সাইদুল ইসলাম মন্টু (বিশেষ প্রতিবেদক,বরিশাল): , আপলোডের সময় : সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

নাবিক হাদিসুরের মরদেহ দাফন হবে আগামীকাল

সাইদুল ইসলাম মন্টু (বিশেষ প্রতিবেদক,বরিশাল):

ইউক্রেনে রকেট হামলায় নিহত বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফের মরদেহ আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল দশটায় পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে। বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক গোরস্তানে কবর প্রস্তুত করা হচ্ছে।

হাদিসুর রহমান আরিফের বাবা আবদুর রাজ্জাক মাস্টার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ আনুষ্ঠানিকতা শেষে গ্রামের বাড়ি বেতাগীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেছে।

সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট (হ্যাঙ্গার গেট) দিয়ে বের হয়ে যাত্রা শুরু করেছে। এর আগে, সোমবার দুপুর ১২টা ৩ মিনিটে তার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে রোমানিয়া থেকে ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুরের মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছায়। এরপর আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট দিয়ে ১টা ১১ মিনিটে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিষয়টি জানিয়েছেন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল আহসান।

হাদিসুরের মরদেহ নিতে বিমানবন্দরে এসেছিলেন তার ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স, চাচা মিজানুর রহমান জীবন, খালা শিরিন আক্তার মমতাজ, খালাতো ভাই সোহাগ হাওলাদার। তাদের সঙ্গে এসেছেন বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন।

লাশবাহী ফ্রিজার ভ্যানে করে বরগুনার বেতাগী নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুরের মরদেহ। মরদেহ নিয়ে রওয়ানা হওয়ার আগে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন বলেন, হাদিসুর পরিবারের একমাত্র উপার্যনক্ষম ছিলেন। হাদিসুরের মৃত্যুতে শোকের ছায়া শুধু তার পরিবারে নয়, পুরো এলাকায়ই ছড়িয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও দ্রুত মরদেহ দেশে এসেছে। আমার বিশ্বাস, হাদিসুরের পরিবারের জন্য যা কিছু করা দরকার প্রধানমন্ত্রী তা সবই করবেন।

রোববার (১৩ মার্চ) হাদিসুর রহমানের মরদেহ দেশে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু রোমানিয়া থেকে মরদেহ তুরস্কে আসার পর সেখানে তুষারপাতের কারণে ফ্লাইট বাতিল হয়। চলতি মাসের ২ তারিখে ইউক্রেনে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। ৩ মার্চ অক্ষত অবস্থায় জাহাজটি থেকে ২৮ নাবিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে তাদের নিরাপদ বাঙ্কারে রাখা হয়। সেখান থেকে তাদের প্রথমে মলদোভা, পরে রোমানিয়া নিয়ে আসা হয়। গত ৯ মার্চ ২৮ নাবিককে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

ইউক্রেন থেকে ২৮ নাবিককে দেশে ফিরিয়ে আনা হলেও হাদিসুরের মরদেহ আনা সম্ভব হয়নি । তার মরদেহ ইউক্রেনে ফ্রিজিং করে রাখা হয়েছিল। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ২৮ জন নাবিক নিয়ে আটকা পড়েছিল ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এই জাহাজটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছায়। জাহাজটি ইউক্রেন থেকে সিরামিকের কাঁচামাল নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল। তবে, যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার পর তারা আটকে পড়েছিলেন।