উত্থাপনের চার দিনের মাথায় জাতীয় সংসদে পাস হলো বহুল আলোচিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২। বিলটি আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়েছে।
বিলটি এখন রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে। এ আইনের অধীনে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।
জাতীয় সংসদে আজ দুপুর ২টার দিকে কণ্ঠভোটে পাস হয় ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’।
এর আগে বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হলে বিলের বিরোধিতা করেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যেরা।
এর আগে গতকাল জাতীয় সংসদে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২-এর ওপর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিধানের প্রস্তাব করে গত ২৩ জানুয়ারি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি উত্থাপন করেন।
বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রস্তাবিত বিলের বিধি অনুযায়ি যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করার জন্য ছয় সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবে প্রধান বিচারপতি মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি,প্র্রধান বিচারপতি মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষিক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক এবং ছয় জন সদস্যের সমন্বয়ে অনুসন্ধান কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিল গঠনের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি রাষ্ট্রপতির বরাবরে সুপারিশ প্রেরনের বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া অনুসন্ধান কমিটি বিভিন্ন রাজনৈতিকদল ও পেশাজীবি সংগঠনের কাছে এ বিষয়ে নামের সুপারিশ আহবান করতে পারবে বলে বিলে বলা হয়েছে।
বিলে অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্ব ও কর্তব্য সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণের বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারের যোগ্যতার বিধানের প্রস্তাব করা হয়। যোগ্যতার মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, বয়স ন্যূনতম ৫০ বছর হতে হবে, কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধাসরকারি বা বেসরকারি পদে অন্যূন ২০ বছরের অভিজ্ঞতা। এ ছাড়া বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের অযোগ্যতার বিষয়গুলো নির্ধারনের বিধানের প্রস্তাব করা হয়। অযোগ্যতার বিষয়গুলোর মধ্যে ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত কেউ প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে অযোগ্য বলে বিবেচিত করার সুপারিশ করা হয়। বিলে আরও বলা হয়েছে—ফৌজদারি অপরাধে অন্যূন দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত কেউ এ সব পদে নিয়োগে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।