পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আনোয়ার হোসেন ছোটন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। ছোটনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনায় দফায় দফায় বাঁধা, হামলা, নির্বাচনী মাইক ভাংচুর ও পোস্টার ছিড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধে। দফায় দফায় পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৩, ৫ ও ৭নং ওয়ার্ডে নৌকা প্রতীকের সর্মথকরা আনারস প্রতীকের কর্মী সমর্থকদের উপর এ হামলা চালায়। এতে নারীসহ প্রায় ১৩জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, নাহিদ, অপু, আরিফ, বিলকিস, ইতি, হ্যাপি, সুজন, শাহিন, জুয়েলসহ প্রায় ১৩জন। তাদের মধ্যে গুরুতর জখম অবস্থায় ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন আছেন নাহিদ, অপু, আরিফ।আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ছোটন অভিযোগ করে বলেন, গত ৩-৪ দিন যাবৎ নৌকা প্রার্থীর ইন্দনে তার সমর্থকরা আমার কর্মীদের নানাভাবে ঝামেলা করতেছে। দুই দিন আগেও আমার প্রচারনার মাইক ভেঙে ফেলেছে। শুক্রবার রাতে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা আমার নির্বাচনী পোস্টার ছিড়ে ফেলে ও বহিরাগত ক্যাডার বাহিনী নিয়ে আমার নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে এসে নানা রকম হুমকিমূলক শ্লোগান দেয়। ৩নং ওয়ার্ডের সাদাপোল এলাকায় আমার স্ত্রী ও বোনরা মিলে প্রচারনায় নামেন, তখন নৌকা প্রার্থীর ভাই মাদক ব্যবসায়ী মোসলেউদ্দিন ও হারুনসহ একাধিক লোক তাদের প্রচারনায় বাঁধা দেন এবং আমার সকল পোষ্টার ছিড়ে ফেলেন। ৫ ও ৭নং ওয়ার্ডে আমার ছোট ভাইসহ কর্মীরা প্রচারনা চলাকালে নৌকার ক্যাডার বাহিনীরা আমার ছোট ভাইসহ কর্মীদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের ১৩ জন লোক আহত হয়। তার মধ্যে ৩জন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসারত আছেন।
ছোটন আরও বলেন, বনি আমিন পিন্টু নামে আ’লীগের এক কর্মী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। পিন্টুর আত্মীয়-স্বজনরা সড়ক দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে। অথচ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরোয়ার্দ্দী ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালাচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত পিন্টুকে নাকি আমার লোকজন পিটিয়ে আহত করেছে। আমি এ ধরনের মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচারের নিন্দা জানাই। ও পিন্টুর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বিষয়ে ছোটন বলেন, নির্বাচনী হাওয়া শুরু না হতেই নৌকার প্রার্থী যেভাবে আমার সমর্থক ও পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে। আমি ও আমার ইলিশা সাধারণ জনগণসহ পরিবারকে রক্ষা করার জন্য নির্বাচন কমিশন, পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসনের কাছে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন দাবি করছি।
এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাই ও কর্মী সর্মথকদের উপর আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর যে অভিযোগ করেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ইউনিয়নে এমন কোন ঘটনায় ঘটেনি। সকালে আমার কর্মীরা এলাকায় নির্বাচনী পোষ্টার লাগাতে গেলে সেখানে আমার কর্মীদের উপর তারা হঠাৎ হামলা চালায়। এতে আমার এক জন কর্মী গুরুতর আহত হয়।
আর ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, পূর্ব ইলিশায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষের খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ বিষয়ে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উল্লেখ্য, আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে ভোলা সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে ২নং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের লক্ষ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মো. সোহরাওয়ার্দী।