নিজস্ব প্রতিবেদক: , আপলোডের সময় : বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ , আজকের সময় : মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪

ঝালকাঠিতে ট্রাক, অটোরিকশা ও প্রাইভেট কারের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত

ঝালকাঠিতে ট্রাক, অটোরিকশা ও প্রাইভেট কারের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে ৬ জন, ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ৬ জন এবং বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবাচিম) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২ জন।
আজ বুধবার দুপুরে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির গাবখান সেতু এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘাতক ট্রাকের চালক ও হেলপারকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মী শিহাব উদ্দিন বাসসকে একথা নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় আরও প্রায় ১৪ জন আহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিটের   কর্মীরা উদ্ধারকাজ শুরু করে।
আহতদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ঘাতক ট্রাকটিকে জব্দ করেছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিদের প্রত্যেক পরিবারকে ৫ লাখ টাকা, পঙ্গুত্ববরণকারীদের তিন লাখ টাকা ও আহতদের এক লাখ টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম। ঘটনার পর প্রায় একঘন্টা সড়কে সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার  মোহাম্মদ  আফরুজুল হক টুটুল  জানান, বরিশাল বিয়ে বাড়িতে  যাচ্ছিল একটি প্রাইভেটকার। অপর তিনটি অটোরিকশা কাঠালিয়া থেকে  ঝালকাঠি শহরে  যাচ্ছিল।
প্রাইভেট কার ও তিনটি অটোরিকশা দুপুর ২ টার দিকে গাবখান টোলপ্লাজায় টোল দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। এসময় দ্রুতগতিতে আসা একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক প্রাইভেটকার ও অটোরিকশাগুলোকে চাপা দেয়। এতে দুমড়ে মুচড়ে যায় প্রাইভেটকার ও অটোরিকশাগুলো। ঘটনাস্থলেই মারা যায় অটোরিকশার ৬ যাত্রী। পরে প্রাইভেটকার থেকে আরো ৮ যাত্রীকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ৮ জনের মৃত্যু হয়। নিহত ১৪ জনের মধ্যে ৪ জন শিশু, ৩ জন নারী ও ৭ জন পুরুষ। নিহতদের বাড়ি রাজাপুর, ভান্ডারিয়া ও কাঠালিয়া উপজেলায়।
হাসপাতাল ও পুলিশ  সুত্রে নিহত যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন,  রাজাপুর উপজেলার সাংগর গ্রামের বারেক হাওলাদারের  মেয়ে নাহিদা আক্তার (২৭), জামাতা হাসিবুর রহমান (৩২),  সন্তান তাকিয়া (সাড়ে ৪ বছর), তাহমিদ (৮ মাস), সদ্য বিবাহিত কন্যা নিপা (২২) জামাতা বিমান বাহিনীর সদস্য ইমরান হোসেন (২৬), গাবখানের সেলিম হাওলাদারের পুত্র নজরুল (৩৫), ওস্তাখান গ্রামের মান্নান মাঝির ছেলে শফিকুল মাঝি (৫০),  ঝালকাঠির শেখেরহাটের নওপাড়ার আব্দুল হাকিমের ছেলে আতিকুর রহমান সাদি (১১), কাঠালিয়ার তালগাছিয়ার ইব্রাহিমের মেয়ে নুরজাহান (৭),  স্ত্রী তাহমিনা (২৫), রাজাপুরের উত্তর সাউথপুরের হাসিবুর রহমানের স্ত্রী সনিয়া বেগম (৩০),  স্বরূপকাঠির রুহুল আমীন ও  টোল প্লাজার সামনের  ভিক্ষুক শহিদুল ইসলাম (৪৫)।
ঝালকাঠি থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা এখন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে লাশের সুরতহাল তৈরি করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কাজ করছি। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে এবং প্রত্যাক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে মামলা দায়ের করা হবে।
এই ঘটনায় ট্রাকের চালক ও হেলপারকে আটক করেছে ঝালকাঠি ডিবি পুলিশ। ঘটনার ৩ ঘন্টার মধ্যে অভিযান চালিয়ে  শহরের বাসন্ডা গ্রাম থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক চালকের নাম মো. আল-আমিন (২৯) তার বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলায় তার বাবার নাম আনসার উদ্দিন। আটক হেলপারের নাম নাজমুল (২২) তার বাড়ি খুলনায়।