সাব্বির আলম বাবু (ভোলা ব্যুরো চিফ): , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২২ , আজকের সময় : শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হচ্ছে রুপালী দ্বীপ মনপুরা

ছোট হয়ে আসছে পর্যটন অপার সম্ভবনাময় মনপুরা। মেঘনার অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে ছোট হয়ে যাচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রুপালী দ্বীপ মনপুরার মানচিত্র। প্রতিদিন অব্যাহত ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে এই জনপদ। ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত দ্বীপ উপজেলাটি মেঘনার অব্যাহত ভাঙ্গনে ছোট হয়ে যাচেছ। ভোলা জেলার মুল ভুখন্ড থেকে বিছিন্ন চারপাশে মেঘনা নদী দ্বারা বেষ্টিত সবুজ সমোরহে ঘেরা মনপুরা দেড় লক্ষাধিক লোকের বসবাস। প্রতিদিন রাক্ষসী মেঘনার অব্যাহত ভাঙ্গনে বসত ভিটা ফসলি জমি হারিয়ে মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। হাজার হাজার একর ফসলী জমি আজ নদীর গর্ভে বিলীন। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার সাধারন মানুষ আশ্রয় নিচ্ছে নতুন জেগে উঠা চর কিংবা বেড়ীর ডালে। মেঘনার ভাঙ্গন থেকে মনপুরাকে রক্ষা করতে হলে চারিদিক ব্লক বা ড্যামপিং ব্যাবস্থা করে স্থায়ীভাবে ভাবে ভাঙ্গন রোধের উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনকে। মেঘনার ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি ইতিমধ্যে তার একান্ত প্রচেষ্টায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। ভোলা জেলার মুজিব নগর ও মনপুরা উপজেলা বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ পুর্নবাসন নিস্কাসন ব্যাবস্থার উন্নয়ন ও তীর সংরক্ষন, নামে ১১৯৩ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রেরন করা হয়েছে। প্রকল্পটি এখন অনুমোদনের অপেক্ষায়। প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই মনপুরা নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাবে। স্থানীয় ভোলা-৪ আসনের এমপির কাছে মনপুরার মানুষের প্রানের দাবী মনপুরাকে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার জন্য নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্পটি দ্রুত অনুমোদন দিয়ে মেঘনার হাত থেকে দেড় লক্ষাধিক মানুষের জীবন বাঁচানো। আর কোন দাবী নাই মেঘনার ভাঙ্গন থেকে মনপুরাকে রক্ষা চাই। মেঘনার ভাঙ্গনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পর্যটন স্থান, বাজার, মসজিদ , মন্দিরসহ কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি গ্রাম নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে পর্যটনের আকর্ষনীয় স্থান মনপুরা ফিসারিজ , নাইবেরহাট বাজার, হাজির হাট ইউনিয়নের সোনারচর , চরজ্ঞান, দাসের হাট, মনপুরা ইউনিয়নের পুর্ব কুলাগাজী তালুক, সীতাকুন্ড, ঈশ্বরগঞ্জ গ্রাম, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাষ্টারহাট বাজার সংলগ্ন পশ্চিম পাশ, দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রাম নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। মেঘনার অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে ৪টি ইউনিয়ন কেবলই ছোট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে ভাঙ্গতে থাকলে ২০ বছরের মধ্যে মনপুরা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে মনপুরা ।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাজির হাট ইউনিয়নের চৌধুরী বাজার সংলগ্ন পুর্ব-পশ্চিম পাশে মেঘনার ভাঙ্গনে কেবলই ভিতরে ঢুকছে। নাইবেরহাট , সোনারচর ও চরজ্ঞান মুক্তিযোদ্ধা আঃ লতিফ ভূইয়ার বাড়ীসহ অধিকাংশ গ্রাম মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে। মনপুরা ইউনিয়নের আন্দিড়পাড়, মাছুয়াখালি, কাচারির ডগি, সম্পুর্ন এবং ঈশ্বরগঞ্জ মৌজার অধিকাংশ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উত্তর সাকুািচয়া ইউনিয়নের মাষ্টার হাট বাজার সংলগ্ন পশ্চিম পাশ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মাষ্টার হাট বাজার সংলগ্ন ব্রিজটি নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। যেকোন সময় ব্রিজটি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এভাবে ভাঙ্গতে থাকলে দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের দক্ষিন-পুর্ব পাশ ও রহমানপুর গ্রাম মেঘনার ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। রাক্ষসী মেঘনার অব্যাহত ভাঙ্গনে কেবলই ছোট হয়ে যাচ্ছে দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়ন। এভাবে ভাঙ্গতে থাকলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে মনপুরা। এলাকার ভাঙ্গন কবলিত মানুষেরা দ্রুত নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহনের জন্য জনপ্রতিনিধি সহ উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সহযোগীতা কামনা করছেন। এব্যাপারে হাজির হাট ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ নিজামউদ্দিন হাওলাদার বলেন, মনপুরাকে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আবদুল্যাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী বলেন, মেঘনার ভাঙ্গনে মনপুরা ছোট হয়ে যাচ্ছে। মেঘনার ভাঙ্গন রোধে ইতিমধ্যে উত্তর মাথায় নদীর তীর রক্ষা প্রকল্প কাজ আমরা শেষ করেছি। উত্তর মাথায় আমরা ব্লক ও ড্যাম্পিং করেছি। মেঘনার ভাঙ্গন রোধে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্যাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি নদীভাঙ্গনের হাত থেকে মনপুরাকে রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন। উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, ভোলা জেলার মুজিব নগর ও মনপুরা উপজেলা বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ পুর্নবাসন নিস্কাসন ব্যাবস্থার উন্নয়ন ও তীর সংরক্ষন নামে ১১৯৩ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রেরন করা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-২ নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, ইতিমধ্যে ঘূর্ণীঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ীবাঁধ গুলো নির্মান করেছি। মনপুরাকে রক্ষার জন্য আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।