নিজস্ব প্রতিবেদক , আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২২ , আজকের সময় : সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় গ্যাস-হাইড্রেট মিথেন পাওয়া গেছে

বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় গ্যাস-হাইড্রেটের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর অবস্থান, প্রকৃতি ও মজুতের ব্যাপারে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া গেছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায়  ১১ হাজার কোটি থেকে ৬৩ হাজার কোটি  ঘন ফুট  প্রাকৃতিক গ্যাস-হাইড্রেট জমা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ১৭-১০৩ ট্রিলিয়ন (১ ট্রিলিয়ন = ১ লাখ কোটি) ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস মজুতের সমান।

যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটনে অবস্থিত ন্যাশনাল ওশেনোগ্রাফি সেন্টারসহ পেট্রোবাংলা, বাপেক্স এবং স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের যৌথ উদ্যোগে তিন বছর নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ওই গবেষণা সম্পন্ন করা হয়। গোটা বিষয়টি সমন্বয় করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট।

উল্লেখ্য, মিথেন গ্যাস উচ্চচাপ ও নিম্ন তাপমাত্রার কারণে জমাট বরফে পরিণত হয়। তখন তাকে গ্যাস-হাইড্রেট বলে। এটি এক ধরনের কঠিন পদার্থ, যা স্তূপীকৃত বালির ছিদ্রের ভেতরে ছড়ানো বরফ আকারে, অথবা কাদার তলানিতে ক্ষুদ্র পিন্ড, শিট বা রেখা আকারে বিদ্যমান থাকে।

বুধবার (৫ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব মো. খুরশেদ আলম বলেন, ‘বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে বিশেষ করে ভারতের কৃষ্ণ-গোদাভারী এবং মহানন্দা বেসিনে বিপুল পরিমাণ গ্যাস- হাইড্রেটের মজুতের সম্ভাবনা বিষয়ে ভারত ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ভারত ইতোমধ্যে কৃষ্ণ-গোদাভারী এবং মহানন্দা বেসিনে এবং আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের তিনটি স্থানে কূপ খনন করেছে। মহানন্দা বেসিনে সাগরের তলদেশে ২০৫ মিটার নিচে ২৫ মিটার পুরু একটি স্তরে প্রায় ১৫ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস-হাইড্রেটের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে।’

ডেস্কটপ স্টাডির প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে বলা যায় যে, বাংলাদেশের সুমদ্রসীমানার উল্লেখযোটের উপস্থিতি থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘সাড়ে ছয় হাজার কিলোমিটার লাইন সীমানার তথ্য-উপাত্তের ওপরে ভিত্তি করে এই ডেস্কটপ স্টাডি (গবেষণা) পরিচালিত হয়েছে। আমাদের স্টাডি থেকে প্রাপ্ত ফলাফল পূর্ণাঙ্গ সিসমিক জরিপ সম্পাদন করা হবে। এরপর প্রকৃত মজুতের পরিমাণ ও উপস্থিতি নির্ণয় এবং পরিবেশগত প্রভাব ও তা প্রশমনের কৌশল নির্ণয়ের জন্য জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগে পাঠানো হবে। এছাড়া, এই স্টাডিটি একটি বিশ্বখ্যাত গবেষণা জার্নালেও প্রকাশিত হবে।’

খুরশেদ আলম বলেন, ‘উত্তোলনের প্রযুক্তি সহজলভ্য না হওয়ায় অনেক উন্নত দেশ এখনও গ্যাস-হাইড্রেট উত্তোলন শুরু করতে পারেনি। আমরা আশা করছি যে, অচিরেই এই প্রযুক্তি সহজলভ্য হবে এবং আমরা বিভিন্ন উন্নত দেশের কাছ থেকে প্রযুক্তি নিয়ে গ্যাস-হাইড্রেট উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবো।’