রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
বেতাগীতে ১৪৫ জনকে ফ্রী চক্ষু চিকিৎসা প্রদান মিরপুর সাইন্স কলেজে নবীনবরণ, কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও বৃত্তি প্রদান জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় সর্বজনীন আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর বাংলাদেশ আইএমও’র কাউন্সিল সদস্য নির্বাচিত ইসি’র সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগের আস্থা রয়েছে : ওবায়দুল কাদের ৩৪ দিনে ৪৮০ বাহন ও ১১৯ স্থাপনায় অগ্নি সংযোগ-ভাংচুর – নতুনধারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ২,৭১৩ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল বিএনপির ১৫ কেন্দ্রীয় নেতাসহ সাবেক ৩০ সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন :ওবায়দুল কাদের ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ‘জাগো২৪.নেট চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করল

বুড়িগঙ্গা বাঁচানোর উদ্যোগ আলোর মুখ দেখে না কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৫৮৩৯ বার পঠিত

বুড়িগঙ্গা নিয়ে কেবল আশার কথাই শোনা যায়। বাস্তবে নদীটির তীরে গেলে হতাশাই বাড়বে পরিবেশপ্রেমীর। বর্ষায় কিছুটা ফুলেফেঁপে উঠলেও শীতে ফের বিবর্ণ হয়ে যায়। চরম দূষণ ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না তখন। গত কয়েক বছরে বুড়িগঙ্গা রক্ষায় কার্যকর কোনও প্রচেষ্টা চালানো হয়নি বলেই নদীর এমন দশা।

বলা হতো হাজারিবাগ থেকে ট্যানারি চলে গেলে বুড়িগঙ্গা দূষণমুক্ত হবে। ট্যানারিগুলোকে শীতলক্ষ্যার পাড়ে নিয়ে যাওয়া হলো। কিন্তু বুড়িগঙ্গার পানি আগের মতোই কালো রয়ে গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকায় প্রায় দেড় কোটি মানুষের বাস। প্রায় সবার পয়বর্জ্যই পড়ছে বুড়িগঙ্গায়। এসব ড্রেনেজ ব্যবস্থার দায়িত্বে রয়েছে ওয়াসা এবং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু পয়বর্জ্য পরিশোধন না করে সরসারি নদী ও খালে ফেলা হচ্ছে। যা গিয়ে পড়ছে বুড়িগঙ্গায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বুড়িগঙ্গা নৌপথটি অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অধীনে। নৌপথ সচল রাখার কাজ ছাড়া বিআইডব্লিউটিএ আর কিছু করে না। মাঝে মধ্যে প্রতিষ্ঠানটিকে বুড়িগঙ্গার পানির মান উন্নয়নে কিছু কাজ করতে দেখা গেছে। তবে সেগুলোর বেশিরভাগই অপরিকল্পিত।

২০২০ সালের ১৮ মার্চ বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ড্রেনের মুখে দূষিত পানি পরিশোধনে ‘ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ বসানো হয়। বিআইডব্লিউটি-এর তত্ত্বাবধানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এটি স্থাপন করে। সেটা এক সপ্তাহও টেকেনি। বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা বলছেন, এটি পরীক্ষামূলক উদ্যোগ ছিল। সফল হলে অন্যগুলোর কথা চিন্তা করা যেত। কিন্তু স্থাপনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ওটা ভেঙে যায়।

বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা দেখেছি ড্রেন দিয়ে এত বেশি পানি আসে যে প্ল্যান্টগুলো টিকতে পারেনি। এগুলো সমীক্ষা ছাড়াই বসানো হয়েছিল। এতে অর্থের অপচয়ই হয়েছে।’

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিআইডব্লিউটিএ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউল ইসলাম জানান, ‘এই প্রকল্পের জন্য আরও জমি ও বিনিয়োগ প্রয়োজন। তা না হলে এটি কার্যকর করা সম্ভব নয়।’

এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধে এর তলদেশ থেকে পলিথিন ওঠানো, পাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও কিছুদিন পর আবার তা বন্ধ হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বুড়িগঙ্গা বাঁচাতে সমন্বিত উদ্যোগ লাগবে। কারওর একার পক্ষে বুড়িগঙ্গাকে বাঁচানো সম্ভব নয়। পরিবেশ, নৌপরিবহন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং এসব মন্ত্রণালয়গুলোর বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে কাজ করতে হবে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, মন্ত্রণালয়টির নেতৃত্বে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নদীর দখল-দূষণ রোধে একটি টাস্কফোর্স রয়েছে। যেখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা কমিটিতে রয়েছেন। এই কমিটি নিয়মিত বৈঠকও করে। দাবি করা হচ্ছে এই কমিটি নদ-নদী রক্ষায় নানা পদক্ষেপও নিয়েছে। তবে এতেও বুড়িগঙ্গার পানি পরিষ্কার হচ্ছে না।

কেন বুড়িগঙ্গা রক্ষার কোনও প্রকল্প আলোর মুখ দেখে না জানতে চাইলে এ নদী বাঁচানোর চেষ্টায় নিয়োজিত সংস্থা ওয়াটার কিপারস বাংলাদেশের সমন্বয়কারী শরীফ জামিল বলেন, ‘বুড়িগঙ্গাকে বাঁচানোর নামে বেশ কিছু প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ওয়াকওয়ে, সীমানা পিলার, গ্রিনেজ, ইকোপার্ক প্রকল্প ইত্যাদি। তবে এগুলো নদীকে বাঁচাতে নয়, উল্টো ধ্বংসের কাজ করছে। নদীকে খালে পরিণত করা হচ্ছে। নদীর সঙ্গে যুক্ত ছোট ছোট খালগুলো ভরাট করা হচ্ছে। যারা এই ধ্বংস রোধ করতে পারতেন তারাই এর জন্য দায়ী।’

তিনি আরও বলেন, ‘নদীকে বাঁচাতে আদালত যে আদেশ দিয়েছিলেন সেগুলো ভুলভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, নদী বাঁচাতে কাজ করবে নদী কমিশন। কমিশনকে শক্তিশালী করা এবং আইন বাস্তবায়ন কর‍তে হবে। কিন্তু নদী বাঁচাতে কাজ করছে অন্য সংস্থা। আদালতের আদেশ মানলেও বুড়িগঙ্গা বাঁচার কিছুটা সম্ভাবনা থাকে।’

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..