলখানা লেক, শেখ রাসেল শিশু পার্ক এবং নতুন সংযোজন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহীদ মিনার সহ আরো অনেক চোখ জুড়ানো স্থান। আর এসবের সব কিছুতেই যেন আধুনিকতার ছোঁয়া। দিনের চেয়ে রাতের রঙিন পটুয়াখালী আরও রোমাঞ্চকর ও দৃষ্টিনন্দন ।
দেখা যায়, প্রায় সময়ই কুয়াকাটা ভ্রমণকারীরা বাস,মাইক্রোবাস, মটরবাইক নিয়ে শহরের মধ্যে প্রবেশ করে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটিয়ে যায়। কেউ কেউ প্রস্তুত করা খাবার নিয়ে রাতের শহরের মনোরম পরিবেশে আলোকসজ্জার ভিতরে রাতের খাবার শেষ করে আড্ডা দিয়ে গন্তব্যে চলে যায়। দূরদূরান্ত থেকে নববিবাহিত দম্পতিরা রোমাঞ্চকর সময় কাটাতে ও ছবি তুলতে চলে আসে এই রূপনগরে। কেউবা আবার সপরিবারে, বন্ধুবান্ধবরা দল বেঁধে মুখরিত করে রাখে এই শহর।
ভ্রমণকারীদের কারণেই ভাগ্য ফিরেছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। চমৎকার ডিজাইন ও রং বে-রংয়ের টং দোকান, ফুচকা, চটপটি, আচার, চকলেট, কিংবা উন্নত মানের খাবারের দোকানে লেগে থাকে সব সময় ভিড়।দর্শনার্থীদের আনাগোনার কারণেই শহরের অটোরিক্সা চালকদের বেড়েছে উপার্জন। মোটকথা আধুনিক নগর হওয়ার কারণেই সকল ব্যবসায়ীদের ফিরেছে ভাগ্যের চাকা।
কিছুদিন পূর্বে পটুয়াখালী পৌর শহরে ঘুরতে আসা সকলের সুপরিচিত ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন এমপি উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, পটুয়াখালীর আধুনিকতা থেকে দেশের প্রতিটি জেলার জনপ্রতিনিধিরা শিক্ষা নিতে পারে। ইচ্ছা ও পরিকল্পনা থাকলেই একজন জনপ্রতিনিধি একটি জনপদকে পরিবর্তন করে দিতে পারে। উন্নয়নের জন্য টাকার দরকার হয় না, দরকার চিন্তা শক্তি।
পটুয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ হাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমান মেয়রের আধুনিক নগরী করার পরিকল্পনা সুদূরপ্রসারী। আমাদের সৌভাগ্য আমরা একজন স্বপ্নবাজ মেয়র পেয়েছি।
বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, পটুয়াখালী পৌরসভাকে নিয়ে আমি অনেক বড় স্বপ্ন দেখি। পটুয়াখালী পৌরসভা হবে দেশের সবচেয়ে আধুনিক নগরী। বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে অভিজ্ঞতা ও পরিকল্পনা সঞ্চয় করে আমি আমার শহরে এটাকে কাজে লাগাতে চাই। আরেকবার মেয়র নির্বাচিত হলে আমি আমার সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারব।