সাইদুল ইসলাম মন্টু (বিশেষ প্রতিনিধি): , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১ , আজকের সময় : শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪

বাল্য বিয়ের ফাঁদে পুলিশে চাকরি আটকে গেলো কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থী তুলির

বরগুনার বেতাগীতে দু‘দু বার পুলিশে চাকরি হয়েও বাল্য বিয়ের অজুহাতে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার নাতনী শিক্ষার্থী তৈয়বুন্নেছা তুলি। সোনার হরিণ চাকরি না মেলায় শিক্ষার্থী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি চরম হতাশায় ভূগছে। তুলি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো: তোফাজ্জেল হোসেনের মেয়ে। বর্তমানে বরিশাল সরকারি বিএম কলেজের আনার্স ফাইনাল বর্ষের শিক্ষার্থী। দাদা মৃত সৈয়দ আলী বীর সেনা বাহিনীর আবসরপ্রাপ্ত চাকুরে ও বীর মুক্তিযোদ্ধা (গেজেট নম্বর-৮১৩)।

অষ্টম শ্রেণিতে পড়াবস্থায় ক্ষুদে শিক্ষার্থী তুলির বাল্য বিয়ে হয়। বাল্য বিয়ে এক ভঙ্কর অভিশাপ পরিবার তা বুঝতে পেরে কিছু দিন যেতে না যেতেই বিয়ে ভেঙে যায়। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে অপরিনত বয়সে বিয়ে চরম অপরাধ তাই কাবিন তো দুরের কথা এ বিয়ের কোন প্রমানাদিও নেই। বরপক্ষেরও বিয়ে নিয়ে কোন ধরনের দাবি কিংবা অভিযোগ নেই। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। এ অজুহতে পুলিশ ভেরিফিকেশনে দুই দুই বার প্রার্থীর বিয়ে হয়েছে বলে তথ্য দেওয়ায় বাল্য বিয়ের ফাঁদে আটকে ও ফেঁসে গেছে মুক্তিযোদ্ধার নাতনী এই শিক্ষার্থীর জীবন। জানা গেছে, বরগুনা জেলায় ২০১৫ সালের ৭ নভেম্বর এবং ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল পুলিশে নিয়োগ পরীক্ষায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ আলী তৈয়বুন্নেছা তুলি দু‘দু বার উত্তীর্ন হয়ে নারী কনষ্টবল পদে চুড়ান্ত হয়। কিন্ত পুলিশ ভেরিফিকেশনে শিক্ষার্থী তৈয়বুন্নেছা তুলি বিবাহিত বলে বরগুনা পুলিশ সুপারের নিকট তথ্য দেওযায় এ বিয়ের অজুহাতে নারী কনষ্টবল পদে তার ভর্তি বাতিল হয়। চাকরি প্রার্থী শিক্ষার্থী তৈয়বুন্নেছা তুলির বাবা মো: তোফাজ্জেল হোসেন অভিযোগ করেন, বাল্য বিয়ের কথা বলার পরেও অজ্ঞাত কারণে ভেরিফিকেশনের দায়িত্বে থাকা পুলিশের তৎকীলীন কর্মকর্তারা বিয়ের কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপারকে তথ্য দিলেও ভেরিফিকেশনের তার মেয়ের বিয়ের কোন প্রমানাদিও সংযুক্ত করতে পারেনি। আমি গরীব মানুষ যার কারনে আমার পরিবার ও মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও কর্তৃপক্ষের কাছে সেই সময় আকূতি-মিনতি জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। চাকরি বঞ্চিত নারী প্রার্থী বিএম কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থী তৈয়বুন্নেছা তুলি বলেন, সরকার চাইলে এখনও সব কিছুই পারেন। একজন মুক্তিযোদ্ধার নাতনী হিসেবে দেশের সেবা ও আমার বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য চাকরি ফিরে পেতে চাই।