শনিবার, ২০ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সড়ক ও জনপথ কর্মকর্তার ব্যাংকে শত কোটি টাকার লেনদেন হরিরামপুরে ৪ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অর্জনের অভিযোগ ডিপিএইচই’র প্রাক্কলনিক আনোয়ারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিলেন শি জিনপিং বেনজীর-মতিউর-এর কুশপুতুল দাহ করায় হুমকি : উদ্বেগ প্রকাশ কোটা সমস্যার সমাধান করার দাবি জাতীয় শিক্ষাধারার হরিরামপুরে পদ্মা তীর রক্ষা বাঁধে ধস, জনমনে আতংক মুরাদনগর শ্রীকাইলে ক্যাপ্টেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে হুরোয়া চ্যাম্পিয়ন তাড়াইলের কথিত পীর লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ বর্ষার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে নৌকার চাহিদা

প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলার গতিশীলতা আনার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৬১৭৫ বার পঠিত

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিচার বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তথ্যপ্রযুক্তির সব সুবিধা ব্যবহার করে মামলা ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা আনার নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই নির্দেশ দেন।

আবদুল হামিদ বলেন, ‘দেশের সব আদালতের কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।. . . এতে বিচার কার্যক্রমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।’

সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু কোর্ট অব রেকর্ড সেহেতু এর সব নথিকে ডিজিটাল নথিতে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং মামলা দায়ের থেকে রায় ঘোষণা পর্যন্ত সব কার্যক্রমকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করাও জরুরি বলে রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন।

‘এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে অনলাইন কজলিস্ট চালু হয়েছে এবং অনলাইন বেল কনফার্মেশন ব্যবস্থা কার্যকর ভাবে চলছে,’ যোগ করেন আবদুল হামিদ।

বিচারকাজ একটা জটিল বিষয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচারকদের আরও বেশি কাজ করার অনুরোধ জানাই। কেননা মামলার পরিমাণ দিন দিন যে হারে বাড়ছে সেটাকে আয়ত্তের মধ্যে আনতে হবে।

বিচার বিভাগ নিয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং বিচারকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আন্তরিক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি জানান, বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক এবং এ লক্ষ্য অর্জনে ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচারকদের খেয়াল রাখতে হবে মামলার রায় হওয়ার পর রায়ের কপি পাওয়ার জন্য বিচারপ্রার্থীদের যেন আদালতের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করতে না হয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি দেশে সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে সংবিধানকে নানাভাবে কাটাছেঁড়া করে গণতন্ত্রকে চিরতরে হত্যা করার অপচেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে।

১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট তার যাত্রা শুরু করে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং স্বল্প সময়ে বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে বলেও রাষ্ট্রপতি মনে করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, জাজেস কমিটির সভাপতি এবং আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। শান্তি ও সঙ্কটে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের অভিভাবক ও রক্ষক হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সংবিধানবিরোধী ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট ষড়যন্ত্রকারীদের সেই নীল-নকশা বাস্তবায়িত হতে দেয়নি। ‘শেষ পর্যন্ত জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার করে সুপ্রিম কোর্ট তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করেছে,’ যোগ করেন আবদুল হামিদ। জাতি আজ সেই কলঙ্ক হতে কিছুটা হলেও দায়মুক্ত উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির ক্রান্তিকালে যখনই প্রয়োজন হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট তার উপরে অর্পিত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সংবিধানকে রক্ষা করেছে।

সুপ্রিম কোর্ট দিবসের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করেন সুপ্রিম কোর্টের সেইসব অকুতোভয় বিচারপতি এবং বিজ্ঞ আইনজীবীদের যারা বন্দুকের নলের কাছে নতি স্বীকার করেননি। বিবেককে কখনো বিকিয়ে দেননি। করোনাকালে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালতের বিচারক ও আইনজীবী বিচারপ্রার্থী জনগণের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে- এ জন্য আবদুল হামিদ বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ জানান।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সম্মিলিত প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে। তিনি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বিচার বিভাগের সংশ্লিষ্ট সবাইকে সামিল হওয়ার ও তাগিদ দেন। রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, দেশ, জনগণ ও সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে বিচারকরা তাদের মেধা ও মনন প্রয়োগের মাধ্যমে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবেন দেশবাসী তা প্রত্যাশা করে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন যেখানে মানুষে মানুষে থাকবে না ভেদাভেদ, থাকবে না ধনী-গরিবের বৈষম্য। জনগণ অত্যন্ত কম খরচে অল্প সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার লাভ করবে।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের স্থাপনার ছবি সম্বলিত স্মারকগ্রন্থেও মোড়ক ও উম্মোচন করেন।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..