নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধিঃ , আপলোডের সময় : শনিবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২২ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

আমরা কেউই রূপার চামচ মুখেনিয়ে জন্মাইনি, তাই ছেলে-মেয়েদের দু’হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে : মতিয়া চৌধুরী

কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এম.পি বলেছেন, এক জনের উপার্জনে সংসার চলেনা, কিন্তু দুই জনের উপার্জনে সংসারটা ভালো চলে; এটাই হলো বাস্তব সত্য। আমরা কেউই রূপার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম নেই নাই। আমাদের সবারই খেটে খাওয়ার পরিবার। সুতরাং সেই অবস্থাতে দুই জনের হাত মিললে যে কোন কাজ ভালো আগায়, আর একা একা এক জনের উপার্জনে কোন কাজ ভালো ভাবে আগায় না, সংসারও ভালো চলে না। কাজেই মেয়েদেরও পড়াশুনা করাতে হবে, চাকরি বাকরির ক্ষেত্রেও তাদের সুযোগ সৃষ্টি করেত হবে; আর ছেলেদেরও করতে হবে। তাই ছেলে ও মেয়েরা সবাই সুযোগ সুবিধা পাবে।

মতিয়া চৌধুরী এম.পি তাঁর নির্বাচনী এলাকা শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার গনপদ্দী ইউনিয়নের গনপদ্দী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইবতেদায়ী মাদ্রাসার মেধাক্রমানুসারে প্রথম ১০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে, সকল মসজিদের ঈমাম ও মুয়াজ্জিন এবং মন্দির ও গীর্জার সকল ধর্ম যাজকগনের মধ্যে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আমরাই কিন্তু ১৯৯৬ সালে ভোটার আইডি কার্ডে (জাতীয় পরিচয় পত্রে) বাবার নামের সঙ্গে মায়ের নাম লিখে দিয়েছি। তার আগে ভোটার কার্ডে শুধু বাবার নাম থাকতো, মায়ের নাম থাকতো না। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা-এঁর বরাদ দিয়ে তিনি বলেন- নেত্রী পার্লামেন্টে বলেছেন, হাসরের ময়দানে মায়ের নামে ডাকবে। আমরা অনেকেই হয়তোবা খেয়াল করিনা, সেখানে ডাকবে কিন্তু মায়ের নামে, বাপের নাম ডাকবে না। কাজেই হাসরের ময়দানে মায়ের নাম, আর ভোটার লিস্টে মায়ের কোন ঠিকানাই নাই, এইটাতো ঠিক না। ওইটাতো হাসরের ময়দান, আর এইটাতো হলো দুনিয়ার ময়দান; কাজেই মায়ের নামও থাকবে এবং বাপের নামও থাকবে; দুই জনেরটাই থাকুক। কিন্তু মেয়েদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। এইভাবে ডিরেক্টসিটেও মেয়েদের আসতে দেওয়া, আবার মেয়েদের জন্য কোঠা রাখা, আস্তে আস্তে সামনের দিকে চলে আসা। এরকম নানান ধরনের পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন। আজকে মেয়েরা আন্তর্জাতিক খেলার অঙ্গনে ট্রফি পাচ্ছে, তারা হিমালয় পাহাড়ে যাচ্ছে। এইযে মেয়েদের আত্মবিশ্বাস, তাদের যে শক্তি আল্লাহ দিয়েছেন, এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের মধ্যে জাগ্রত করেছেন। কাজেই ছেলে-মেয়েদেরকে সমান ভাবে সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে।

উরফা ইউনিয়নের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে সবসময় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। শীতে দেন, গরমে দেন, ঈদে দেন, পূজাপার্বণে দেন। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়তা করেন। সুতরাং আপনারা সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে শেখ হাসিনার উন্নয়নের সরকারকে সহযোগিতা করুন।

এসময় সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. বোরহান উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও পৌরমেয়র হাফিজুর রহমান লিটন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম তালুকদার, উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আরেফিন পারভেজ, কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ, নকলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম সোহেলসহ অন্যান্যরা, ইউপি চেয়ারম্যানগন, বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারি, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, নকলা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত সুবিধাভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বেগম মতিয়া চৌধুরী এম.পি তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নকলা উপজেলার ১ হাজার ৪৩০ জন শিক্ষার্থী, ১ হাজার ৮জন ইমাম, মুয়াজ্জিন ও মন্দিরের পুরোহিত, ১ হাজার অসহায় মানুষ ও ৯১ জন গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মাঝে শীত বস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেন। এছাড়া নালিতাবাড়ী উপজেলার দরিদ্র শীতার্তের মাঝে, সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইবতেদায়ী মাদ্রাসার মেধাক্রমানুসারে প্রথম ১০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে, সকল মসজিদের ঈমাম ও মুয়াজ্জিন এবং মন্দির ও গীর্জার সকল ধর্ম যাজকগনের মধ্যে চার সহস্রাধিক কম্বল বিতরণ করেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি।

পরে বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে নকলা হতে সড়ক পথে বাসযোগে ময়মনসিংহ, গাজিপুর হয়ে রাজধানী ঢাকার নিজ বাসভবন রমনা এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।