নিজস্ব প্রতিবেদক , আপলোডের সময় : রবিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২২ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সাবেক ডিআইজি প্রিজন্স পার্থের ৮ বছরের কারাদণ্ড

সকাল ৯টার কিছু পরে পার্থ গোপাল বণিককে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয়। প্রথমে তাকে মহানগর দায়রা আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সেখান থেকে নেয়া হয় এজলাস কক্ষে।

ঘুষ গ্রহণ ও মানি লন্ডারিং মামলায় সিলেটের সাবেক কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) পার্থ গোপাল বণিককে ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

সেই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জমিরানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরও তিন মাস জেল খাটতে হবে তাকে।

পাশাপাশি তাকে আরও ৬৫ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছে আদালত।

রোববার ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এই রায় পড়ে শোনান।

দণ্ডবিধির ১৬১ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪ (২) ধারায় তাকে এই সাজা দেয়া হয়েছে। যার একটিতে ৫ বছর ও আরেকটিতে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

রায়ে বিচারক বলেছেন, দুটি ধারায় সাজা একসঙ্গে চলবে। তাই পার্থ গোপাল বণিককে মোট ৫ বছর জেলে থাকতে হবে।

রায় ঘোষণার আগে সকাল ৯টার কিছু পরে পার্থ গোপাল বণিককে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয়। প্রথমে তাকে মহানগর দায়রা আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সেখান থেকে নেয়া হয় এজলাস কক্ষে।

বিচারক বেলা সাড়ে ১১টার কিছু পর রায় পড়া শুরু করেন।

এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামি পার্থ গোপাল বণিককে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। তার কয়েকজন স্বজন আদালতকক্ষের সামনে ঘোরাঘুরি করলেও নিজেদের পরিচয় দেননি তারা। সাংবাদিকরা কথা বলতে গেলে এড়িয়ে গেছেন নানান ভঙ্গিতে।

রায় ঘোষণার পর পার্থ গোপাল বণিককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জানান তারা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

গত ২৪ নভেম্বর মামলাটিতে আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন ডিআইজি পার্থ। এর আগে গত ১৬ নভেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। চার্জশিটভুক্ত ১৪ সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।

গত ৫ জুন পার্থ গোপাল বণিককে জামিন দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন। ২ সেপ্টেম্বর পার্থ বণিকের জামিন বাতিল করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। সেই আদেশ অনুযায়ী ১৯ সেপ্টেম্বর পার্থ গোপাল বণিক বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠায়।

এদিকে মামলাটি সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে বদলি করে বিশেষ জজ আদালত-৪ এ পাঠানো হয়।

২০১৯ সালের ২৮ জুলাই সকাল থেকে পার্থ গোপালকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিকেলে তার গ্রিন রোডের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সহকারী পরিচালক মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরদিন আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।

গত বছর ২৪ আগস্ট একই কর্মকর্তা ডিআইজি পার্থের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। গত বছর গত ৪ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।

পার্থ গোপাল বণিক ২০১৬ সালের ৮ আগস্ট চট্টগ্রামের ডিআইজি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।