নিজস্ব প্রতিবেদক , আপলোডের সময় : বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১ , আজকের সময় : সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

কেউ সংলাপে আসুক বা না আসুক, নির্বাচন কমিশন গঠন থেমে থাকবে না – ওবায়দুল কাদেরের

নেতিবাচক রাজনীতি থেকে সরে এসে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি এগিয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কেউ সংলাপে আসুক বা না আসুক, নির্বাচন কমিশন গঠন থেমে থাকবে না।

ওবায়দুল কাদের আজ সকালে তাঁর বাসভবনে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।

‘রাষ্ট্রপতির সংলাপ অর্থহীন এবং এ সংলাপে সংকটের সমাধান হবে না’—বিএনপির মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এর আগেও নির্বাচন কমিশন গঠনে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে, এবারও সে পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে।

গতবারও বিএনপি’র তালিকা থেকে একজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়ে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা যাবে না, নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হলে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এর মাধ্যমেই প্রমাণ হবে—বিএনপি কি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন চায়, নাকি বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়।

‘সরকার দেশকে অগণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে’—মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রকৃতপক্ষে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় শেখ হাসিনার নিরলস প্রয়াসে বিএনপিই পদে পদে বাধা সৃষ্টি করছে।

বিএনপির বহুদলীয় তামাশা আর ভোটারবিহীন নির্বাচনই দেশকে গণতন্ত্র থেকে ছিটকে দিয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করে বিএনপিই গণতন্ত্রের কবর রচনা করতে চেয়েছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আপাদমস্তক অগণতান্ত্রিক এবং লুটপাটের রাজনীতির জনক বিএনপি মুখে গণতন্ত্রের বুলি ছাড়লেও অন্তরে সাম্প্রদায়িকতা আর সুবিধাবাদ লালন করে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপিই এ দেশকে ধর্মান্ধ, উগ্রবাদী ও সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে বিশ্ব-দরবারে সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

‘সরকার খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে মিথ্যাচার করছে’—বিএনপিনেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার নয়, মিথ্যাচার আর বিএনপি এখন সমার্থক শব্দ।

বিএনপি নেতাদের অবিরাম মিথ্যাচারের দাপটে এখন আর তাদের বক্তব্যে সত্যের লেশমাত্র খুঁজে পাওয়া যায় না এমন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তারা মিথ্যাচার আর অপরাজনীতির ওপরই ভরসা করে চলেছে। তিনি বলেন, বন্দি খালেদা জিয়া অধিকতর শক্তিশালী—এ দর্শন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে তারা মুক্তির চেষ্টাও করেনি, আইনগত লড়াইও তেমনটা করেনি। তাদের উদ্দেশ্যমূলক অপরাজনীতির দাবার গুটি হয়েছেন খালেদা জিয়া।

বিএনপিনেতারা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়েও অতিরাজনীতি করছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা চিকিৎসার চেয়ে রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলকেই অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছে, বরং শেখ হাসিনাই খালেদা জিয়ার প্রতি উদারতা ও মানবিকতার নজির স্থাপন করেছেন। অথচ সেই কৃতজ্ঞতাবোধও বিএনপিতে নেই।

জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনের টাকায় চলছে বিএনপিনেতাদের বিলাসী জীবন—এমনটা মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, তাদের মুখে জনগণের কথা লোক দেখানো বাক্য ছাড়া আর কিছু নয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতারা এখন সাইড- লাইনে। যার বা যাদের নির্দেশে দল চলছে, তারা মাঠের বাস্তবতা বোঝে না, জনগণের সঙ্গেও সম্পৃক্ততা নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, যেনতেন উপায়ে ক্ষমতা দখল এবং লুটপাটে লেগে যাওয়াই এখন বিএনপির একমাত্র টার্গেট।

পরে ওবায়দুল কাদের সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশনা আরা মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় অন্য সদস্যেরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।