নিজস্ব প্রতিবেদক , আপলোডের সময় : বুধবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২২ , আজকের সময় : রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ভূয়সী প্রশংসা প্রধানমন্ত্রীর; স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশ

নভেল করোনাভাইরাস মহামারিসহ বিভিন্ন সময়ে মানবসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ছাত্রলীেগর নেতাকর্মীদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে এখন থেকেই নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বানও জানান তিনি।

আজ বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘আমি বর্তমান ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানাই। তারা এ করোনাকালীন সময়ে লাশ দাফন, রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া, সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দেওয়ার মতো মানবিক কাজ করেছে। আমি বলব, মুজিব আদর্শের আসল সৈনিক যারা, তারাই এ কাজগুলো করেছে। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোকেও ধন্যবাদ জানাই; করোনার এ কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে থাকার জন্য।’

দেশের বিভিন্ন দুর্যোগে ছাত্রলীগের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে যখনই কোন দুর্যোগ হয়েছে; আমার আহ্বানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে ছুটে গেছে। লকডাউনে ধান কাটার মৌসুমে যখন কৃষকদের ধান কাটতে সাহায্য করতে ছাত্রলীগকে আহ্বান করলাম, তারা সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে এলো।

করোনার মহামারিতে ছাত্রলীগ একটা রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে যেভাবে দাঁড়িয়েছিল, সেজন্য আমি প্রত্যেক নেতাকর্মীকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই। এটাই মানবতা। এটাই রাজনৈতিক নেতাদের কাজ। এটাই তাদের দায়িত্ব। ছাত্রলীগের মূলনীতি মেনে সবাইকে পড়াশোনা করতে হবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগকে কোনোভাবেই বিভ্রান্তির পথে না গিয়ে পাঠে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তোমাদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মেলাতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে এখন থেকেই নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসবে। প্রযুক্তির এই যুগে মানুষের কর্মদক্ষতারও পরিবর্তন ঘটবে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এখন থেকে তৈরি হতে হবে।’

শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘মানুষের জন্য কাজ করাই ছাত্রলীগের মূল দায়িত্ব। এটাই রাজনৈতিক নেতাদের কাজ এবং তা ছাত্রলীগকে মনে রাখতে হবে।’

জাতির পিতার বলে যাওয়া কথা ‘মহান অর্জনের জন্য মহান আত্মত্যাগ দরকার’, সে কথা ছাত্রলীগকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে সে কথা মনে রাখতে হবে। তারা কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। নিজেদের এ সবের ঊর্ধ্বে রেখে দেশ যেন শান্তির পথে, উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে; সে দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

ছাত্রলীগের মূলমন্ত্র শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। কাজেই আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এগুতে হবে। কম্পিউটার শিক্ষা, প্রযুক্তি শিক্ষা, ইন্টারনেট ব্যবহার, সকলের হাতে হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে দেওয়া; আমরা সবই করে দিয়েছি। ২০০৮ সাল থেকে একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে আজকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রযুক্তির ব্যবহার পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। কাজেই মানুষকে আর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই। মানুষের দৃষ্টি খুলে গেছে। কেননা হাতের মুঠোয় পৃথিবী এসে গেছে।

ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান। এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।