মো: রায়হান চৌধুরী, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ , আপলোডের সময় : শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৪ , আজকের সময় : শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪

মুরাদনগরে আন্দোলনে শহীদ সাব্বিরের পরিবারকে ঘড় নিমার্ণ করে দিলেন কায়কোবাদ

মো: রায়হান চৌধুরী, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত স্কুল ছাত্র সাব্বিরের অসহায় পরিবারের পাশে দাড়ালেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের জননন্দিত নেতা সাবেক মন্ত্রী ও পাঁচবারের সাবেক সাংসদ কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ। গুলিতে শহীদ কিশোর আমিরুল ইসলাম সাব্বিরের পরিবারের অসহায়ত্বের কথা শুনে সুদুর তুরস্ক থেকে নেতাকর্মীদের মাধ্যমে পরিবারটিকে নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদান ও বসবাসের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন তিনি।

শুক্রবার বিকেলে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাধ্যমে সাব্বিরের মায়ের হাতে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা তুলে দেন এবং তাদের বসবাসের জন্য একটা ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এছাড়াও আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহত হওয়া মুরাদনগরের ৭জন শহীদ পরিবারকে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা করে মোট তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা ও সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে উপজেলার সকল শহীদ পরিবারের পাশে দাড়িয়েছেন সাবেক এমপি কায়কোবাদ।

শহীদ কিশোর আমিরুল ইসলাম সাব্বির কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামের মৃত আলমগীর হোসেনের ছেলে।

সাব্বির মরিচাকান্দা জিয়া স্মৃতি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ছিলো। সে দেবিদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ী গ্রামে তার মামার বাড়ীতে থাকতো।

জানা যায়, এক বছর আগে আমিরুল ইসলাম সাব্বিরের বাবা মারা যায়। পরিবারের উপর্জনক্ষম পিতাকে হারানোর পর সংসারের হাল ধরেন সাব্বির। সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে নিজের পড়াশোনা ও সংসারের খরচ চালাতো সে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শুরু থেকে সকল কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করতো সাব্বির। ৪ আগস্ট কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের দেবীদ্বারের মিছিলে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এসময় মাথা ও কানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সাব্বির। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হলে ১২দিন আইসিইউতে রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহীদের তালিকায় যুক্ত হয়ে দুনিয়া ত্যাগ করেন আমিরুল ইসলাম সাব্বির। তার চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার বহন করেন সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। কাজিয়াতল গ্রামের পরিবারের সদস্যদের বসবাসের কোন ঘর ও রোজগারের ব্যবস্থা না থাকায় তাদেরকে নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং একটি বসতঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন সাবেক এই সাংসদ।

সাব্বিরের চাচা মোতালেব মিয়া বলেন, মুরাদনগরের দাদা কায়কোবাদ সাব্বিরের চিকিৎসার সকল খরচ বহন করেছেন। এখন আবার নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়েছে। তাদের থাকার জন্য ঘর করে দিচ্ছে। আমরা অনেক খুশি। কায়কোবাদ দাদাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা দাদার প্রতি কৃতজ্ঞ।

প্রতিবেশী সহিদ মিয়া জানান, সাব্বিরকে হারিয়ে তার মা দুই সন্তান নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল। এই খবর পেয়ে সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ দাদা সাব্বিরের পরিবারকে সহযোগিতার হাত বাড়ায়। আমরা দাদা কায়কোবাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।

নিহত সাব্বিরের মা রিনা আক্তার নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন আমরা সরকারি কোন সহায়তা পাইনি কিন্তু কায়কোবাদ দাদা আমাদের পাশে দাড়িয়েছেন। টাকা দিয়েছেন, সুন্দর একটা ঘর করে দিচ্ছেন। আল্লাহ আমাদের মাথার উপর রহমত হিসেবে কায়কোবাদ দাদাকে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ দাদাকে সুস্থ রাখুন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসুক এই দোয়া করি।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, আওয়ামী নির্যাতনের শিকার হয়ে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ দাদা দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। বিদেশে থেকেও ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকল শহীদ পরিবারের খোঁজ নিয়ে তাদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন। এই সাব্বিরের পরিবারের থাকার মতো কোন ঘর নেই। এই খবর পেয়ে গণ মানুষের নেতা দাদা কায়কোবাদ তাদেরকে একটি বসতঘর তৈরী করে দিচ্ছেন। আমার নেতা সব সময় মানুষের পাশে থাকে। নিজে বিপদে থেকেও অসহায় মানুষকে ভুলে না। তিনিই হলেন গণমানুষের দাদা কায়কোবাদ।