নিজস্ব প্রতিবেদক , আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২২ , আজকের সময় : শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

লকডাউন কোনো সমাধান নয়, প্রয়োজন জনসচেতনতা : এফবিসিসিআই সভাপতি

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকলেও আর লকডাউন চায় না ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। মহামারী প্রতিরোধে এটি কোনো সমাধান নয় বলে মনে করেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। বরং এর বদলে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন এ ব্যবসায়ী নেতা।

মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মহামারী প্রতিরোধে লকডাউন কোনো সমাধান নয়, বরং এতে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। তাই সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ প্রতিরোধে সরকার আরোপিত বিধিনিষেধ সবাইকে মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।

লকডাউনে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বর্তমানে দেশের রফতানি খাতে প্রচুর ক্রয়াদেশ আসছে। আবারো লকডাউনের সিদ্ধান্ত এলে শিল্প খাতের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে, যা অর্থনীতিকে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। যেসব দেশ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেসব দেশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। তাই লকডাউন না দিয়ে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলাই এ মহামারী প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকরী উপায়।

অনুষ্ঠানে দোকান মালিক ও অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মীদের টিকা গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহিত করতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

এতদিন বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাব প্রধান বাধা ছিল উল্লেখ করে জসিম উদ্দিন বলেন, এখন পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল ও ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ফলে দেশে বিনিয়োগবান্ধব অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। এ সময় ব্যাংকগুলোকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে আরো বেশি ঋণ দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ রাখার বিধান করারও পরামর্শ দেন।

এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বাংলদেশ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করা জরুরি। বিশ্ববাণিজ্যের ৯০ শতাংশই হয় ছয়টি ব্লকের মধ্যে। তাই রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি), ইউরোপীয় ইকোনমিক ইউনিয়ন, ইউএসএ, ইইউ, ইউকে ও আফ্রিকান কন্টিনেন্টাল ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট—এ ছয়টি ব্লকের সঙ্গে এফটিএ করা যেতে পারে। এলডিসি-উত্তর সময়ে দরকষাকষির জন্য বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপরও জোর দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাবীব ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কাফি।