সাব্বির আলম বাবু (ভোলা ব্যুরো চিফ): , আপলোডের সময় : রবিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২২ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সড়কের কাজ শেষ না হতেই এক মাসে উঠে গেল কার্পেটিং

ভোলার চরফ্যাসনের দুলারহাট থেকে হাজিরহাট বাজার পর্যন্ত দুইটি প্যাকেজে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ৫ হাজার মিটার সড়ক সংস্কার কাজ শেষ না হতেই ১ মাসের মধ্যেই উঠে গেলে সদ্য দেয়া কার্পেটিং। এলজিইডির কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কর্পেটিং করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সড়কে নিয়মবর্হিভূত ভাবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক সংস্কার করেছেন। সংস্কারের এক মাসেই কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়,২০১৯-২০ অর্থবছরে দুলারহাট বাজার থেকে আহাম্মদপুর ইউনিয়নের হাজিরহাট বাজার পর্যন্ত ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় ব্যয়ে দুইটি প্যাকেজে ৫ হাজার মিটার রাস্তার সংস্কার করে কার্পেটিং করার কার্যাদেশ পান ভোলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তালুকদার এন্টার প্রাইজ ও কামাল এন্টার প্রাইজ। ওই দুই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি প্যাকেজের ৫ হাজার মিটার কাজ খরিদ করে ভোলার লাভু মিয়ার মালিকানাধীন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দুইটি প্যাকেজের ৫হাজার মিটারের মধ্যে ৩৫৪০ মিটার থেকে সড়কের কার্পেটিং এর কাজ ইতি মধ্যে সম্পন্ন করা হয়। অপর প্যাকেজের ২৮৪০ মিটারের কাজ চলমান রয়েছে। নিম্নমানের বিটুমিন, পাথর, সুরকিসহ অন্যান্য উপকরণ দিয়ে কার্পেটিং করায় কাজ সম্পন্ন হওয়ার ১ মাসের মধ্যে ওই প্যাকেজের প্রায় ১শ মিটার সড়কের কার্পেটিং উঠেতে শুরু করে। পাশাপাশি পুরো সড়ক জুড়েই দেখা দেয় ফাটল। স্থানীয় শিশুরা হাতে টেনে ওই কার্পেটিং তুলতে দেখা যায়। সদ্য সংস্কার করা সড়কের ১ মাসের মধ্যেই কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় এলাকাবাসী ও পথচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীরা অভিযোগ করেন, কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এলজিইডির দ্বাতিত্বরত কর্মকর্তাদের সাথে আতাত করে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কটি সংস্কার করেছেন। এনিয়ে এলাকাবাসী সড়ক সংস্কার কাজের গুণগত মানোন্নয়ন করছেন না ঠিকাদার শুরু থেকেই এলাকাবাসী উন্নতমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করার জন্য অনুরোধ জানালেও ঠিকাদার তা আমলে না নিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়কে কার্পেটিং কাজ সম্পন্ন করেছেন। এবিষয়ে এলাকাবাসী উপজেলা প্রকৌশলীকে একাধিকবার জানিয়ে ও তারা কোন প্রতিকার পাননি। সংস্কারের ১ মাসের মধ্যেই সড়ক জুড়ে দেখা দিয়েছে ফাটল। উঠে যাচ্ছে সদ্য দেয়া কার্পেটিং। স্থানীয় বাসিন্ধা সামসুদ্দিন জানান, সড়কটি সংস্কারের সঠিক ভাবে কাজ না হওয়ায় শুরুতেই ঠিকাদারের নিয়োজিত লোকজনদেরকে বাধা দেয়া হয়। এবং ওই কাজে তদারকিতে থাকা সহকারী উপ-সহকারী প্রকৌশলী(এসও)কে জানানো হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। এলজিইডির কর্মকর্তারা ঠিকাদারের এই অপকর্মের সাথে জড়িত থাকায় মনড়গড়া ভাবে নিম্নমানের পাথর, বিটুমিন, সুরকী দিয়ে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছেন । সংস্কার শেষ হতেই এক মাসের মধ্যে সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। ঠিকাদার লাভু মিয়া জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভোলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তালুকদার এন্টার প্রাইজ ও কামাল এন্টার প্রাইজের কার্যদেশ পাওয়া দুই প্যাকেজের সড়কের সংস্কারের কাজ তিনি খরিদ করে নেন। গত বছরে বর্ষার কারনে কাজ সমাপ্ত করা যায়নি। এবছরে ওই সড়কের কাজ শুরু করেছেন। কাজের গুনগতমান ঠিক ভাবেই করা হয়েছে। তবে কি কারনে কার্পেটিং উঠে গেছে তা আমার জানানাই। দুই একদিনের মধ্যে কর্পেটিং উঠে যাওয়া স্থানগুলো সংস্কার করে দেয়া হবে। তবে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নুরহোসেন জানিয়েছেন কার্পেটিং উঠে যাওয়া স্থানগুলো কয়েকদিনে মধ্যে সংস্ককার করে দেয়ার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে কার্পেটিং উঠে যাওয়া স্থানগুলো সংস্কার করা হবে। উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোশারেফ হোসেন জানান, রবিবারের মধ্যেই উঠে যাওয়া কার্পেটিং তুলে ফেলে ওই সড়ক নতুন করে সংস্কার করে দেয়ার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।